‘চলতি বছরে বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি হবে ৭ দশমিক ৮’
পদ্মাটাইমস ডেস্ক : গত বছরের তুলনায় এ বছর বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি কম হতে পারে। চলতি ২০২০ অর্থবছরের বাংলাদেশের মোট জাতীয় উৎপাদন (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি হতে পারে ৭ দশমিক ৮ শতাংশ, গত বছর যা ছিল ৮ দশমিক ১০ শতাংশ। সম্প্রতি প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এমনটাই জানিয়েছে জাতিসংঘ।
বৈশ্বিক অর্থনীতির সর্বশেষ অবস্থা নিয়ে সম্প্রতি ‘বিশ্ব অর্থনীতির পরিস্থিতি এবং সম্ভাবনা-২০২০’ শীর্ষক একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে জাতিসংঘ । তাতে বলা হচ্ছে, ২০২০ সালে জিডিপি প্রবৃদ্ধি কম হলেও দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি হবে সর্বোচ্চ। প্রতিবছর জাতিসংঘ এই প্রতিবেদন প্রকাশ করে।
প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, দক্ষিণ এশিয়ার প্রবৃদ্ধি গড়ে গোটা বিশ্বে জিডিপি প্রবৃদ্ধির চেয়ে দ্রতগতিতে কমছে। ২০১৮ সালে দক্ষিণ এশিয়ার প্রবৃদ্ধি ৫ দশমিক ৬ শতাংশ হলেও ২০১৯ সালে তা ছিল ৩ দশমিক ৩ শতাংশ। তবে এ সত্ত্বেও বাংলাদেশ, ভুটান, মালদ্বীপ ও নেপালের প্রবৃদ্ধি ছিল শক্তিশালী অবস্থানে।
এ বছর বাংলাদেশের চেয়ে প্রবৃদ্ধি কম হবে প্রতিবেশী ভারত ও পাকিস্তানের। চলতি বছরে দেশ দুটির প্রবৃদ্ধি হবে যথাক্রমে ৬ দশমিক ৬ শতাংশ এবং ২ দশমিক ১০ শতাংশ। তবে শুক্রবার প্রকাশিত প্রতিবেদনে জাতিসংঘ বলেছে, গত বছরের তুলনায় বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি কম হওয়া ছাড়াও এ বছর দেশটিতে উচ্চমাত্রায় মুদ্রাস্ফীতি হতে পারে।
জাতিসংঘের ‘বিশ্ব অর্থনীতির পরিস্থিতি এবং সম্ভাবনা-২০২০’ শীর্ষক ওই প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে বাণিজ্য দ্বন্দ্বের কারণে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক শিল্প অনেকটা সম্প্রসারিত হয়েছে। যা ২০১৯ সালে বাংলাদেশকে ৮ দশমিক ১ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জনে সহায়তা করে।’
এছাড়া চলতি বছরে বাংলাদেশে দ্রব্যম্ল্যু বৃদ্ধি পাবে ৫ দশমিক ৯০ শতাংশ হারে, গত বছর যা ছিল ৫ দশমিক ১০। টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) অর্জনে বাংলাদেশের উন্নতির বিষয়টির উল্লেখ করে বলা হয়েছে, স্বল্পোন্নত যেসব দেশ অন্তত ৭ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জন করতে পারবে না তারা এসডিজির লক্ষ্যমাত্রা থেকে ছিঁটকে পড়বে।
প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, মাত্র ১৫টি দেশ এসডিজি লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে কাঙ্খিত জিডিপি অর্জন করতে পারছে। দেশগুলোর মধ্যে রয়েছে বাংলাদেশ, বেনিন, কম্বোডিয়া, ইথিওপিয়া, রুয়ান্ডা, সেনেগাল ও দক্ষিণ সুদান। এসডিজি বাস্তবায়নে ১৭টি লক্ষ্য অর্জন করার পথে রয়েছে এসব দেশ।
বাণিজ্য বিরোধের কারণে ২০১৯ সালে বৈশ্বিক প্রবৃদ্ধি কমে হয় এক দশকের মধ্যে সর্বনিম্ন ২ দশমিক ৩ শতাংশ হয়। এ বিষয়টিও প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। তবে জাতিসংঘ বলছে, যদি বিরোধ কমে তাহলে ২০২০ সালে বিশ্বের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ২ দশমিক ৫ শতাংশ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
জাতিসংঘের ওই প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, বিশ্বের নির্ধারিত ৬৪ দেশের মধ্যে একমাত্র বাংলাদেশেই প্রতি ঘণ্টায় পুরুষদের চেয়ে নারীরা বেশি আয় করেন। আর মাসিক আয়ের ক্ষেত্রেও এই ব্যবধান অত্যন্ত কম। দেশে পুরুষদের চেয়ে নারীদের মাসিক আয় মাত্র ২ দশমিক ২ শতাংশ কম।