ধামইরহাট হাসপাতালে বেড়েছে সেবার মান

প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ২৩, ২০২০; সময়: ৬:৫৮ অপরাহ্ণ |
ধামইরহাট হাসপাতালে বেড়েছে সেবার মান

নিজস্ব প্রতিবেদক, ধামইরহাট : নওগাঁর ধামইরহাটে ৫০ শয্যা বিশিষ্ট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। মাত্র ৩ মাস আগেই এই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স চলতো মাত্র ৩ জন ডাক্তার দিয়ে। রোগীরা সেবানিতে এসে ঘন্টার পর ঘন্টা অপেক্ষা করতো। এক সাথে ১৪ জন চিকিৎসক যোগদান করায় কষ্ট লাঘব হয়েছে ধামইরহাট উপজেলার ২ লক্ষাধিক সাধারণ মানুষের। একাধিক ডাক্তার থাকায় হাসপাতালের বহির্বিভাগে রোগী বেড়েছে প্রায় ১০ গুন। পাচ্ছে পর্যাপ্ত সরকারী ঔষুধ, কমিউনিটি ক্লিনিক গুলোতেও হচ্ছে নরমাল ডেলিভারী। আর এত সবকিছু ভালভাবে চলছে হাসপাতালের প্রধান কর্মকর্তা পাবলিক হেলথ বিশেষজ্ঞ ও মেডিসিনে পোষ্ট গ্রাজুয়েশন প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা অফিসার ডা. স্বপন কুমার বিশ্বাস এর কড়া দিক নির্দেশনায়। ৩৯ বিসিএস থেকে স্বাস্থ্য ক্যাডারে ধামইরহাট উপজেলায় মেডিসিনে অভিজ্ঞ ডা. জিন্নাত ফারুকী,রেসপিরেটরি মেডিসিনে অভিজ্ঞ ডা. ফয়সাল, শিশুরোগ বিষয়ে অভিজ্ঞ ডা. সামিউল আলম, সার্জারিতে বিশেষ প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত আঞ্জুমান আরা ও আলট্রাসনোগ্রাফিতে অভিজ্ঞ ডা. মল্লিকা চংদারসহ ১৪ জন ডাক্তার যোগদান করেন গত বছরের ডিসেম্বরে। এর পরই থেকে বিভিন্ন কমিউনিটি ক্লিনিকে পর্যাপ্ত ডাক্তার উপস্থিত থাকায় গ্রাম পর্যায়ে ওইসব কমিউনিটি ক্লিনিকে বেড়েছে রোগী সংখ্যা, এছাড়াও উপজেলা পর্যায়ে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে দিনে ৩০/৪০ জন রোগীর পরিবর্তে বর্তমান ৩ শতাধিক রোগী প্রতিদিন চিকিৎসা ও সেবা গ্রহণ করছেন।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. আবু ইসা মো. আরাফাত ইমাম বলেন, আগে রোগী যেখানে ২০/২৫ মেডিকেলে চিকিৎসা সেবা গ্রহণ করতো, বর্তমান উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে শতভাগ রোগী ভর্তি আছেন ও চিকিৎসা সেবা গ্রহণ করেন, আগে ডাক্তার সংকট থাকায় রোগীর কল্যাণে তাদের রেফার্ড করা হলেও বর্তমানে একাধিক চিকিৎসক থাকায় সেইসব রোগীদের রেফার্ডও তেমন না করে হাসপাতালের চিকিৎসা দিয়ে তাদের সুস্থ্যতা দান করা হচ্ছে, নতুন এমবুলেন্স থাকায় গুরুত্বর রোগীদের উন্নত চিকিৎসার জন্য দ্রুত বাহিরে পাঠানো সম্ভব হচ্ছে এবং রক্ত সঞ্চালন কার্যক্রম অফিসে সময়ে চালু রয়েছে।

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. স্বপন কুমার বিশ্বাস বলেন, আমরা চিকিৎসকগণ সেবার মন-মানসিকতা নিয়ে এ পেশায় যোগদান করেছি জন্য ধামইরহাট উপজেলার সাধারণ মানুষের শতভাগ চিকিৎসা সেবা নিশ্চিতে আমরা কাজ করে যাচ্ছি, ডাক্তারদের নিয়ে নিয়মিত বিভিন্ন অভিজ্ঞতা বিনিময় ও তাদের দক্ষতা বৃদ্ধিতে ‘প্রভাতি শিক্ষায়তনিক প্রশিক্ষণ’ নামক প্রশিক্ষণ বাংলাদেশে প্রথমভাবে ধামইরহাটে চালু করেছি, এতে ডাক্তারগণের দক্ষতা বৃদ্ধিতে সহায়ক ভূমিকা রাখবে, কমউিনিটি ক্লিনিকের সিএইচসিপিদের নিয়ে নিয়মিত বৈঠক করে নরমাল ডেলিভারীর বিষয়ে বিশেষ তাগাদা প্রদান করেছি, আর এতসব কিছুর একটাই উদ্দেশ্যে, যাতে করে সরকারের লক্ষ ও উদ্যেশ্য বাস্তবায়ন এবং সাধারণ মানুষ যেন স্বাস্থ্য সেবা সঠিক ভাবে পায়।

এছাড়াও হাসপাতালে মেডিসিন, সার্জারী, গাইনী, অর্থোপেডিক্স, কার্ডিওলজি, এনেসথেসিয়া, চক্ষু ও নাক-কান গলাসহ ১০টি জুনিয়র কনসালটেন্টের মধ্যে ১০টি পদই শুন্য রয়েছে,যেগুলো থাকলে চিকিৎসা সেবার মান আরও ভাল হতো, আবার হাসপাতালে ৫টি সুইপারের পদ থাকলেও ১ জন কর্মরত আছে, প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. স্বপন কুমার বিশ্বাস পরিস্থিতি মোকাবিলায় অতিরিক্ত ৩/৪ জন পরিচ্ছন্ন কর্মী দিয়ে নিয়মিত হাসপাতাল পরিস্কার ও পরিচ্ছন্ন রেখেছেন।

উল্লেখ্য গত ২০ ফেব্রুয়ারী ধামইরহাট ইউনিয়নের নেউটা কমিউনিটি ক্লিনিকে নেউটা গ্রামের মৃত রকিবুল ইসলামের মেয়ে গর্ভবতী রাজিয়া সুলতানা প্রসব ব্যথা নিয়ে আসলে ওই কমিউনিটি ক্লিনিকের কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রোভাইডার (সিএইচসিপি) মুন্নুজান খাতুন, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মিড ওয়াইফ নার্স মেহের নিগার গর্ভবতী ওই মায়ের নরমাল ডেলিভারীর প্রস্তুতি নিলে রাজিয়া সুলতানা স্বাভাবিক প্রক্রিয়ার একটি কন্যা সন্তান জন্ম দেন। খবর পেয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. স্বপন কুমার বিশ্বাসের নির্দেশে হাসপাতালের শিশু রোগে বিশেষ প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত ও অভিজ্ঞ ডা. সামিউল ইসলাম ঘটনাস্থলে ছুটে যান এবং মা ও শিশুর স্বাস্থ্য পরিক্ষা করেন।

পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে