করোনা বনাম বিশ্ব পুঁজিবাদ: ২০২০-২১ বাংলাদেশ বাজেট
জাফরুল্লাহ্ চৌধুরী :
‘দুঃখের দিনে পাখিরা কী গান গাইবে? বিষাদের গান গাইবে’!
বের্টোল্ট ব্রেখট, জার্মান দার্শনিক, নাট্যকার ও প্রাবন্ধিক
বিপন্ন পণ্য: বিশ্ব পুঁজিবাদ
সম্প্রতি পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে দ্রুতগতিতে ধনী-দরিদ্রের মধ্যে বৈষম্য বেড়ে উল্কার বেগে ছুটছে। ফলে অনেক রাতকানা দার্শনিক, রাষ্ট্রবিজ্ঞানী গভীরভাবে প্রচার করতে শুরু করেছেন যে, সাম্যবাদী সম-সুযোগের সমাজ ব্যবস্থার সম্ভবতঃ কোনো ভবিষ্যত নেই। ‘কার্ল মার্কস ইজ ডেড’, বেইজিংয়ের তিয়ানমিয়ান স্কয়ারে বিস্মৃত মাও সে তুং, হোচিমিন সিটির স্কয়ারে শায়িত হো চি মিন। হাভানা স্কয়ারের কোথাও নেই ফিডেল ক্যাস্ট্রোর ভাস্কর্য,তবু তার উপস্থিতি অনুভবনীয়, চুরুটবিহীন হাসিও আকর্ষণীয়। হাভানার বহু জায়গায় চে গুয়েভারা দৃশ্যমান, চিরতরুণ। কৃষক-শ্রমিকের লাল ঝাণ্ডা কি আর উড়বে না?
বিশ্ব পুঁজিবাদ হঠাৎ ভয়ানক ধাক্কা খেল এক অজানা, অদৃশ্য কিন্তু সর্বত্র বিরাজমান ক্ষুদ্র ভাইরাস নভেল করোনা কভিড-১৯-এর কাছে। প্রায় অজানা করোনাভাইরাস সারা পৃথিবীকে দাবড়িয়ে তুলোধুনো করেছে, ধনী, দরিদ্র, সৎ, দুর্জন, দুর্নীতিপরায়ণ রাজনীতিবিদ, আমলা, শিক্ষক, কৃষক জনতাকে। কারও পালাবার পথ নেই। করোনাভাইরাস ছাত্র, শ্রমিক সবাইকে একটি কঠিন প্রশ্ন ছুড়ে দিয়েছে- রাষ্ট্র ন্যায়ভিত্তিক সমাজ ব্যবস্থায় ফিরে আসবে তো?
প্রবৃদ্ধি ও উন্নয়ন মূলকথা নয়; মূলকথা সুন্দর জীবন-জীবিকা এবং জীবনের সব ক্ষেত্রে সকল নাগরিকের সম-অধিকার ও সম-সুযোগ। যার অনুপস্থিতির কারণে কি করোনাভাইরাসের প্রতিশোধমূলক প্রয়াস, যার থেকে কারও রক্ষা নেই? ফরাসি মার্কসীয় অর্থনীতিবিদ টমাস পিকেটি কী ভাবছেন? নাকমুখে রক্ত সঞ্চার স্বাস্থ্যের লক্ষণ নয়, বরঞ্চ মৃত্যুর সিগন্যাল। অন্যায় লুটেরা শ্রেণি আজ সাধারণ মানুষের দুর্ভাগ্যের কাতারে দাঁড়াতে বাধ্য হচ্ছে। বাংলাদেশ থেকে পালিয়ে যাবার তাদের কোনো পথ খোলা নেই। অন্ধকার রুমে কালো বিড়াল খুঁজে বেড়াচ্ছেন। মুক্তি যেন সূদুর পরাহত।
তিন মাসের মধ্যে বাংলাদেশে করোনা সংক্রমণ চীনের উহানকে ছাড়িয়ে গেছে, শিল্প ও স্বাস্থ্যখাত পুরোপুরি বিপর্যস্ত। কেবলমাত্র সুষ্ঠুভাবে চালু আছে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতাল, কুয়েত মৈত্রী, সিএমএইচ এবং কয়েকটি সরকারি মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল। দেশের সবচেয়ে বড় চিকিৎসা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বিএসএমএমইউ হাসপাতাল সম্পর্কেও প্রশ্ন উঠেছে। হাতাহাতির ঘটনা ঘটেছে, কয়েক শিক্ষকের করোনা মৃত্যুর ঘটনায়, প্রায় ‘লকডাউন’।
স্বাস্থ্য ব্যয় বিল এবং অক্সিজেনের স্বল্পতার আলাপ না-ই-বা হলো। দেশের প্রায় ৫০০০ ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রের (UHFWC) ১০% ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রে একজন ডাক্তারও সার্বক্ষনিকভাবে অবস্থান দূরে থাকুক, নিয়মিত উপস্থিত থাকেন না। ঝড় উঠবে সেখানে। অর্থনীতির সংবাদ আরও দুর্বিষহ।
বোমা ফাটিয়েছে সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি)- দরিদ্রতার হার ২০% থেকে বেড়ে ৩২% হবে। উন্নয়ন অন্বেষণের পরিচালক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক রাশেদ তিতুমীরের হিসেবে এই বছরই বাংলাদেশে দরিদ্রতা বেড়ে ৪২-৪৩% পৌঁছবে। ভয়ানক তথ্য, হিসাবে খুব ভুল নাও হতে পারে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার হিসেবে বাংলাদেশে অন্যূন ৫০ লাখ ব্যক্তি করোনায় আক্রান্ত হবে। অতিরিক্ত ২ কোটি দরিদ্র ও নিম্নবিত্ত পরিবার খাদ্য সংকটে আছে, তাদের আয় ভয়ানকভাবে কমেছে, দ্রুত অবস্থার পরিবর্তনের সম্ভাবনা নেই। এসব সমস্যার মূলে রয়েছে সুশাসনের অভাব ও গণতন্ত্রহীনতা এবং লাগামহীন দুর্নীতি।
অতর্কিত করোনা সংক্রমণে বাংলাদেশে কয়েকজন মন্ত্রীর প্রলাপ উক্তি বৈসাদৃশ্য। করোনা সংক্রমণের দ্বিতীয় ও তৃতীয় প্রবাহ হবে ভয়ানক যা দ্বারপ্রান্তে, অথচ আমাদের পর্যাপ্ত প্রস্তুতি নেই। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক রাশেদ আল মাহমুদ তিতুমিরের উন্নয়ন অন্বেষণ ২০২০-২১ বাজেট সম্পর্কিত তত্ত্ব-উপাত্ত আলোচনায় দেখিয়েছেন যৌক্তিক প্রবৃদ্ধি ৪.২%-এর অধিক সম্ভব নয়, উৎপাদনশীল জিডিপি কমবে ১২.৪%, প্রবাসী রেমিটেন্স আয় কমেছে, কয়েক দেশে প্রবাসী অভিবাসী বাংলাদেশিদের কর্মচ্যূতি ঘটেছে। ১৭৪টি রাষ্ট্রে বাংলাদেশের এক কোটি বিশ লাখ অভিবাসী কাজ করেন, সেখানে কর্মসংস্থান বাড়ছে না, বরঞ্চ কমছে এবং পোশাক শিল্পের আয় স্থবির হয়ে পড়েছে, নীরব ছাঁটাই চলছে, শিক্ষায় সবার সমান সুযোগ নেই, সামাজিক সুরক্ষা সুবিধা ভোগ করে মাত্র ৯৬ লাখ পরিবার। প্রাপ্তির সঙ্গে আছে দুর্নীতির উইপোকা, বেকারত্ব বাড়ছে ৩% হারে, অসহায়ত্ব শিক্ষিত বেকারদের।
২০২০-২১: দুঃসময়ের বাজেট কিন্তু আলোচনায় উত্তাপ নেই
দুঃসময় গতানুগতিক বাজেটে উত্তীর্ণ হওয়া যায় না, বৃহত্তর জনগোষ্ঠীর কল্যাণ অবসৃত থাকে, পর্যাপ্ত পুষ্টির অভাবে কর্মদক্ষতায় ও প্রতিযোগিতায় পিছনে পড়ছে বাংলাদেশের শ্রমিকের উৎপাদন ক্ষমতা।
*(১) দুঃসময়ের বাজেট নিয়ে আলোচনার উত্তাপ নেই। দেশের এতজন বিজ্ঞ অর্থনীতিবিদ, রাষ্ট্রবিজ্ঞানী, ব্যাংকার, শিক্ষক, বুদ্ধিজীবী বা রাজনীতিবিদ কেউ সাহস করে সত্য কথা জনসাধারণকে জানাচ্ছেন না। সবাই প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশের অপেক্ষমান।
*(২) বিএনপি তাদের স্ট্যান্ডিং ও উপদেষ্টা কমিটির সভায় অর্থমন্ত্রীর বক্তব্য নিবিড়ভাবে পড়ে, অধ্যয়ন করে একাধিক আলোচনা-সমালোচনা করে মননশীল সুষ্ঠ সুপারিশ সরকারকে জ্ঞাত না করে ভুল করছেন। দেশকে তো বাঁচাতে হবে।
*(৩) জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সাংসদরা মুখে কলুপ এঁটেছেন কেন? সুচিন্তিত বাগ্মিতায় সংসদ উত্তপ্ত রাখুন; ভয় পাবেন না, নির্ভয়ে দায়িত্ব পালন করুন। সংখ্যার চেয়ে সাহস বড়।
*(৪) এরশাদ সাহেব বেঁচে থাকলে বাজেটের প্রতি আইটেম পড়ে বুঝে উপযুক্ত সমালোচনা উন্মুক্ত করতেন, জি এম কাদেরের মতো আচরণ করতেন না। জাতীয় পার্টির ভবিষ্যত গড়ার জন্য আপনার অনেক কাজ বাকি।
*(৫) জনাব ওবায়দুল কাদের অনুগ্রহ করে মুখ বন্ধ রাখেন। বিরোধী দলীয় সকল সমালোচনার উত্তর দিতে হয় না; এটা রাজনৈতিক অসহিঞ্চুতা। অর্থমন্ত্রীকে উত্তর দেবার সুযোগ দিন। বাজেট অর্থমন্ত্রীর দায়িত্ব, আপনার নয়।
*(৬) মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, সর্বদলীয় রাজনৈতিক সভা ডাকুন, বিপদ মুক্তির বাজেট উদ্ভাবনের জন্য। নতুবা কোনো লাভ হবে না দেশের বা দেশবাসীর, ওষুধের দাম কমবে না, কৃষক শ্রমিক তার শ্রমের ন্যায্য মূল্য পাবে না, আইসিউ প্রতারণা বাড়বে, মৃত্যুর পরও চিকিৎসার বিল দিতে হবে, ফরিয়ারা রাজত্ব করবে, শহরবাসী অত্যাধিক মূল্যে ফলমূল,শস্য কিনে প্রতারিত হবেন। স্বাস্থ্য খাতে নৈরাজ্য অব্যাহত থাকবে, ক্ষুধা দারিদ্র বাড়বে, সঙ্গে যৌন নিপীড়ন, নৈরাজ্য ও ব্যাপক দুর্নীতি।
পরিশোধতব্য সুদ ২০২০-২১ বাজেটে
আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রাপ্য বিদেশি ঋণের সুদ এবং পিপিপি (পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপ) ভর্তুকি ও দায়বদ্ধতা পরিশোধ করতে ১,০০,৪১১ (এক লাখ চার শত এগার) কোটি টাকা প্রয়োজন, যা ২০২০-২১ বাজেটের মোট বরাদ্দের ১৭.৬৮%। খাদ্য, দুর্যোগ, কৃষি, পানি সম্পদ ও স্থানীয় সরকারের মোট বরাদ্দের ১৩.৩৬% চেয়ে ২৫০০০ কোটি টাকা বেশী। স্বাস্থ্যসেবা ও পরিবার কল্যাণ, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা এবং মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষায় বরাদ্দ মাত্র ৭৯৯৪১ কোটি, যা বাজেটের ১৪.২৫%। স্মরণতব্য ঋণ পরিশোধের জন্য প্রয়োজন ১৭.৬৮% বরাদ্দ। সংসদে এই সম্পর্কে প্রশ্ন না উঠা দুর্ভাগ্যজনক। পরিশোধতব্য বিদেশি ঋণের বিষয়টি জনসাধারণের শিক্ষায় অন্তর্ভুক্ত করার ব্যাপারে বিএনপি তথা জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতৃবর্গের ব্যর্থতা রাজনীতিতে তাদের অপরিপক্কতার পরিচায়ক এবং দুঃখজনক।
বাংলাদেশের জনপ্রশাসন মাথা ভারী, নিত্য নতুন সিনিয়র সচিবের জন্ম হচ্ছে, বাজেটের মোট বরাদ্দের প্রায় এক পঞ্চমাংশ জনপ্রশাসনে।
শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্ন ও ভালোবাসা
দলমত নির্বিশেষে সকল রাজনৈতিক কর্মী এবং গ্রাম গঞ্জের সাধারণ কৃষক শ্রমিকের জন্য ছিল শেখ মুজিবুরের অফুরন্ত ভালোবাসা, তার হৃদয়ের দরজা ছিল সবার জন্য উন্মুক্ত, তাদের খাদ্য নিরাপত্তা দেওয়া, কৃষক শ্রমিক সন্তানের শিক্ষা ও অধিকার প্রতিষ্ঠা ছিল তার জীবনের ব্রত। সবাই তার একান্তজন, আত্মীয়তুল্য। যাকে একবার শেখ মুজিব দেখেছেন, তাকে তিনি স্মরণ রেখেছেন স্নেহডোরে। কেন্দ্রিকতা তাকে করাচি ও ইসলামাবাদের শাসনের কথা বারে-বার স্মরণ করিয়েছে নির্মমভাবে। পাকিস্তানের কেন্দ্রিকতা পূর্ব পাকিস্তানবাসীর সম-সুযোগ ও সম-উন্নয়নের প্রধান বাধা ছিল কেন্দ্রিকতা, যানজট, শাসনজট ও সময় মতো স্বাস্থ্য সুবিধা থেকে বঞ্চনার নির্মম মাফিয়া শাসন। পাকিস্তান ভাঙার অন্যতম কারণ কেন্দ্রিকতা, ধর্মের অপব্যবহার এবং কেন্দ্রিকতা দুর্নীতির সোপান। মুখে রক্ত সঞ্চারের মতো। শহরের সকল সুযোগ নিশ্চিত করতে চেয়েছিলেন শেখ মুজিব গ্রামবাসীদের জন্য, সঙ্গে নির্মল বাতাস ও লোকজ সংস্কৃৃতির বিস্তার।
তৃণমূলের অধিকার আদায় ও জবাবদিহিতামূলক গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে ৬৪ জেলায় ৬৪ জন গর্ভনর নিয়োগ দিয়েছিলেন শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭৫ সনের ১৭ জুলাই মাসে, আগস্ট মাস অবধি চলছিল গভর্নরদের প্রশিক্ষণ। তিনি বুঝেছিলেন, পূর্ব পকিস্তানে শিল্প নেই; কিন্তু ব্যাপক কৃষি সম্ভাবনা আছে। আছে শিল্পের উৎপাদন সৃষ্টির। তাই কৃষি হবে ব্যাপক কর্মসংস্থান ও খাদ্য নিরাপত্তার বাহন, পদ্ধতি হবে ইউরোপীয় সমবায় ব্যবস্থাপনা; মেজর খালেদ মোশাররফের ছোট ভাই রাশেদ মোশাররফকে ইউরোপে পাঠিয়ে ছিলেন সমবায় পদ্ধতি অবলোকন ও অধ্যয়নের জন্য। উদ্যোগ নিয়েছিলেন মৌলিক সংস্কারের, যা আজও অসম্পূর্ণ।
দ্রুত বিপদমুক্তির জন্য সবচেয়ে বেশি সরকারি বিনিয়োগ করতে হবে বেসরকারি কৃষি উৎপাদনে; সুষ্ঠ পরিকল্পনা ও তদারকিতে উদ্ধৃত্ত হয়ে ফিরে আসবে সকল বিনিয়োগ। ব্যাংক খেলাপীর ঝামেলায় ঘুম হারিয়ে যাবে না। শিল্পপতিদের বিশ্বাস করা যায় না, কিন্তু কৃষককে বিশ্বাস করা যায়। তারা মিথ্যাচার কম করেন। কারণ তারা ধর্মে বিশ্বাসী ও নীতিবান; তাদের ক্ষুধা সীমিত। মৎস্য, পানি সম্পদ, পোলট্রি, স্বাস্থ্যসেবা, ডেইরি ও খাদ্য নিরাপত্তায় ব্যাপক বিনিয়োগ নিশ্চিত করুন নির্ভাবনায়। BIDS (বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ) ও অন্যান্য গবেষণা প্রতিষ্ঠানের সজাড়ু তদারকির মাধ্যমে নিশ্চিত করতে হবে সঠিক নিবন্ধন, সঠিক কৃষককে সময়মতো ঋণদান, সময়মতো দুর্নীতিমুক্ত ঋনপ্রাপ্তি। সঙ্গে রাখুন এনজিও-দের; তারা তৃণমূলে সম্পৃক্ত এবং পরিশ্রমী, ক্ষুদ্র ঋণ দ্রুত প্রসার করে নারীদের ক্ষমতায়নে ব্যাপক ভূমিকা রেখেছেন। নোবেল লরিয়েট ড. মুহাম্মদ ইউনূস, ব্রাকের প্রয়াত স্যার ফজলে হাসান আবেদ ও ‘আশা’র শফিকুল হক চৌধুরীর অবদান শ্রদ্ধার সাথে স্মরণযোগ্য।
