বাগমারায় মামলায় পরাজয়ের আশংকায় বাদী পক্ষের বাড়িঘর গুড়িয়ে দিলো প্রতিপক্ষ
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক, বাগমারা : মামলায় পরাজয়ের আশংকায় বাদী পক্ষের বাড়িঘর গুড়িয়ে দিয়ে এলাকা ছাড়া করেছেন প্রতিপক্ষের লোকজন। ঘটনাটি ঘটেছে রাজশাহীর বাগমারা উপজেলার তাহেরপুর পৌরসভায়। ওই ঘটনায় লাভলী বেগম নামের এক নারী বাদী হয়ে ১১জনকে আসামী করে রাজশাহী বিজ্ঞ আমলী আদলত চার এ একটি মামলা দায়ের করেছেন। আদালত বাগমারা থানার ওসিকে মামলীটি গ্রহনের মাধ্যমে অপরাধীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।
এলাকার এক প্রভাবশালী আ’লীগ নেতার ছত্র ছায়ায় তাহেরপুর এলাকার পিক্কা মন্ডল ও টিক্কা মন্ডলসহ তার বাহিনীর লোকজনেরা এমন ঘটনা ঘটাচ্ছে বলে মামলা বাদী লাভলীসহ তার তিন বোন ও ভাই আজ শনিবার বিকেলে বাগমারা প্রেস ক্লাবে উপস্থিত হয়ে সাংবাদিক সম্মেলনে এমন অভিযোগ করেন।
তাহেপুর পৌরসভার বাসিন্দা কছিম উদ্দীন সরদারের মৃত্যুর পর ধর্মীয় বিধান মতে তার রের্কডীয় সম্পত্তির মালিক হন চার মেয়ে ও তিন ছেলে। তারা ওই সম্পত্তিতে বাড়িঘর নির্মান করে বসবাস করে আসছিল। মেয়ে গুলো বাহিরে বিয়ে হলে কছিম উদ্দীনের তিন ছেলে ওই সম্পত্তিতে বসবাস করে। তাহেরপুর পৌরসভার চতুর পিক্কা মন্ডল ও টিক্কা মন্ডল কৌশল খাটিয়ে একই সম্পত্তির অন্যকে মালিক সাজিয়ে নিজেদের নামে রেজিষ্ট্রি করে নেয়।
দলিলটি খারিজে দিলে কছিম উদ্দীনের ছেলে মেয়েরা জানতে পারেন একং সহকারী কমিশনার (ভুমি) বাগমারা বরাবর খারিজ স্থগিতের আবেদন করেন। তৎকালীন সহকারী কমিশনার (ভুমি) মোটা অংকের উৎকোচের বিনিময়ে জমিটি পিক্কা ও টিক্কা মন্ডলের নামে খারিজ করে দেয়। নিরুপায় হয়ে কছিম উদ্দীনের মেয়ে লাভলী বেগম সেই সময় রাজশাহী জজ আদালতে আসামীদের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করেন। মামলা দায়ের পর পরই পিক্কা মন্ডল ও টিক্কা মন্ডল উক্ত জমিতে পাকা বাড়ি নির্মানের কাজ শুরু করেন।
জোর পূর্বক বাড়ি নির্মানের চেষ্টা করলে বাদী পক্ষ আদালতে ১৪৪ ধারার মামলা দায়ের করেন। আদালত বাড়ি নির্মানে নিষেধাজ্ঞা দিলে বাড়ির কাজ বন্ধ হয়ে যায়। এমন ঘটনায় পিক্কা মন্ডল ও টিক্কা মন্ডল স্থানীয় প্রভাবশালী এক আ’লীগ নেতার আশ্রয় নেয়। সুযোগ বুঝে চলতি বছরের ৪ জানুয়ারী আ’লীগ নেতার নির্দেশে পিক্কা মন্ডল ও টিক্কা মন্ডল তার বাহিনীর লোকজন নিয়ে বাদীদের বাড়িঘরে হামলা চালিয়ে ভাংচুর করে গুড়িয়ে দেয়।
বর্তমানে তাদের বাড়িতে বসবাস করার পরিবেশ নেই বলেও তারা সাংবাদিকদের কাছে অভিযোগ করেন। তারা বিষয়টি সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে আইন শৃংখলা বাহিনীর সদস্যসহ সরকারের উবর্ধতন মহলের সহযোগীতা কামনা করে তাদের বাপ দাদার পত্রিক সম্পত্তি উদ্ধার ও তাদের বাড়িতে বসবাস করার পরিবেশ সৃষ্টির দাবী জানিয়েছেন।
এ ব্যাপারে তাহেরপুর পৌরসভার অভিযুক্ত পিক্কা মন্ডলের সাথে যোগাযোগ করা হলে তাদের বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, আমরা ক্রয়সূত্রে জমির মালিক। আমরা আমাদের জমি দখল করেছি, কারো বাড়িঘরে হামলা করিনি বলে তিনি জানিয়েছেন।
অপরদিকে বাগমারা থানার ওসি আতাউর রহমান বলেন, আদালত থেকে পিক্কা ও টিক্কাসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে একটি অভিযোগ এসেছে। অল্প সময়ের মধ্যে তা মামলা হিসেবে রেকর্ডের মাধ্যমে প্রকৃত অপরাধীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিবেন বলে তিনি জানিয়েছেন।