সুন্দরী হতে কেউ ব্যবহার করে লতা-পাতা, কেউবা ফায়ার থেরাপি
পদ্মাটাইমস ডেস্ক : পুরুষদের তুলনায় নারীরা রূপচর্চায় বেশি সচেতন। কেমিকেলযুক্ত পণ্য থেকে শুরু করে প্রাকৃতিক উপাদান। কোনো কিছুই তাদের রূপচর্চার তালিকা থেকে বাদ পড়ে না। শুধু যে রং ফর্সা করতেই এগুলো ব্যবহার করেন, তা কিন্তু নয়। ত্বক ভালো রাখতেই মূলত এগুলো ব্যবহার করা হয়।
তবে একেক দেশের নারীরা একেকভাবে তাদের রূপের চর্চা করে থাকেন। সব দেশেরই রয়েছে নিজস্বতা। সে দেশের নারীরা তাদের দাদি নানি এবং পূর্বসূরিদের কাজ থেকে শিখেছেন এসব উপায়। চলুন জেনে নেই কয়েকটি দেশের নারীদের সৌন্দর্যচর্চার গোপন রহস্য-
ভিয়েতনাম
ভিয়েতনামের হো চি মিন সিটির প্রায় প্রত্যেকটি পার্লারে মুখের বলিরেখা দূর করতে এই ‘ফায়ার থেরাপি’ ব্যবহার করা হয়। রূপচর্চার ক্ষেত্রে কীভাবে প্রয়োগ করা হয় এই ‘ফায়ার থেরাপি’ প্রথমে অ্যালকোহলে ভেজানো তোয়ালে দিয়ে মুখ ঢেকে দেয়া হয়। তারপর ওই তোয়ালেতে আগুন ধরিয়ে দেয়া হয়। ৩০ সেকেন্ড থেকে বড়জোড় ১ মিনিট পর এর উপর অন্য একটি ভারি তোয়ালে চাপা দিয়ে আগুন নিভিয়ে ফেলা হয়।
ভিয়েতনামের থেরাপিস্টদের দাবি, এই থেরাপির সাহায্যে মুখের বলিরেখা যেমন দূর হয়, তেমনই ত্বক হয় উজ্জ্বল, যৌবনদীপ্ত। শুধু রূপচর্চার ক্ষেত্রেই নয়, পেশির ব্যথা, মাথা ব্যথা, অনিদ্রার মতো একাধিক সমস্যা দূর করা যায় এই ‘ফায়ার থেরাপি’র সাহায্যে। রীতিমতো এটি জনপ্রিয় একটি রূপচর্চার ধরণ ভিয়েতনামে। লাইসেন্স নিয়েই রমরমিয়ে চলছে ‘ফায়ার থেরাপি’।
উগান্ডা
উগান্ডার নারীদের রয়েছে রূপচর্চার নিজস্ব কিছু পন্থা। তারা রূপচর্চা করতে বেশি ব্যবহার করে প্রাকৃতিক উপাদান। তবে উগান্ডার রাজধানী কাম্পালার একটি বিউটি পার্লারে চলছে ত্বক পরিচর্যার কাজ। নিজেদের তৈরি এক ধরনের ক্রিম দিয়ে ব্রণ দূর করার চেষ্টা করছেন তারা।
সম্পূর্ণ দেশীয় পদ্ধতিতে তৈরি এক ধরণের ক্রিম দিয়ে ফেসিয়াল করছেন তারা। যেগুলো তৈরি করা হয় লতা-পাতা দিয়ে। গায়ের রং পাল্টাতে নয় বরং ব্রণ সহ ত্বকের সমস্যা দূর করতে তারা দেশিয় পদ্ধতি ব্যবহার করেন।
অস্ট্রেলিয়া
অস্ট্রেলীয় নারীরা রূপচর্চার জন্য ব্যাপক হারে পেঁপে ব্যবহার করেন। কেননা পেঁপেতে ‘পাপাইন’ নামে একটি এনজাইম আছে। যা ত্বকের কালো দাগ দূর করে ত্বককে উজ্জ্বল ও প্রাণবন্ত করে তোলে। তাছাড়া এটি অ্যাকজিমা, পোড়া দাগ, ঠোঁটের খসখসে ভাব সারাতেও সাহায্য করে।
ফ্রান্স
নখের যেকোনো দাগ তাদের একদম সহ্যের বাইরে। খাবার পর কিংবা কাজের পর নখে কোনো দাগ লেগে থাকলে দেখতেও ভালো লাগে না। এজন্য ফ্রান্সের নারীরা গরম পানি এবং লেবুর রসের মিশ্রণে হাত পরিষ্কার করে নেন। এছাড়া গোসলের পানিতে তিন কাপ দুধ যোগ করে গোসল করাটা তাদের একান্ত শখের ভেতর একটি।
রাশিয়া
রুশ নারীদের ফেসপ্যাক পরম বন্ধু। তারা সময় পেলেই ফেসপ্যাক বানিয়ে মুখে লাগান। ওটমিল, জলপাই তেল ও লেবুর রস তাদের পছন্দনীয় ফেসপ্যাকের অন্যতম। এটি ব্যবহারে ত্বক উজ্জ্বল ও সুন্দর হয়ে ওঠে।
দক্ষিণ আমেরিকা
অ্যাভোকাডো শুধু সুস্বাদু একটি ফলই নয়। এটা ত্বক ও চুলের সৌন্দর্য বৃদ্ধিতেও বহুল ব্যবহৃত। ত্বককে নরম রাখতে অ্যাভোকাডোর জুড়ি নেই। আপনি চাইলে শুধু অ্যাভোকাডো পুরো মুখের ত্বকে ব্যবহার করতে পারেন কিংবা দুধের সঙ্গে মিশিয়েও লাগাতে পারেন। চুলের মাস্ক হিসেবে অ্যাভোকাডো, কলা এবং জলপাই একটি অনন্য মিশ্রণ।
গ্রিস
জলপাই তেল গ্রিসের রমণীদের রূপচর্চায় দীর্ঘদিন ধরে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। ত্বক, ঠোঁট ও চুল সুন্দর রাখতে এর জুড়ি নেই। এটি সমগ্র শরীরকে নরম ও মোলায়েম রাখে এবং চুল ঝরঝরে করে তোলে।
স্পেন
স্প্যানিশ নারীরা তাদের গভীর ডার্ক সার্কেল সারিয়ে তুলতে ব্যাপকভাবে আলু ব্যবহার করেন। এক স্লাইস করে আলুর খোসা ছাড়িয়ে চোখের নিচে দশ মিনিটের জন্য রেখে দিন। অতিরিক্ত ডার্ক সার্কেল হলে তা সম্পূর্ণভাবে দূর হতে একটু সময় লাগবে। তবুও ধৈর্য ধরে প্রতিদিন ব্যবহার করুন। স্পেনের নারীদের মতো সুন্দরী হয়ে উঠতে পারেন আপনিও।