(১) স্থানীয় শাসন কমিশন ও গর্ভনর নিয়োগদান
বৃৃহত্তর জনসাধারণের কল্যাণই রাজনীতি। সঠিক সময়ে নির্ভয়ে সঠিক রাজনৈতিক সিদ্ধান্তের দ্রুত বাস্তবায়ন নিঃস্বার্থ রাজনৈতিক কর্মীকে মাথা উঁচু করে থাকা রাজনৈতিক নেতায় উন্নীত করে, ইতিহাসে স্থান করে দেয়। প্রাণপ্রিয় নেতার অসমাপ্ত কর্মসূচির বাস্তবায়নের জন্য প্রতিযোগিতামূলক স্ব-নির্বাচিত, স্বশাসিত ৬৪ জেলা স্টেট (ডিস্ট্রিক্ট স্টেট) সৃষ্টির লক্ষ্যে অনতিবিলম্বে কমিশন গঠন করুন, ৬৪ জন গর্ভনর নিযুক্তি দিন তৃণমূল রাজনীতিবিদ, চিকিৎসক, শিক্ষক, আইনজীবী, অবসরপ্রাপ্ত আমলা, পুলিশ ও সামরিক কর্মকর্তা, বিচারক-বিচারপতি, দানশীল ব্যবসায়ী, প্রখ্যাত সাংবাদিকদের মধ্য থেকে।
ছয় মাসের মধ্যে সংবিধান সংশোধন করতে হবে। কেন্দ্র ও জেলা স্টেটে প্রশাসনিক সামঞ্জস্য থাকবে, ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণে দ্রুত উন্নয়ন হবে; কিন্তু দুর্নীতি বহুলাংশে কমবে, সম-অধিকার ও সম-সুযোগ সৃষ্টি হবে, জবাবদিহিতা থাকবে, সুখের পায়রার বকবকুম শুনতে হবে না, জনপ্রতিনিধিদের সার্বক্ষণিকভাবে নিজ জেলা স্টেটে সপরিবারে অবস্থান হবে তাদের নৈতিক দায়িত্ব। সরকারি কর্মকর্তাদের বেলাতেও এই নিয়ম কঠোরভাবে প্রযোজ্য হবে। তাদের সন্তানদের স্ব স্ব জেলা স্টেটে অধ্যয়ন করতে হবে স্থানীয় কৃষক শ্রমিকের সন্তানদের সাথে একই বেঞ্চে বসে।
দুই জায়গায় পরিবার রাখা মানে দুর্নীতিতে সজ্ঞানে অংশগ্রহণ, কর্তব্যে অবহেলা ও স্থানীয় উন্নয়নে মনোযোগ না দেওয়া। স্বচ্ছ জবাবদিহিতামূলক দুর্নীতিমুক্ত প্রশাসন সৃষ্টির লক্ষ্যে দুটি প্রশাসন ক্যাডার সৃষ্টি বিবেচ্য হওয়া উচিত- ব্যাপক জেলা স্টেট ক্যাডার এবং সীমিত কেন্দ্রীয় প্রশাসন ক্যাডার। কেন্দ্র নিয়ন্ত্রণ করবে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য, পররাষ্ট্র নীতি, আকাশ সমুদ্রপথ, আন্তঃজেলা যোগাযোগ ব্যবস্থা, আয়কর ব্যবস্থাপনা ও রাষ্ট্রের নিরাপত্তা। পুলিশ হবে জেলা স্টেট সরকারের নিয়ন্ত্রণাধীন। কোটা নয়, প্রতিযোগিতাই হবে প্রশাসনে প্রবেশ পথ। বয়স সময়সীমা অহেতুক প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে। সামরিক বাহিনীতে যোগদানে বয়সসীমা বিবেচ্য হতে পারে; অন্যত্র নয়।
স্বাভাবিক প্রশাসন অহেতুক দুর্নীতি সৃষ্টি করে। সকল কর্মচারী কর্মকর্তাদের অবশ্যই ধূমপান, পান-সেবন ও মাদকা আসক্তি মুক্ত হতে হবে। এগুলো দুর্নীতির প্রথম ধাপ। সকলের আয়কর তথ্য প্রকাশ বাধ্যতামূলক।
স্থানীয় শিক্ষিতদের ব্যাপক কর্মসংস্থান সুযোগ সৃষ্টি হবে জেলা প্রশাসনে, কৃষি উৎপাদন সমবায়ে এবং কৃষি বাজারজাত সমবায়ে। বহু দলীয় গণতন্ত্রের বিকাশ হবে। কমিউনিস্ট ও বাম রাজনৈতিক নেতারা তাদের ত্যাগ তিতীক্ষার পুরষ্কার অর্জন করতে পারবেন কোনো না কোনো জেলা স্টেটে; তাদের শাসনের ধরন নিশ্চয়ই ভিন্ন হবে। নির্মল পরিবেশে আধুনিক শিক্ষা সংস্কৃতির নতুন শহর গড়ে উঠবে জেলা স্টেটে; কেন্দ্রীয় রাজধানী ঢাকার সমমানের স্বাস্থ্য ও শিক্ষা সুবিধা, সঙ্গে মুক্তচিন্তার সংস্কৃতি ও বৈচিত্র্যময় লোকশিল্প নিয়ে।
শান্তির দ্বীপ হবে সব জেলা স্টেট। সুস্থ প্রতিযোগিতার মাধ্যমে নারীর জীবন যাত্রা হবে নিরন্তর নিরাপদ ও আনন্দময় এবং সম্পত্তিতে সমান অধিকার। জনসংখ্যা ভেদে প্রতি জেলা সংসদে ৪০ থেকে ৮০ জন বিধায়ক সরাসরি ভোটে নির্বাচিত হবেন। সর্বোচ্চ ১০ জনের মন্ত্রীসভা; প্রশাসন শীর্ষে গভর্নর। কেন্দ্র নিয়োগ দেবে জেলা হাসপাতালের বিশেষজ্ঞদের জেলা স্টেটের সিভিল সার্জনের পরামর্শে; কিন্তু উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রের (UHFWC) সকল চিকিৎসক, সেবিকা ও কমিউনিটি ক্লিনিকের কর্মীদের নিয়োগ উন্নয়ন নির্ধারণ করবেন জেলা স্টেট কর্তৃপক্ষ।
(২) ৫০০০ ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র
সার্বক্ষণিক স্বাস্থ্য সুবিধা ছাড়া আধুনিক জীবনযাত্রা অসম্পূর্ণ ও অকল্পনীয়। করোনা প্রতিরোধে ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রের মূল ভূমিকা প্রশিক্ষিত চিকিৎসক ও সেবিকারা মূল সেনানী। এখানে বিনিয়োগ হবে অর্থবহ এবং অবশ্য প্রয়োজনীয়। কেবল যন্ত্রপতি ক্রয় নয়, যন্ত্রপাতির সহায়তায় সময়মতো স্বাস্থ্যসেবা প্রদানই লক্ষ্য। চিকিৎসক ও সেবিকাদের জ্ঞান ও সেবার উন্নয়ন হবে করোনা ও অন্যান্য মহামারী থেকে আত্মরক্ষার প্রধান অস্ত্র।
আগামী ১০-১৫ বৎসরে একটি ইউনিয়নের লোকসংখ্যা পৌঁছবে পঞ্চাশ থেকে সত্তর হাজারে। জনগণের চিকিৎসা সেবা ও স্বাস্থ্য নিরাপত্তার জন্য ৬ ফুট উঁচু, ৮০০ অধিক রানিং ফুটের নিরাপত্তা বেষ্টনি, গভীর নলকুপ ও ইলেকট্রিসিটির ব্যবস্থা, সঙ্গে ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রের পরিচালকের জন্য ১০০০ বর্গফুটের বিনা ভাড়ায় পারিবারিক বাসস্থান, মেট্রন, একজন দন্ত চিকিৎসক, একজন ফিজিওথেরাপিস্ট, একজন ফার্মাসিস্ট, দুইজন নবীন চিকিৎসক ও দুইজন ইন্টার্ন চিকিৎসকের জন্য ৬০০ বর্গফুটের ৮টি ফ্রি বাসস্থান, মেডিকেল, ডেন্টাল, নার্সিং, ফিজিওথেরাপি, ছাত্র ও টেকনিশিয়ানদের জন্য ক্লাসরুম, লাইব্রেরি, বিনোদন কক্ষ, ডাইনিং রুম, টয়লেট সুবিধাসমেত ৪৫০০ বর্গফুটের ডরমিটরি এবং ২০ শয্যার ইনডোর হাসপাতাল, চিকিৎসকের চেম্বার, প্যাথলজি, এক্স-রে, আলট্রাসনোগ্রাম ও ছোট অপারেশন কক্ষ বাবদ ৫০০০ বর্গফুট স্থাপনা হবে জনগণকে দেওয়া বঙ্গবন্ধুর স্বাস্থ্য সুবিধা বাস্তবায়নের প্রতিশ্রুতি রক্ষার প্রমাণ।
