১০ জানুয়ারী
ওরা দেখেছে বাঙ্গালীর কালবৈশাখির
ঝড়ের ছোবল-
ওদের কাছে থেকে ছিনিয়েছে ভূমি
রক্তে ভেজানো এদেশ।
সেই হায়েনার কারাগারে বন্দী
বাঙ্গালীর নয়নমনি-
প্রহসন ও মৃত্যুর ক্রাউন-ডাউন পেরিয়ে
সেই নেতা স্বদেশ ভূমিতে ফিরছে।
এই সেই নেতা মুজিব। জীবনের
বন্দীদশায় বলেন শতবার-
ফাঁসির মঞ্চে দাঁড়িয়েও বীরের
কন্ঠ- আমি বাঙ্গালী, বাংলা
আমার দেশ, বাংলাকে ভালবাসি।
সদ্য প্রসূত রক্তস্নাত স্বাধীন
সার্বভৌম রাষ্ট্র বাংলাদেশ-
বিজয়ের পূর্ণস্বাদ পেতে রেসকোর্স
ময়দানে জনতার ঢোল।
তবুও অপূর্ণতা, ঘাটতি মহানায়কের,
কখন আসবে নেতা। অবিসংবাদিত
সেই নেতার প্রত্যাবর্তন-
কেন এত দেরী? আকাশে বাধা নেই,
নেই মাটিতে-অনেক আগেই বঙ্গ
ত্যাগিছে খুনি, হায়েনার দল।
অপেক্ষার প্রহর ধীরে বইছে সেদিন,
মুক্ত স্বদেশ ভূমি, স্বতঃষ্ফূর্ত উপস্থিতি-
সেই সকাল থেকে ময়দান লোকারন্য
জনসমুদ্রের ঢল।
১০ জানুয়ারী এদেশের এক অস্তিত্ব-
স্মরনীয় বরেণ্য ইতিহাস-
সেদিন চৈত্রের খরতাপ নেই-
তবে নিঃশ্বাস আর বিশ্বাসের
ভরপুর, তৃষিত তৃপ্ত হৃদয়।
মুক্তিযুদ্ধের, স্বাধীনতার ঐশ্বরীক
জীবন্ত প্রতিকের আগমন-
তাইতো স্বাধীনচেতা মানুষের
মহা সমুদ্র, তখনও অপেক্ষা-
নেতা আসছে, কি শুনাবে আমাদের।
প্রতিক্ষার পর্ব পিছে ফেলে
অবশেষে নেতা আসীন-
৭২’র ১০ জানুযারী, সেদিনের
মুক্ত অপরাহ্ণ-বিকাল, অগণিত জনতা,
মূহুর্মূহু হর্ষধ্বনি, জয়বাংলার স্লোগান।
লাখ লাখ জনতার উষ্ণ
সংবর্ধনায় সিক্ত-
আজকে স্বাধীনে ঝরা মুক্তিকামী
শহীদের প্রতিনিধি-
ন্যায়-আদর্শ-বিজয় ও বাঙ্গালী
জাতি সত্তার প্রতিক, স্মরিছে সশ্রদ্ধ
পিছে নাহি দেখি, দেশ গড়ি ঐক্যবদ্ধ।
লেখক- মাহবুব দুলাল, সাংবাদিক ও কবি