‘মহামারী’

প্রকাশিত: ১৫-০৫-২০২০, সময়: ২৩:৫০ |

দেখিনি কোনো রক্তপাত
প্রস্তুত কোন শস্বস্ত্র বাহিনী
দেখেছি আমার নিস্তব্ধ শহর,
দেখিনি রক্তে রঞ্জিত রাজপথ
মিছিল, মিটিং অস্ত্রের প্রহার
দেখেছি পৃথিবীতে লাশের বহর।

শুনিনি কোনো গুলির শব্দ
তবু আতঙ্কে কেটেছে সারা প্রহর,
গোলাবারুদ বা দৃশ্যমান শত্র নয়
অদৃশ্য ভাইরাসের ভয়ে নির্ঘুম নিশি হয়েছে অহর।

দেখেছি দু’চোখে গরীবের হক চুরির বাড়াবাড়ি,
দেখেছি অশ্রুসিক্ত ক্ষুধার্থ মায়ের বুকফাটা আহাজারি।
আমিতো দেখিনি বহিরাগতের অত্যাচার আর গণকবর,
খবর প্রচারের সাংবাদিকও দিল জীবন, নিজেই হলো খবর।

করোনা ছাড়েনি পুলিশ, ম্যাজিষ্ট্রেট, সাধারণ মানুষ
কিংবা ডাক্তার, মোক্তার,
আইন সবার উর্ধ্বে তবু পারেনি করতে
ক্ষুদ্র ভাইরাসের বিচার।

দেখিনি আমি শহীদ জননীর হাহাকার,
লজ্জ্বা হারানো নারীর আর্তনাদে কিভাবে কেটেছে বেলা,
আমিতো দেখেছি ক্ষুধার্ত পরিবারের
নিবারণ না হওয়া ক্ষুধার জ্বালা।

বেঁচে থাকার তৃষ্ণায় স্বামী হারানো রাড়ি
যায়নি দেখতে প্রিয় সঙ্গীর মুখ।
এই ভাইরাস যে বড় যন্ত্রণা দেয়,
জীবন না নিয়েই দেয় মৃত্যুর মতো দুখ।

শত বছরের গন্ডি পেরিয়ে মহামারী
আসে বারবার
করোনা থেকে বাঁচতে আসছে ভ্যাকসিন
তবে পাবো কি স্থায়ী প্রতিকার?

প্রিয়জন মরে মৃত অবস্থায় পড়ে রয়েছে
সিঁড়ির মাঝে,
জীবনের টানে করোনা আতঙ্কে যায়নি পরিজন
দু’দন্ড পাছে।

কত প্রিয়জন আছে দূরে, কতজন আছে
ছ’ফুট দূরত্বে কাছে,
কবে যাবে এই আতঙ্ক? কোনো সকালে
নাকি কোনো সাঁঝে।

আমি তো দেখিনি পথের আনাচেকানাচে রাখা
বোমা কিংবা মাইন,
আমি তো দেখেছি রাস্তার ধারে সাবান পানিতে
হাত ধোয়ার লাইন।

কেননা বস্তু নয় সে যে অদৃশ্য শত্রু করোনা
মুক্ত করে বিশ্ব কবে যাবে ভাইরাস তা কেউ জানে না,
প্রতিকার নেই প্রতিরোধ আছে ঘন ঘন হাত ধোঁয়া
সবাই জানে সুস্থ থাকার উপায় অর্ধেক জাতি মানে,
অর্ধেক মানে না।

মিডিয়া বা জনমানুষের মুখে উচ্চারিত হয় বাণী
ঘরে থাকুন, সুস্থ থাকুন,
সমকণ্ঠিত হয়ে বলতে চাই সুস্থ্যভাবে বাচুন,
অন্যকে বাঁচান, সচেতনভাবে চলুন।

সঠিক তথ্য ও সচেতনতার নিয়ম জানুন,
খারাপ সময়ে জীবনের পথ দিচ্ছি পাড়ি।
কেননা করোনা ভাইরাস (কোভিড-১৯) বড় শক্তিশালী
কঠিন এক মহামারী।

লেখক: জান্নাতুল মাওয়া সিফা, রাজশাহী।
(বি: দ্র: কোয়ারিন্টাইন চলাকালীন করোনা ভাইরাস নিয়ে কবিতা কাউকে কষ্ট দেওয়ার উদ্দেশ্যে রচিত না।
ধন্যবাদ।)

উপরে