যেসব চিকিৎসা ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রে সম্ভব হবে না, সেগুলো রেফার হবে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে, উন্নত চিকিৎসার জন্য। ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রের চিকিৎসকগণ কমিউনিটি ক্লিনিকেও প্রতি সপ্তাহে চিকিৎসা পরামর্শ দেবেন, স্থানীয় স্বাস্থ্যকর্মী ও ধাইদের ক্রমাগত আধুনিক চিকিৎসা তথ্য জ্ঞাত করাবেন। তদোপরি তারা মেডিকেল ও অন্যান্য ছাত্রদের শিক্ষা প্রদানের দায়িত্ব পালন করবেন, যার জন্য একটা শিক্ষকতা ভাতা (Teaching Allowance) পাবেন। তিন মাস মেয়াদী কোনো একটা সার্টিফিকেট অধ্যয়ন ও পরীক্ষা দিয়ে জুনিয়র বিশেষজ্ঞ পদে উন্নীত হবেন। কমপক্ষে ২০ হাজার টাকা অতিরিক্ত ভাতা পাবেন। বিনা ভাড়ায় বাসস্থান সুবিধা পাবেন। গ্রামবাসীদের নিরন্তর চিকিৎসাসেবা দেওয়ার জন্য চিকিৎসকদের জন্য জনগণের পুরষ্কার।
সকল সরকারি ও বেসরকারি মেডিকেল, ডেন্টাল ও নাসিং কলেজকে এক বা একাধিক ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রের সাথে সম্পৃক্ত হবে উন্নতমানের চিকিৎসাসেবা শিক্ষাদানের প্রধান হাতিয়ার। মুক্তিযুদ্ধ ও দরিদ্র শ্রেণির সাথে পরিচিতি দেশপ্রেমের অংশ।
(৩) স্বাস্থ্যখাতের অন্য মৌলিক সংস্কার
প্রায় এক লাখ ব্যক্তি কারাবন্দী আছেন, জেল হাসপাতাল দুর্নীতির আখড়া এবং চিকিৎসক স্বল্পতা ও বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের অভাব নিত্য নৈমিত্তিক ঘটনা। দেশের রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, আমলা, ব্যবসায়ীদের ভরসা সামরিক বাহিনীর হাসপাতাল সিএমএইচ। সকল কারাগার, পুলিশ, অন্যান্য আইন শৃংখলা বাহিনী, আনসার ও বর্ডার গার্ড হাসপাতালসমূহ সরাসরি আর্মি মেডিকেল কর্পস (এএমসি) কর্তৃক পরিচালিত হলে শৃংখলা ফিরে আসবে, চিকিৎসকের অভাব হবে না। এএমসি হবে নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষ; সকল চিকিৎসক, সেবিকা ও টেকনিশিয়ানদের পদবী হবে সামরিক বাহিনীর- এএমসি’র। তারা সুযোগ-সুবিধা বেশি পাবেন। তাই তাদের কাজে থাকবে প্রশান্তি ও আনন্দ এবং সময়মতো পেশাতে অগ্রগতি।
বেসামরিক অনেক সরকারি হাসপাতাল বর্তমানে সুষ্ঠুভাবে পরিচালিত হচ্ছে এএমসি চিকিৎসকদের দ্বারা। আইনশৃংখলা বাহিনীর সকল সদস্য ও পরিবারবর্গ সামরিক বাহিনীর সমান সুযোগ পাবেন। সামরিক বাহিনীর মেডিকেল কলেজে অধ্যায়নরতরা এমবিবিএস পাস করে ৫ বৎসর এএমসি’তে চাকরি করতে বাধ্য থাকবেন, নতুবা ক্ষতিপূরণ দেবেন ত্রিশ লাখ টাকা।
(৪) ঢাকা শহরে জেনারেল প্রাকটিশনার্স ও রেফারেল পদ্ধতির প্রবর্তন
ঢাকা শহরে ১০০ ওয়ার্ডে প্রস্তাবিত ২০২০-২১ বাজেটে জেনারেল প্রাকটিশনার্স (জিপি) ও রেফারেল পদ্ধতির জন্য ২ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ দিন। ২ কোটি নগরবাসীর জন্য খুব বেশি বরাদ্দ নয়। ঢাকা শহরের সকল জেনারেল প্রাকটিশনার্স সেন্টারে চিকিৎসকের কাছে লিপিবদ্ধ নাগরিকরা বিনা ফিতে পরামর্শের পাশাপাশি ইসিজি, আম্বুবেগ, অক্সিজেন- পালস অক্সিমিটার ও নেবুলাইজার সুবিধা, ফার্মেসি, ছোট ল্যাব, এএনসি-পিএনসি ও ফিজিওথেরাপি সুবিধা পাওয়া যাবে। অতিরিক্ত থাকছে স্বাস্থ্য শিক্ষা, স্কুল স্বাস্থ্য কার্যক্রম ও হোমভিজিট- বাড়িতে যেয়ে রোগী দেখা এবং প্রেসক্রিপশন অডিট ব্যবস্থাপনা। অতিরিক্ত ওষুধের অপ্রয়োজনীয় ব্যবহার অপচয় বটে, স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকরও।
রোগীরা ন্যায্যমূল্যে সরকারি ওষুধ কোম্পানি ইডিসিএলের (ইডিসি) সকল ওষুধ পাবেন অল্প খরচে। সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত সকল রোগী বিনা ফিতে চিকিৎসকের পরামর্শ পাবেন; বিকাল ৫টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত চিকিৎসকের পরামর্শ পাবেন সরকারি নির্ধারিত একটা ন্যায্য ফি’তে। কেবলমাত্র জিপি চিকিৎসকগণ রোগীদের নির্দিষ্ট হাসপাতালে অধিকতর চিকিৎসার জন্য রেফার করতে পারবেন; রোগীর হয়রানি কমবে। জিপি এবং হাসপাতালের চিকিৎসকদের মধ্যে সৌহার্দ্য ও পেশা সংক্রান্ত সম্পর্ক গভীর হবে। হোম ভিজিট করলে জিপি অতিরিক্ত ফি পাবেন। ফলে মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে অপ্রয়োজনীয় ভিড় কমবে।
কতক জেনারেল প্রাকটিশনার্স নিকটবর্তী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে খণ্ডকালীন শিক্ষকতার দায়িত্বও পালন করতে পারবেন আনন্দের সাথে; পাবেন শিক্ষকতা ভাতা। সাথে তার পছন্দমতো বিষয়ে সার্টিফিকেট কোর্সে অংশগ্রহণ করে, পরীক্ষায় পাস করে জুনিয়র বিশেষজ্ঞ পদও পাবেন; সঙ্গে আনুমানিক বিশ হাজার টাকার অতিরিক্ত ভাতা।
(৫) পুষ্টি ব্যতীত স্বাস্থ্য অকল্পনীয়
দেশে দুই কোটি দরিদ্র ও নিম্ন আয়ের পরিবারকে করোনা উদ্ভুত সমস্যা সমাধানের লক্ষ্যে আগামী ছয় মাস ফ্রি রেশন দেওয়া সরকারের নৈতিক দায়িত্ব। ৪-৬ জনের পরিবারের জন্য প্রতি মাসে চাল ২০ কেজি, আটা ৫ কেজি, আলু ১০ কেজি, সরিষার তৈল ১ লিটার, সয়াবিন তৈল ১ লিটার, পিয়াজ ১ কেজি, মশুর ডাল ২ কেজি, আদা ২০০ গ্রাম, রসুন ২০০ গ্রাম, শুকনো মরিচ ২০০ গ্রাম, লবণ ১/২ কেজি, চিনি ১/২ কেজি ও সাবান ২টি-সহ মোট খাদ্য প্যাকেট ব্যয় হবে অনধিক দুই হাজার টাকা। ফ্রি খাদ্য রেশনে কেন্দ্রীয় সরকারের মাসিক ব্যয় মাত্র চার হাজার কোটি টাকা। খাদ্য গুদামে স্থান বাড়বে, যা কৃষকের শস্য উৎপাদনে আকর্ষণ বাড়াবে।
