প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ২৮ হাজার শূন্য পদ

প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ১১, ২০২০; সময়: ১১:০১ অপরাহ্ণ |

পদ্মাটাইমস ডেস্ক : বর্তমানে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ২৮ হাজার ৮৩২টি শিক্ষক পদ শূন্য রয়েছে। এর মধ্যে প্রধান শিক্ষক পদে ৭ হাজার ১৮টি এবং সহকারী শিক্ষক পদে ২১ হাজার ৮১৪টি। মঙ্গলবার জাতীয় সংসদে প্রশ্নোত্তরে সরকারি দলের মামুনুর রশীদের প্রশ্নের জবাবে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী জাকির হোসেন এ তথ্য জানান।

প্রতিমন্ত্রী জানান, সারা দেশে ডিসেম্বর ২০১৯ পর্যন্ত সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের মোট শূন্যপদ ৭ হাজার ১৮টি। আর সহকারী শিক্ষকের মোট শূন্য পদ ২১ হাজার ৮১৪টি। মন্ত্রীর তথ্য মতে, প্রধান শিক্ষকের শূন্য পদের মধ্যে (৬৫%) পদোন্নতিযোগ্য চার হাজার ১৬৬ জন এবং সরাসরি নিয়োগযোগ্য (৩৫%) ২ হাজার ৮৫২ জন। প্রতিমন্ত্রী জানান, সহকারী শিক্ষকের ১৮ হাজার ১৪৭টি শূন্য পদে নিয়োগে নির্বাচিত প্রার্থীদের নামে নিয়োগপত্র জারি করা হয়েছে। শিগগিরই তারা যোগদান করবেন।

প্রধান শিক্ষকের শূন্য পদে নিয়োগের পদক্ষেপের বিষয়ে তিনি বলেন, সরাসরি নিয়োগযোগ্য ৩৫ শতাংশ শূন্য পদে নিয়োগে পাবলিক সার্ভিস কমিশনকে (পিএসসি) চিঠি পাঠানো হয়েছে। তবে, আদালতে মামলা থাকায় প্রধান শিক্ষক পদে পদোন্নতি আপাতত বন্ধ রয়েছে। তারপরও জেষ্ঠ্যতার ভিত্তিকে সহকারী শিক্ষকদের প্রধান শিক্ষকের চলতি দায়িত্ব প্রদান অব্যাহত রয়েছে। সরকারি দলের এম আবদুল লতিফের প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী জানান, ২০০৯ সাল থেকে জুন ২০১৮ পর্যন্ত শিক্ষক পদে এক লাখ ৭৯ হাজার ৭১৭ জনকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।

সরকারি দলের আফজাল হোসেনের প্রশ্নের জবাবে জাকির হোসেন বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার প্রাথমিক শিক্ষায় ঝরে পড়া রোধে ‘ব্যাপকভাবে সফল’ হয়েছে। ২০১০ সালে ঝরে পড়ার হার ৩৯ দশমকি ৮ শতাংশ থেকে কমে ২০১৮ সালে ১৮ দশমিক ৬ শতাংশ হয়েছে। বর্তমান সরকার প্রাথমিক শিক্ষায় ‘মিলেনিয়াম ডেভেলপমেন্ট গোল’ অর্জন করেছে।

সরকারি দলের বেনজীর আহমদের প্রশ্নের জবাবে জাকির হোসেন বলেন, “জাতীয় শিক্ষানীতি অনুযায়ী প্রাথমিক শিক্ষা অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত চালু করার কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে। ভৌত অবকাঠামো ভালো এবং পর্যাপ্ত শিক্ষা উপকরণ রয়েছে, এমন ৭৮৩টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে অষ্টম শ্রেণি চালু করার অনুমতি দেওয়া হয়েছে।”

সংরক্ষিত নারী আসনের সৈয়দা রুবিনা আক্তারের প্রশ্নের জবাবে শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি বলেন, “শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন বিভিন্ন প্রকল্পের মাধ্যমে ২০০৯ থেকে এ পর্যন্ত নির্বাচিত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ৩২ হাজার ৬৬৭টি মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুম, এক হাজার ৪১১টি কম্পিউটার ল্যাব, ৩১টি ডিজিটাল ল্যাংগুয়েজ ল্যবরেটরি, ৬৪০টি আইসিটি লার্নিং সেন্টার এবং ৫০টি ক্লাস্টার সেন্টার স্থাপন করা হয়েছে। আরও ৬৫ হাজার ৬০০ টি মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুম স্থাপনের কাজ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।”

আছলাম হোসেন সওদাগরের প্রশ্নের জবাবে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, দেশে যেসব উপজেলায় সরকারি বিদ্যালয় ও কলেজ নেই সেসব উপজেলায় একটি মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও কলেজকে সরকারি করার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। “এরই ধারাবাহিকতায় প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী ২০১৮ ও ২০১৯ সালে ২৯৬টি মাধ্যমিক বিদ্যালয় এবং ৩০২টি বেসরকারি কলেজ সরকারি করা হয়েছে।”

জামালপুর-৫ আসনের মোজাফফর হোসেনের প্রশ্নের জবাবে শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি বলেন, মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজে বৃত্তিপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে মাসিক বেতন বাবদ ইতোপূর্বে এক হাজার ৫০ টাকা এবং চলতি বছরে এক হাজার ৩৫০ টাকা হারে আদায়ের বিষয়টি মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষাবোর্ড ঢাকা তদন্ত করেছে।

শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে আদায় করা অর্থ অনুদান না পাওয়া ৭৭১ জন শিক্ষক ও কর্মচারীর মাসিক বেতনভাতা, বাড়িভাড়া ও বার্ষিক ইনক্রিমেন্টসহ যাবতীয় সুযোগ-সুবিধা বাবদ খরচ করা হয়েছে বলে তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়। বৃত্তিপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে মাসিক বেতন বাবদ ১০৫০ টাকা হারে (যা চলতি বছরে ১৩৫০ টাকা) যে অর্থ আদায় করেছে, তা আগামী ২২ ফেব্রুয়ারির মধ্যে ফেরত দেওয়ার জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে বলে শিক্ষামন্ত্রী জানান।

পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে