বদলে যাচ্ছে রাজশাহী সোনাদিঘীর দৃশ্যপট
নিজস্ব প্রতিবেদক: ‘সোনাদিঘীর মোড়’ রাজশাহী মহানগরের অতি পরিচিত এলাকা। ৮০ দশকে সোনাদিঘীর চারপাশ ঘিরে গড়ে উঠতে শুরু করে স্থাপনা। এক পর্যায়ে ঢাকা পড়ে যায় ঐতিহ্যবাহী সোনাদিঘী। সোনাদিঘীটি শুধু নামেই থাকে। ২০০৮ সালে এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন মেয়র হওয়ার পর এই সোনাদিঘী দৃশ্যমান করার উদ্যোগ নেন।যার অংশ হিসেবে সম্প্রতি দিঘীর চারপাশের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ শুরু হয়।
রাজশাহী সিটি করপোরেশন কর্তৃপক্ষ বলছে, সোনাদিঘীকে এখন অন্তত তিন দিক থেকে দেখা যাবে। দিঘিকে কেন্দ্র করে গড়ে তোলা হবে পায়ে হাঁটার পথসহ মসজিদ, এমফি থিয়েটার (উন্মুক্ত মঞ্চ) ও তথ্যপ্রযুক্তি পাঠাগার। চলতি বছরই এই কাজ শুরু হওয়ার কথা।
রাজশাহী সিটি করপোরেশনের প্রধান প্রকৌশলী আশরাফুল হক বলেন, গত শনিবার থেকে সিটি করপোরেশন বুলডোজার দিয়ে দিঘীর পাড়ের অবৈধ দোকানপাট ভাঙা শুরু করেছে। চলতি বছরেই সোনাদিঘী সংস্কারের কাজ শুরু হবে। সংস্কার শেষ হলে দিঘীর পূর্ব, উত্তর ও পশ্চিম দিক থেকে সোনাদিঘীকে দেখা যাবে। তখন এটি আগের মতোই নগরের একটি বিনোদন কেন্দ্রে পরিণত হবে।
পরিবেশবাদী সংগঠন হেরিটেজ-রাজশাহীর প্রতিষ্ঠাতা মাহবুব সিদ্দিকী বলেন, একটা সময় ছিল তাঁদের বিকেল কেটেছে সোনাদিঘীর পাড়ের বেঞ্চে বসে। এটিই ছিল নগরের একটি বিনোদনকেন্দ্র। দিঘীর পাড়ে একটা বাগানের মতো ছিল। দিঘীর পানিও ছিল টলটলে।
মাহবুব সিদ্দিকী জানান, একসময় সোনাদিঘীর চারপাশ উন্মুক্ত ছিল। এর পানি এতটাই স্বচ্ছ ছিল যে তা দিয়ে এলাকাবাসীর রান্নার কাজও চলত। পানিতে যাতে কেউ ময়লা ফেলতে না পারে, তা তদারকির দায়িত্বে থাকতেন রাজশাহী পৌরসভার কর্মচারীরা। পদ্মা নদীর সঙ্গে সরাসরি সংযুক্ত ছিল দিঘী। এতে ভরা বর্ষা মৌসুমে পদ্মার পানি ঢুকত দিঘীতে। নদীর ঘোলা পানি থিতিয়ে যাওয়ার পর দেখা মিলত স্বচ্ছ পানির। এক সময় নগরবাসীর বিনোদনের কেন্দ্রও ছিল এই দিঘী। এর পাশ দিয়ে ছিল পামগাছ ও বসার জন্য বেঞ্চ।
২০০৯ সালে রাজশাহী সিটি করপোরেশন ‘এনা প্রপার্টিজ’ নামের একটি নির্মাতা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে পুরোনো নগর ভবনের জায়গায় ১৬ তলাবিশিষ্ট ‘সিটি সেন্টার’ নির্মাণের চুক্তি করে। সেই চুক্তির আওতায় দিঘীকে নতুন করে সাজানোর কথা ছিল। তিন বছরে এই কাজ শেষ করার কথা থাকলেও বাস্তবায়ন হয়নি। অবশেষে ১০ বছর পর দিঘীর চারপাশের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ শুরু হয়েছে।