স্বাস্থ্য সুরক্ষার জন্য প্রতিমাসে প্রতি পরিবারকে আরও দিতে হবে দুই কৌটায় দুইশত আয়রন টেবলেট, ৬০ মিলিলিটারের এক বোতল প্যারাসিটামল সাসপেনশন, ৩০টি ৫০০ মিলিগ্রামের প্যারাসিটামল টেবলেট, ১০০ মিলিটার ক্লোরহেক্সাডিন এবং ৫টি ওআরএস সাসেটস। এতে ব্যয় হবে মাসে অনধিক ২০০ টাকা। সঙ্গে উঠানে সবজী চাষে সহযোগিতা। গর্ভবতী, শিশু ও বয়োবৃদ্ধদের প্রতি সপ্তাহে একবার দুধ, ডিম খাবার সুবিধার জন্য মাসে ৫০০ টাকা নগদ সহযোগিতা দেওয়া কাম্য হবে। স্মরণ রাখতে হবে, নগদ অনুদান অধিকতর দুর্নীতির সুযোগ সৃষ্টি করে। সুতরাং নগদ অনুদানের পরিমাণ যথাসাধ্য কম রাখতে হবে। খাদ্য সহযোগিতা বাড়ি বাড়ি পৌঁছে দিতে হবে সর্বদলীয় রাজনৈতিক কর্মী, ছাত্র ও এনজিও-দের সহায়তায়; সঙ্গে থাকবেন সামরিক বাহিনীর দেশপ্রেমিক সেনানীরা।
(৬) অপ্রয়োজনীয় ব্যয় হ্রাস সামাজিক বৈষম্য নিরসনের বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি
(ক) নতুন সিনিয়র সচিব নয়: নিত্য নতুন সিনিয়র সচিব সৃষ্টি কাম্য নয়। কোনো আমলাকে চাকরিতে এক্সটেনশন দেওয়া অনভিপ্রেত। এরা রাজনীতিবিদদের প্রতিপক্ষ, সুষ্ঠ নির্বাচন বিরোধী, সুখের পায়রা, জনগণ বিচ্ছিন্ন। জনগণের স্বার্থের চেয়ে নিজেদের সুযোগ সুবিধা সৃষ্টি এবং জবাবদিহিতাবিহীন প্রশাসনে এদের বিশেষ পারদর্শিতা রয়েছে।
(খ) সরকারি কর্মকর্তা, জনপ্রতিনিধি ও করপোরেট কর্মকর্তাদের বেতন হ্রাস: ইনসপেক্টর থেকে আইজিপি ,ক্যাপ্টেন থেকে জেনারেল, সেকশন অফিসার থেকে সিনিয়র সচিব, লেকচারার থেকে উপাচার্য, করপোরেট কর্মকর্তা, ব্যাংকার, বিচারক থেকে বিচারপতি, সাংসদ, মন্ত্রী, প্রধানমন্ত্রী ও প্রেসিডেন্টের আগামী এক বৎসর ২০% বেতন ও ভাতা হ্রাস করা হবে করোনাসৃষ্ট পরিস্থিতি উত্তরণের জন্য এবং দেশের সার্বিক অধিক অবস্থার বিবেচনায় যৌক্তিক কার্যক্রম। এক শ্রেণির নাগরিক প্রাচুর্যে জীবনযাপন করবেন, আর শ্রমিকরা অর্ধাহারে কালাতিপাত করবেন, তা সভ্য নয়।
(গ) পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ছাড়া সকল প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রদের টিউশন ফি ২৫% হ্রাস বাঞ্ছনীয়।
(ঘ) বিদেশে সরকারি অর্থে চিকিৎসা সুবিধা রহিত করন: সরকারি অর্থায়নে বিদেশে চিকিৎসা সুবিধা পাবেন না সংসদ সদস্য, মন্ত্রী, প্রেসিডেন্ট বা অন্য কোনো নাগরিক। সবাইকে চিকিৎসা নিজ দেশে সরকারি হাসপাতালে নিতে হবে।
(ঙ) ক্ষতিপূরণ ব্যতিরেকে বিদ্যুৎ ব্যবস্থাপনার কুইক রেন্টাল ২০২০ বাজেট থেকে প্রত্যাহার করুন। দেশবাসী আর কতদিন ব্যবসায়ীর হাতে প্রতারিত হবেন? মেগা প্রকল্পের লাগাম কিছুদিন ধরে রাখুন।
(চ) জনপ্রশাসন (আমলাতন্ত্রের) বিভাগের ব্যয় ৫০% হ্রাসের ব্যবস্থা নিন।
(ছ) প্রেসিডেন্ট, প্রধানমন্ত্রীসহ সকল ভিআইপির নিরাপত্তা ব্যয় ৫০% কমানো হলে পুলিশ ও এলিট ফোর্সের সদস্যরা দেশের আইনশৃংখলা রক্ষায় অধিক মনোযোগ দেবার সুযোগ পাবেন, খুন খারাপি কমবে এবং রাহাজানি, ছিনতাই, পথে ঘাটে যৌন নিপীড়ন হ্রাস পাবে, সফলতার জন্য পুলিশ পুরষ্কৃত হবেন। পুলিশ হবেন জনগণের সত্যিকারের বন্ধু।
(জ) মাদ্রাসা শিক্ষায় এত বেশি বিনিয়োগ কি পর্যাপ্ত ‘ডিভিডেন্ট’ দিচ্ছে? বিজ্ঞান শিক্ষাকে মাদ্রাসা শিক্ষার সাথে যুক্ত করে সকল সম্প্রদায়ের জন্য উন্মুক্ত থাকবে। মসজিদকে কি প্রাক স্কুল হিসাবে ব্যবহার করা যায়?
(ঝ) ব্যয় হ্রাসের অজুহাতে কোনো শ্রমিক ছাঁটাই চলবে না।
(৭) রাষ্ট্রের আয় বৃদ্ধি উন্নয়নের জন্য অত্যাবশ্যক
(ক) নগন্য নিবন্ধিত আয়কর দাতা: দেশে বর্তমানে মাত্র ২২ লাখ ব্যক্তি আয়কর নিবন্ধিত আছেন। এটা হতে হবে কমপক্ষে ১ কোটি। ফেরিওয়ালা, নিরাপত্তা প্রহরী, চাওয়ালা, ছোট দোকানদার, ভ্যানচালক, রিকশাচালক, কার ড্রাইভার, বেবি ট্যাক্সি ড্রাইভার, ফুটপাতের ফল ও সিগারেটের দোকানদার, হোটেল মালিক, সবজিওয়ালা, সরকারি-বেসরকারি নিম্নশ্রেণির কর্মচারী, কিন্ডারগার্ডেন শিক্ষক, অনভিপ্রেত কোচিং সেন্টারের মালিক- সবাইকে নিবন্ধিত হতে হবে। গৃহকর্মীদেরও নিবন্ধিত হতে হবে; তবে গৃহকর্মীদের নিবন্ধন ফি দেবেন গৃহকত্রীরা। বাৎসরিক নিবন্ধন ফি ১ হাজার টাকার বিনিময়ে পাবেন পুলিশের হয়রানি থেকে রক্ষা এবং ব্যাংক, স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও জেনারেল প্রাকটিশনার্স (জিপি) পরামর্শ ও ফ্রি স্বাস্থ্য সুবিধা, কতক ওষুধ ও বড় হাসপাতালে পূর্বাহ্নে নির্ধারিত রেফারেল সুবিধা। সরকারের আয় বাড়বে এক হাজার কোটি টাকা।
(খ) আয়করমুক্ত করসীমা ৫ লাখ টাকা: আয়করমুক্ত করসীমা সাড়ে ৩ লাখের পরিবর্তে সাড়ে ৪ লাখে নির্ধারণ করুন; বয়োবৃদ্ধ ও বিধবাদের জন্য অতিরিক্ত ৫০ হাজার টাকা। বয়োবৃদ্ধদের ব্যক্তি স্বাস্থ্য খাতে ব্যয় অত্যাধিক; যৌক্তিক আয়কর হবে ৫% থেকে ৩০%। ব্যাংক ও করপোরেট ট্যাক্স ন্যূনতম ৪৫ % নির্ধারিত থাকা বাঞ্ছনীয়। সঙ্গে বাধ্যতামূলক বিনিয়োগ শর্তও থাকবে।
(গ) সিগারেট, বিড়ি, জর্দা ও গু লএবং প্রসাধনীর মূল্যবৃদ্ধি: স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর, পরিবেশের জন্য অমঙ্গলকর ধূমপান, জর্দা, পানসেবন, মাদকাসক্তি, অপ্রাকৃতিক খাদ্য উৎপাদন এবং ক্ষতিকর প্রসাধনী উৎপাদন ও বিপনন হ্রাস করার জন্য ১০০% শুল্ক ধার্য যৌক্তিক উদ্যোগ। নিম্নস্তরের প্রতি শালকা সিগারেট ১৫ টাকা (১০০% সম্পূরক শুল্কসহ), মধ্যম শ্রেণির প্রতি শালক সিগারেট ২৫ টাকা এবং উচ্চ স্তরের প্রতি শলকা সিগারেট ৫০ টাকা এবং ফিল্টারবিহীন প্রতি ১০ শলাকার বিড়ির প্যাকেট মূল্য হবে ৫০ টাকা (সম্পূরক শুল্ক সহ), ফিল্টারযুক্ত ১০ শলাকার বিড়ির প্যাকেটের মূল্য ৬০ টাকা নির্ধারণ করুন। তাতে নাগরিকদের ক্ষতি কমবে, পরিবেশ উন্নত হবে এবং সরকারের আয় কমপক্ষে কয়েক হাজার কোটি বাড়বে। প্রতি ১০ গ্রাম জর্দা ও গুলের মূল্য (সম্পূরক শুল্ক সহ) যথাক্রমে ১২০ টাকা ও ১০০ টাকা ধার্য করুন।
