রাবিতে শিক্ষক নিয়োগে স্থগিতাদেশ : হাইকোর্টের নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও বিভাগে যোগদান
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক, রাবি : রাজশাহী বিশ^বিদ্যালয়ের (রাবি) ক্রপ সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি বিভাগে সদ্য নিয়োগ পাওয়া তিন শিক্ষকের নিয়োগ চার সপ্তাহের জন্য স্থগিত করেছে হাইকোর্ট। নিয়োগ নিয়ে বিবাদমান এই মামলাটি সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন বিবাদী পক্ষের আইনজীবী ব্যারিস্টার এবিএম আলতাফ হোসাইন। মামলার শুনানী হবে চার সপ্তাহ পর।
এদিকে হাইকোর্টের পূর্বের নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও বিশ^বিদ্যালয় প্রশাসন ওই তিন শিক্ষককে বিভাগে যোগদান করিয়েছে বলে জানা গেছে। ২৭ জানুয়ারি বিশ^বিদ্যালয়ের সিন্ডিকেটে তাদের নিয়োগের সিদ্ধান্তের ভিত্তিতে তারা সোমবার বিভাগে ক্লাস নিয়েছেন বলে জানিয়েছেন ক্রপ সায়েন্স বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক সাইফুল ইসলাম।
বিশ^বিদ্যালয়ের বিভিন্ন সূত্র থেকে জানা যায়, ২০১৬ সালে ক্রপ সায়েন্স বিভাগে শিক্ষক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়। পরে এম আব্দুস সোবহান দ্বিতীয় মেয়াদে উপাচার্য হয়ে শিক্ষক নিয়োগের যোগ্যতা শিথিল করেন ও ২০১৯ সালের ৩০ জুলাই নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি সংশোধন করে পুনঃপ্রকাশ করা হয়। এই ঘটনায় বিভাগের শিক্ষক ও প্ল্যানিং কমিটির সদস্য অধ্যাপক মু. আলী আসগর নিয়োগ প্রক্রিয়ার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট করেন। যার প্রেক্ষিতে গত বছরের ২১ আগস্ট নিয়োগ প্রক্রিয়া কেন অবৈধ হবে না জানতে চেয়ে হাইকোর্ট রুল জারি করেন।
রুল বিচারাধীন থাকাবস্থায় গত ২৬ জানুয়ারি ৪৯৭তম সিন্ডিকেট সভায় নতুন বিজ্ঞপ্তিতে আবেদন করা রেজভী আহমেদ ভূঁইয়া, শামসুন্নাহার ও মোক্তার হোসেন নামের ওই তিন শিক্ষককে নিয়োগ দেওয়া হয়। দুই দিন পর ২৮ জানুয়ারি তাদের নিয়োগ অবৈধ ঘোষণা করে নিয়োগ বাতিল করে রায় দেন হাইকোর্ট। পরে বিশ^বিদ্যালয় প্রশাসনের আপিলের ভিত্তিতে সোমবার নিয়োগ স্থগিত রেখে মামলাটি সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে হস্তান্তর করেন হাইকোর্ট। চার সপ্তাহ পরে মামলার শুনানীর তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে। শুনানীর আগপর্যন্ত নিয়োগ প্রক্রিয়া স্থগিত করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ব্যারিস্টার আলতাফ হোসাইন।
এবিষয়ে বিভাগটির সভাপতি অধ্যাপক সাইফুল ইসলাম বলেন, বিশ^বিদ্যালয় প্রশাসন ও সিন্ডিকেটের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ওই তিন শিক্ষককে বিভাগে যোগদান করানো হয়েছে। তারা এখন বিভাগে নিয়মিত ক্লাস নিচ্ছেন। কিন্তু হাইকোর্টের রায়কে উপেক্ষা করে তাদের বিভাগে যোগদান করানোর বিষয়ে তিনি বলেন, এটা বিশ^বিদ্যালয় প্রশাসনের বিষয়। আমি এবিষয়ে কিছু বলতে পারব না।
তবে বিশ^বিদ্যালয় প্রশাসনের একটি সূত্র জানিয়েছে, ২৬ তারিখের সিন্ডিকেট সভায় ওই তিন শিক্ষককে নিয়োগ দেয়া হলেও পরবর্তীতে হাইকোর্টের রায়ের ভিত্তিতে তাদের নিয়োগ স্থগিত রাখা হয়েছিল।
এই বিষয়ে জানতে বিশ^বিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক এম আব্দুস সোবহান ও রেজিস্ট্রার অধ্যাপক এম এ বারীর সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলেও তারা সাড়া দেননি।