একইভাবে লিপস্টিক ও অন্য প্রসাধনী পারফিউমের ওপর ২০০% শুল্ক ধার্য করুন। অতিরিক্ত লিপস্টিক ও প্রসাধনী শরীরের জন্য ক্ষতিকর ও পুঁজিবাদী প্রচারণা। বিষয়টি সম্পর্কে স্কুল কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ের নারীদের অজ্ঞতা দুঃখজনক ও বিপদজনক। নারীর তথাকথিত সৌন্দর্য্য বৃদ্ধিতে ক্ষতিকর প্রসাধনী ব্যবহার বৃদ্ধির ন্যয় পুঁজিবাদী মাধ্যমে প্রতারণা থেকে সতর্ক করার জন্য শিক্ষা কার্যক্রম ব্যবহার করুন। স্মরণ রাখবেন, বিভিন্ন ধরনের ক্যানসার সৃষ্টিকারী কারসিনোজেন সংযুক্ত থাকে লিপস্টিক ও প্রসাধনীতে উজ্জ্বলতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে।
হাট-বাজার, ট্রেন, বাস স্টেশন, পার্ক, লঞ্চঘাটে প্রকাশ্যে ধূমপান নিষিদ্ধ হওয়া বাঞ্ছনীয়; ব্যত্যয় ঘটলে প্রতিবার জরিমানা হবে একশত টাকা। অর্জিত জরিমানা অর্ধেক পাবে পুলিশ; বাকি টাকা যাবে সরকারি তহবিলে। পানের পিক ফেললেও জরিমানা হবে; পার্কে, বাসে, ট্রেনে, লঞ্চে পানসেবন দৃষ্টিকটু ও স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর।
(ঘ) যানবাহনের রেজিস্ট্রেশন ও রোড ট্যাক্স বাড়ান: দেশে প্রায় ৪৪ লক্ষ যানবাহন আছে; তারমধ্যে ৫০ জাহার বাস, ১ লাখ ৫৩ হাজার ট্রাক, তিন লাখ অটো রিকশা, প্রায় দেড় লাখ ‘কভারড ও উন্মুক্ত’ ভ্যান এবং পিকআপ, ত্রিশ লাখ মোটর সাইকেল, জীপ ৬৫ হাজার, মাইক্রো ও মিনিবাস ১ লাখ ৩৫ হাজার, প্রাইভেট প্যাসেঞ্জার কার ৩ লাখ ৬০ হাজার; সামরিক যানবাহনের হিসাব প্রকাশ্যজ্ঞাত নয়। সকল সরকারি-বেসরকারি মোটরযান ও মোটর সাইকেল গাড়ির রেজিস্ট্রেশন ফি বাড়ান। বাৎসরিক রোড ট্যাক্স হওয়া উচিত ন্যূনতম ১ লাখ টাকা; তবে মোটর সাইকেলের ক্ষেত্রে ২৫ হাজার টাকা পর্যাপ্ত।
সরকারি-বেসরকারি পাবলিক ট্রান্সপোর্টের রোড ট্যাক্স বৃদ্ধি বাঞ্ছনীয় নয়। আইনশৃংখলা ও সামরিক বাহিনীর সকল যানবাহনের রেজিস্ট্রেশন বাধ্যতামূলক এবং রোড ট্যাক্স হবে বেসামরিক যানবাহনের সমতুল্য। কৃষি যানবাহন, ট্রাকটর রেজিস্ট্রেশন ও রোড ট্যাক্সের আওতায় আসবে। সকল সরকারি-বেসরকারি কোম্পানির প্রত্যেক যানবাহনের রেজিস্ট্রেশন ফি প্রতি পাঁচ বৎসরে এক লাখ টাকার অনধিক হওয়া বাঞ্ছনীয় হবে না; সমহারে বাৎসরিক রোড ট্যাক্স তবে বাড়বে। পরিবার দ্বিতীয় গাড়ি ব্যবহার করলে দ্বিতীয় মোটরযানের রেজিস্ট্রেশন ফি ও রোড ট্যাক্স হবে প্রথম গাড়ির দ্বিগুণ।
পরিবেশ উন্নয়নের লক্ষ্যে সপ্তাহের একদিন সকল প্রাইভেট গাড়ির চলাচল বন্ধ রাখার চেষ্টা করা উচিত। পাবলিক ট্রান্সপোর্ট ব্যবহারে জনগণকে উৎসাহিত করতে হবে। ছাত্ররা অর্ধেক ভাড়ায় ও মাসিক পাশে (Pass) এবং বয়োবৃদ্ধরা পাবলিক ট্রান্সপোর্ট ব্যবহারের সুবিধা পাবেন বিনা ভাড়ায়- দুপুর ১টা থেকে বিকেল তিনটা অবধি। নগরপিতারা পাবলিক ট্রান্সপোর্ট পরিচালনার দায়িত্ব নেবেন, প্রত্যেক ট্রান্সপোর্ট মালিক তার গাড়ি নগর পুলে যুক্ত করবেন, তার দায়িত্ব শেষ। সমান পরিমাণ লাভ পাবেন, তাদের বিনিয়োগ আয়করমুক্ত।
নারী ড্রাইভার হবে নারী নির্যাতন রোধের প্রধান প্রতিষেধক। অহেতুক প্রতিযোগিতা না থাকায় নিরাপদ সড়ক ব্যবস্থাপনা সহজ হবে। পাবলিক ট্রান্সপোর্ট চলবে সকাল ৬টা থেকে সারা রাত্রি; তবে রাতের ফ্রিকোয়েন্সি প্রতি ঘণ্টায় একবার, কিন্তু দিনের বেলায় প্রতি পনের মিনিট পরপর। এককালীন রেজিস্ট্রেশন ও প্রতি বছরের রোড ট্যাক্স বাবদ সরকারের আয় বাড়বে প্রায় ৩০ হাজার কোটি টাকা।
প্রাচুর্যে বসবাসের জন্য তো একটা ন্যূনতম মূল্য দিতে হবে। আটিকুলেটেড লরি, ট্রাক, বাস ড্রাইভারদের ক্রমাগত উচ্চতর ট্রেনিং ব্যবহার, নারীদের প্রফেশনাল ডাইভিং প্রশিক্ষণে ব্যয় রাস্তায় দুর্ঘটনা কমাবে। ট্রান্সপোর্টে যৌন নিপীড়ন হ্রাস পাবে। প্রশিক্ষণ ব্যয় বৎসরে এক হাজার কোটি টাকার অনধিক; কিন্তু প্রশিক্ষণ আয় বৎসরে পাঁচ হাজার কোটি টাকা হওয়া সম্ভব।
নারীদের বিদেশে ডাইভিং কর্মসংস্থান সম্ভব হবে। বিশেষত মুসলিম দেশসমূহে অতিরিক্ত আকর্ষণ। স্মরণযোগ্য গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র ১৯৮৫ সনে প্রথম নারী ডাইভিং শিক্ষা কার্যক্রম শুরু করেছিল। সালেহা বাংলাদেশের প্রথম প্রফেশনাল নারী ড্রাইভার, তার মেয়ে ম্যাজিস্ট্রেট স্ত্রী, নিজে ইউনিসেফ ড্রাইভার; আমার চেয়ে বেশি আয় করেন। অপর নারী ড্রাইভার রেখা আখতার সাবেক বিশ্বব্যাংক প্রধান ক্রিশিয়ান ওয়ালিসের ড্রাইভার ও সহকর্মী; ইংরেজি শিখেছিলেন গণ বিশ্ববিদ্যালয়ে মাত্র তিন মাসে; অপূর্ব প্রতিভা দরিদ্রকন্যার। কেবল প্রয়োজন প্রশিক্ষণের জন্য দ্বার খুলে দেবার।
(ঙ) কোর্ট ফি বৃদ্ধি কোর্টে নৈরাজ্য কমাবে: ন্যূনতম কোর্ট ফি উচিত হবে ৫ হাজার টাকা। তিন বারের অতিরিক্ত প্রতিবার সময় প্রার্থনার জন্য বাধ্যতামূলক ফি হবে ৫ হাজার টাকা; শাস্তিমূলক কোর্ট ফি জমা দেবার পর নতুন তারিখ পাবেন।এক বৎসরের মধ্যে সমস্যার নিষ্পত্তি না হলে প্রতিবার ১০ হাজার টাকা কোর্ট ফি জমা দিতে হবে। সরকার পাবেন ৫০% এবং প্রতিপক্ষ পাবেন ৫০%। এতে অনাকাঙ্ক্ষিত মামলা কমবে।
ফৌজদারী মানহানী মামলার ন্যূনতম কোর্ট ফি হবে ২০ হাজার টাকা। সিভিল মানহানি মামলার কোর্ট ফি হবে দাবী অনুসারে- যত বেশি ক্ষতিপূরণ দাবী করবেন, তত বেশি কোর্ট ফি জমা দিতে হবে। তবে ৫০ হাজার টাকার কম দাবি চলবে না; অগ্রীম কোর্ট ফি জমা না দিলে পুলিশ মামলা লিপিবদ্ধ করবে না। অভিযোগকারী হারলে সব টাকা হারাবেন। ঠুনকো মান-অভিমানের অবকাশ নেই। অযথা হয়রানি বন্ধ হওয়া প্রয়োজন। কেবলমাত্র মানহানি মামলার কোর্ট ফি জমা দেবার পর থানা মামলা লিপিবদ্ধ করবে, তৎপূর্বে নয়।
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের অপব্যবহার বন্ধ করা অত্যাবশ্যক। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় হারলে মামলাকারী অভিযুক্ত ব্যক্তিকে ন্যূনতম এক লাখ টাকা ক্ষতিপুরণ দিতে ও ক্ষমা চাইতে বাধ্য থাকবেন। ক্ষতিপূরণের ৫০% পাবেন কোর্ট এবং অভিযুক্ত ব্যক্তি পাবেন ৫০%। রাজনীতিবিদদের মধ্যে হাস্যরস কাম্য।
হাইকোর্টের বিভিন্ন ছুটি হ্রাস মামলার জট কমানোতে সহায়ক হবে। সুপ্রিম কোর্টে পাঁচটি স্থায়ী বেঞ্চ সৃষ্টি সময়ের দাবি- (১) ক্রিমিনাল, (২) সিভিল, (৩) শ্রমিক অধিকার ও কোম্পনী বিষয়ক, (৪) সংবিধান ও মৌলিক অধিকার এবং (৫) নারী নির্যাতন নিবারণ, নারী অধিকার ও পারিবারিক সমস্যা নিরসন। ন্যূনতম ২-৩ জন স্থায়ী বিচারপতি একত্রে বেঞ্চ পরিচালনা করবেন। প্রধান বিচারপতি সরকারি হস্তক্ষেপে স্থায়ী বেঞ্চের বিচারপতি বদলাতে পারবেন না।
বিভিন্ন (রিভিউ) মামলায় প্রত্যেক বেঞ্চের প্রধানরা অংশ নেবেন কমপক্ষে বছরে ১২ বার। সুপ্রিম কোর্টে ন্যূনতম ২৭ জন সিনিয়র বিচারপতির নিয়োগ হবে যুক্তিসঙ্গত পদক্ষেপ। হাইকোর্টের জন্য ২০২০-২১ বাজেটে ন্যূনতম ১০০০ কোটি বরাদ্দ প্রয়োজন। ২২২ কোটি নয়, যা অত্যন্ত অপ্রতুল।
সুপ্রীম কোর্ট ও তার ৫টি স্থায়ী বেঞ্চের অবস্থান হবে কেন্দ্রীয় রাজধানী ঢাকায় এবং ৬৪ হাইকোর্ট বসবে স্ব স্ব জেলা স্টেটে। দ্রুত ন্যয়বিচার নিশ্চিতকরণই লক্ষ্য।
(চ) কয়েকটি শুল্ক বৈষম্য ও ছাপার ভূত: স্বাস্থ্যের জন্য অপ্রয়োজনীয় বা ক্ষতিকর সকল প্রকার মিনারেল ওয়াটার, বিয়ার, ভরমুথ, স্কচ, স্পিরিট, ইথাইল এলকোহল, এক্সটাক্ট, এসেন্স, চিনি, লবণ, চুরুট, রিকনসটি উটেড তামাক, টেস্টিং সল্টস, (মনোসোডিয়াম গ্লুটামেট), রোস্টেড কফি, নন এলকোহলিক এনার্জি ডিংকসের শুল্ক বাড়িয়ে ২৫% থেকে ১০০% এ উন্নীত করা হবে যৌক্তিক কাজ। এতে রাষ্ট্রের আয় বৃদ্ধি হবে এবং নাগরিকদের স্বাস্থ্য উন্নতি হবে, স্থূলতা (Obesity) কমবে, উচ্চরক্তচাপ ও বহুমূত্র সম্ভাবনাও কমবে।
ওষুধের কাঁচামাল আমদানীর উপর কয়েক ধরনের শুল্কহার আছে। এন্টিবায়োটিকের জন্য দুটো- দর সকল পেনিসিলিন, স্ট্রেপটোমাইসিন, টেট্রাসাইক্লিন ও ক্লোরামফেনিকল ০%, এজিত্রিমাইসিন ও ইরিত্রোমাইসিনে ১৫% অযৌক্তিক। সকল এন্টিবায়োটিকের জন্য একটি শুল্ক দর থাকা বাঞ্ছনীয়, যাতে কাস্টমস হাউসে দুর্নীতির দরাদরি না হয়।
সকল ঘুমের ওষুধ, ভিটামিনস, ক্যানসার চিকিৎসার ওষুধ এন্টিম্যালেরিয়া, এন্টি যক্ষা, এন্টিকুষ্ট, হৃদরোগ নিবারক, এন্টিহেপাটিক কেপালোপেথিক, কিডনি ডায়ালাইসিস সলিউশন, পরিবার পরিকল্পনার ওষুধ ও দ্রব্যাদি, এন্টিসেরা ও ব্লাড ফ্রাকসন, হেপাটাইটিস-সি-এর ওষুধ, থালাসোমিয়ায় ওষুধ, মানুষ ও প্রাণীর ভ্যাকসিন, ম্যালেরিয়া ও ডেঙ্গু নির্ণয় কিট প্রভৃতির আমদানী শুল্ক ০%; তবে কুইনাইন, কেফিন, ইফিড্রিন, কেটামিন, বিভিন আবেদনকারী এনাসথেটিকস, মাদকাসক্তি (Narcotics), আরগোমেট্রিন প্রভৃতির আমদানী শুল্ক রয়েছে ৫%- যা ২৫% হওয়া উচিত।
সকল ঘুমের ওষুধের শুল্ক ০%-এর পরিবর্তে ২৫% হওয়া বাঞ্ছনীয় স্বাস্থ্য রক্ষার স্বার্থে। ডায়াগনস্টিক রিএজেন্টস, ব্লাডগ্রুপ রিএজেন্টস এন্টিসেরা, জীবাণুমুক্ত স্টেরাইল গজ, সুচার, এডহেসিভ ড্রেসিং-এর একই দর হওয়া উচিত- ৫% বা ১০%। ভিন্ন ভিন্ন দর ভিন্ন প্রক্রিয়ায় হয়রানি ও দুর্নীতি সৃষ্টি করে।
ডেন্টাল ক্লিনিকের বেলায়ও আমার মতে, দুটো দরই যথেষ্ট ০% ও ১০%। স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর সকল প্রকার এনার্জি ড্রিংকসের জন্য শুল্ক ১০০% বাঞ্ছনীয়। অন্য কয়েকটি অসঙ্গতি ইসিজি, আলট্রাসনিক যন্ত্রপতির ট্যাক্স ১%; কিন্তু রোগী মনিটরের শুল্ক ৫%। খালি প্রিফিল্ড ইনজেকশন শুল্ক, ইউভি কেনুলা, ফিডিং টিউব, ফিষ্টুলা নিউল, ড্রেনেজ ব্যাগ, স্ক্যালপ ভেইন, সাকসন ক্যাথেটারে ১০% শুল্ক; কিন্তু ইনসুলিন কার্টিজে শুল্ক ০%। উভয় ক্ষেত্রে ০% বা ৫% দরে শুল্ক স্থির করা যৌক্তিক কাজ হবে; হিয়ারিং এইডস ও পেসমেকারস (Pace Makers), হার্ট ভালব মেডিসিন ছাড়া বা মেডিসিন যুক্ত করোনারি স্টেন্টের (Stent) শুল্ক ০%। কিন্তু স্টেন্ট চার্জ এখন খুব বেশি, ২৫ হাজার থেকে দেড় লাখ টাকা।
দুর্নীতির খাঁচার মুখের প্রহরী দুর্নীতির জন্য দায়ী কি চিকিৎসক, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ না স্টেন্ট সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানসমূহ? সকল মেডিকেল যন্ত্রপতির শুল্ক করে ১% সীমিত করলে আপত্তির কারণ থাকবে না। ইনফিউশান ২৫% ইসিজি পেপারে ১০% ভুল সিদ্ধান্ত। একই হার যুক্তিসঙ্গত। দেশে কাঁচামাল উৎপাদিত হলে আমদানি পুরো বন্ধ, রপ্তানির নামেও নয়; রপ্তানির জন্য ন্যূনতম আমদানি শুল্ক ২৫% হওয়া বাঞ্ছনীয়। সকল মেডিকেল যন্ত্রপাতির ট্যাক্স ১% সীমিত থাকবে।
রেফারেল ও গ্রাজুয়েটের স্টাডিজের বই ০% শুল্ক; অন্যদের ৫%-এ সীমিত করুন। বিদেশি ক্যালেন্ডার ও আকর্ষণীয় অভিনন্দন কার্ডের শুল্ক ২৫%-এর পরিবর্তে ১০০% ধার্য করুন। বিলাসিতার একটা মূল্য তো দিতে হবে।
এয়ারক্র্যাফটস, অ্যারোপ্লেন ০% শুল্ক; কিন্তু বাস, ট্রাক, ট্যাক্সি, ট্যাঙ্ক, আরমারড ভেহিকলস, এয়ার কমব্যাট সিমুলেটরস ৫% শুল্ক; বেলুন গ্লাইডারসে ১০%। সেইলবোট, ইয়াটে ২৫% শুল্ক যথেষ্ট নয়, ১০০% হওয়া বাঞ্ছনীয়। মোটর সাইকেলে ২৫% শুল্ক যুক্তিসঙ্গত।
আমদানি শুল্কের কারণে ওষুধের মূল্য বাড়ে না; বাড়ে ওষুধ কোম্পানির অতিরিক্ত লোভ-লালসা ও প্রতারণা- অভ্যাসের দরুন এবং সরকারের সাথে অনৈতিক বন্ধুত্বের কারণে। ১৯৮২ সনে জাতীয় ওষুধ নীতির মূল্যনির্ধারণ নীতিমালা যথাযথ ভবে প্রয়োগ না করলে ওষুধের খুচরা মূল্য কমবে না। ক্রমাগত দাম বাড়াবে ওষুধ প্রস্তুত কোম্পানিরা; সঙ্গে বাড়বে ভেজাল (Counterfeit) ও নিম্নমানের (Substandard)) ওষুধের ব্যাপক সরবরাহ; যার ভারে ও ভিড়ে সঠিক গুণের (Standard)) ওষুধ চাপা পড়ে যায়।
অর্থমন্ত্রীর বাজেট বক্তৃতার ১১৬ ও ১১৯ পৃষ্ঠায় ২০২০-২১ বরাদ্দে কিছু ভিন্নতা ছাপা হয়েছে। ছাপার ভূত ভর করেছে।
(৮) উপসংহার: শেখ মুজিবের স্বপ্নের বাস্তবায়ন এবং করোনার সাথে যুদ্ধ ব্যয়
অনতি বিলম্বে করণীয় বিষয়সমূহ ও প্রয়োজনীয় বিশেষ বরাদ্দ:
(১) গভর্নর নিয়োগ ও সংবিধান সংস্কার: ৬৪ জেলা স্টেট কমিশন ও গর্ভনর নিয়োগ এবং ছয় মাসের মধ্যে সংবিধান সংশোধন করে শেখ মুজিবের স্বপ্নের বাস্তবায়ন শুরু করুন। প্রয়োজনীয় বিশেষ বরাদ্ধ ৮০ হাজার কোটি টাকা।
(২) খাদ্য নিরাপত্তা: ২ কোটি দরিদ্র ও নিম্নবিত্ত পরিবারকে ৬ মাস ফ্রি মাসিক খাদ্য রেশন সুবিধা দিন যাতে প্রতি পরিবারের জন্য ব্যয় হবে ২০০০ টাকা, স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিতকরণে ২০০ টাকা অনধিক এবং শিশু, বয়োবৃদ্ধ ও প্রসূতির ডিম, দুধ খাওয়ার জন্য ৫০০ টাকা ক্যাশ ইনসেনটিভ, এনজিও সম্পৃক্ত করতে হবে। প্রত্যেক বাড়ির সবজি বাগান সৃষ্টিতে সহযোগিতা প্রদান। প্রয়োজনীয় বিশেষ বরাদ্দ ৩২ হাজার ৪০০ কোটি টাকা।
(৩) সঠিক নিবন্ধন দুর্নীতি থেকে উত্তরন গবেষণা ও তদারকি কাজের জন্য BIDS ও অন্যান্য গবেষণা প্রতিষ্ঠানসমূহকে দেয় অনুদান। প্রয়োজনীয় বিশেষ বরাদ্দ ২ হাজার কোটি টাকা।
(৪) কৃষিতে ব্যাপক বিনিয়োগ: ব্যাপক কর্মসংস্থান ও খাদ্য নিরাপত্তা সৃষ্টির পাশাপাশি রপ্তানিও সম্ভব। বেসরকারি খাতে কৃষি, মৎস্য, প্রাণী সম্পদ, ডেইরি ও পোলট্রির উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য সুদবিহীন ব্যাপক সরকারি বিনিয়োগ তদারকি করবে এনজিও’রা। সময়মতো ঋণ পৌঁছানোর জন্য BIDS ও অন্যান্য গবেষণা প্রতিষ্ঠান দায়িত্ব গ্রহণ করবে, তদারকি করবে, সঠিক চিত্র প্রকাশ করবে। প্রয়োজনীয় বিশেষ বরাদ্দ ৩০ হাজার কোটি টাকা।
এনজিও’রা ঋণদান কর্মসূচি ভালোভাবে পরিচালনার জন্য শস্য উৎপাদিত ও আহরনের ৬ মাস পর টাকা আদায় করে দেবার জন্য পাবে ২.৫%। কৃষকের ওপর কোনো সুদ বর্তাবে না। প্রয়োজনীয় বিশেষ বরাদ্দ দেড় হাজার কোটি টাকা।
(৫) তৃণমূল স্বাস্থ্যখাতে বিনিয়োগ আবশ্যক: (ক) করোনা প্রতিরোধের জন্য। ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রের নিরাপত্তা বেষ্টনি, চিকিৎসক ও অন্যদের বাসস্থান, ডরমিটরি, এবং ২০ শয্যার হাসপাতাল ও যন্ত্রপাতি সংগ্রহে ব্যয়; প্রয়োজনীয় বিশেষ বরাদ্দ ২৫ হাজার কোটি টাকা।
(খ) Corona Risk Allowance; প্রয়োজনীয় বিশেষ বরাদ্দ এক হাজার কোটি টাকা।
(গ) চিকিৎসকদের কর্মদক্ষতা বৃদ্ধির জন্য বিভিন্ন বিষয়ে ৩ মাস মেয়াদী সার্টিফিকেট কোর্স প্রবর্তন এবং অবস্থানের পর ন্যূনতম দুই বৎসর ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যান কেন্দ্রে সার্বক্ষণিকভাবে বিশেষ ভাতা পাবেন। প্রয়োজনীয় বিশেষ বরাদ্দ ১ হাজার কোটি টাকা।
(৬) ঢাকা শহরের ১০০টি ওয়ার্ডে জেনারেল প্রাকটিশনার্স ও রেফারেল পদ্ধতির প্রচলন। বরাদ্দ ২ হাজার কোটি টাকা।
(৭) সিএমএইচ, কারাগার হাসপাতাল, পুলিশ ও অন্যান্য আইনশৃংঙ্খলা বাহিনীর হাসপাতালের সংযুক্তিকরণ এবং সামরিক মেডিকেল কোরের (এএমসি) নিয়ন্ত্রণাধীনে আনা নতুন আধুনিক ব্যবস্থাপনার অংশ। প্রয়োজনীয় বিশেষ বরাদ্দ দুই হাজার কোটি টাকা।
(৮) প্রবাসী দুর্দশাগ্রস্ত পরিবারকে রক্ষার জন্য প্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রীর একত্রে মধ্যপ্রাচ্য, মালয়েশিয়া, সৌদি আরব ও আফ্রিকা পরিভ্রমণ প্রয়োজন এবং অভিবাসীদের আর্থিক সাহায্য প্রদান। প্রয়োজনীয় বিশেষ বরাদ্দ পাঁচ হাজার কোটি টাকা।
(৯) বয়োবৃদ্ধদের চিকিৎসাসেবা এবং স্কুল স্বাস্থ্য কার্যক্রম। প্রয়োজনীয় বিশেষ বরাদ্দ পাঁচ হাজার কোটি টাকা।
(১০) যৌন নিপীড়ন নিবারনে ও যানবাহনে নারীর নিরাপত্তা প্রদানের জন্য ভিআইপি ডিউটি থেকে অব্যাহতিপ্রাপ্ত এলিট পুলিশ ও সামরিক সদস্যদের নতুন দায়িত্ব দিন পথে ঘাটে, যানবাহনে, হাটে বাজারে নারীদের নিরাপত্তা প্রদান ও যৌন নিপীড়ন নিবারন, নারী নির্যাতন ও যৌন নিপীড়ন অবসানের ভূমিকা রাখার জন্য মাদ্রাসা, মসজিদ ও অন্যান্য শিক্ষকদের মানবিক উন্নয়ন প্রকল্প নিন, শহরে গ্রামে শত শত পথ নাটক পরিচালিত হলে নারীর অধিকার ও মর্যাদা প্রতিষ্ঠা সহজ হবে। নারী নির্যাতিত হলে রাষ্ট্র ও জাতির মর্যাদা হয় না। যৌন নিপীড়নের চেয়ে বড় কোনো ন্যাক্কারজরক ঘটনা নেই। প্রয়োজনীয় বিশেষ বরাদ্দ ৫ হাজার কোটি টাকা।
(১১) নিরাপদ সড়ক আন্দোলনে বিশেষ অনুদান। প্রয়োজনীয় বিশেষ বরাদ্দ ১ হাজার কোটি টাকা।
সর্বমোট: ১,৯২,৯০০ (এক লাখ বিরানব্বই নয় শত হাজার) কোটি টাকা
২০২০-২১ বাজেটের এক-তৃতীয়াংশ দাবি বৃহত্তর জনগোষ্ঠির অন্যায় আবদার নয়। ন্যায্য অধিকার আদায়ের অংশ।
বৃহত্তর জনগোষ্ঠীর উন্নয়নই শেখ মুজিবের স্বপ্নের বাস্তবায়ন এবং তা হবে তার জন্মশতবার্ষিকীতে শ্রেষ্ঠ শ্রদ্ধার্ঘ। জয় হোক জনতার।
[ঈষৎ সক্ষেপিত]
*তথ্যসূত্র : ১) বাজেট বক্তৃতা ২০২০-২১ অর্থনৈতিক উত্তর
*লেখক: ট্রাস্ট্রি, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র
সূত্র : দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড