হাওড়ে ধান উৎপাদনে রেকর্ড, জমি থেকেই বিক্রি

প্রকাশিত: এপ্রিল ১০, ২০২৩; সময়: ১০:১৮ পূর্বাহ্ণ |
হাওড়ে ধান উৎপাদনে রেকর্ড, জমি থেকেই বিক্রি

পদ্মাটাইমস ডেস্ক :  সুনামগঞ্জে বিস্তীর্ণ হাওড়জুড়ে দোল খাচ্ছে পাকা ধান। ধানের ভারে নুয়ে আছে গাছগুলো। আর পাকা ধান কাটতে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকরা। তারা হাসিমুখে কম্বাইন্ড হারভেস্টার দিয়ে (আধুনিক মেশিন) কেটে ঘরে তুলছেন জমির পাকা ধান। আবার এমন ধান কেউ কেউ জমি থেকেই ৮৫০ টাকা মণ দরে বিক্রি করছেন।

এ বছর লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে রেকর্ড পরিমাণ ধান উৎপাদনের আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, চন্দ্র সোনারথাল, নলুয়া, চাপাতি, রুইবিল ও মাটিয়াসহ বিভিন্ন হাওড়ের আগাম জাতের ধান কাটা-মাড়াই চলছে। এসব হাওড়ে শ্রমিকরা ধানকাটার কাজ করছেন। কম্বাইন্ড হারভেস্টারে স্বল্প সময়ে প্রক্রিয়াজাত হয়ে কৃষকের বাড়ি পৌঁছে যাচ্ছে ধান। চন্দ্র সোনারথাল হাওড়ের কৃষকরা ধান কাটার পর নৌকায় মাড়াই খলায় নিয়ে যান। সেখানে ধান মাড়াই ও শুকানোর কাজ করছেন। পরিবারের নারী-পুরুষ সবাই ধান প্রক্রিয়াজাতকরণে ব্যস্ত। আর কম্বাইন্ড হারভেস্টার দিয়ে কাটা ধান জমি থেকেই ৮৫০ টাকা মণ দরে বিক্রি করছেন কৃষক।

এদিকে, ধর্মপাশা উপজেলার ধারাম, গনিয়াকান্দা রাজাপুর, শয়তানখালী, দয়ালপুর দৌলতপুর গ্রামের কৃষকদের দম ফেলার সময় নেই।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর জানায়, চলতি বছর দুই লাখ ২২ হাজার ৭৪৫ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদ করা হয়েছে। এর মধ্যে হাইব্রিড ৬০ হাজার ৮৬০ হেক্টর, উচ্চ ফলনশীল এক লাখ ৬০ হাজার ৫৬৫ হেক্টর ও স্থানীয় এক হাজার ৩৭০ হেক্টর জমিতে ধান চাষ হয়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড হাওড়ের ফসল আগাম বন্যার হাত থেকে রক্ষার জন্য ২০৩ কোটি টাকা ব্যয়ে ৭৪৫ কিলোমিটার বাঁধ নির্মাণ করেছে।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর আরও জানায়, এ পর্যন্ত ২০০ হেক্টর জমির ধান কাটা হয়েছে। এ বছর সাড়ে ১৩ লাখ মেট্রিক টন ধান উৎপাদনের আশা করছে কৃষি বিভাগ।

ধর্মপাশা উপজেলার সুখাইড় রাজাপুর দক্ষিণ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মোকারম হোসেন বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্যোগে হাওড়ের ফসল কাটা এবং মাড়াই সবই হয় মেশিনে। এজন্য কৃষকরা জমি থেকে ধান বিক্রি করতে পারেন। দৌলতপুর গ্রামের কৃষক আগে একদিনে শ্রমিক দিয়ে ৩/৪ বিঘা জমির ধান কাটাতেন। এখন কম্বাইন্ড হারভেস্টার দিয়ে দ্রুত ধান কাটা, মাড়া ও ঝাড়া দেয়া যায়। ধান সেদ্ধ আর শুকানোর কাজ বাদে সব কাজ মেশিনে করা যায়।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের পূর্বাঞ্চলের প্রধান প্রকৌশলী খুশিমোহন সরকার বলেন, ফসল রক্ষা বাঁধ সুরক্ষিত আছে। আগামী দশদিন পর্যন্ত তেমন বৃষ্টিপাত হবে না।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ শওকত ওসমান মজুমদার বলেন, বেশ কিছু হাওড়ে আগাম জাতের ধান কাটা হচ্ছে; ফলনও ভালো হয়েছে।

জেলা প্রশাসক দিদারে আলম মোহাম্মদ মাকসুদ চৌধুরী বলেন, দ্রুত হাওড়ের ধান কাটার জন্য সব ধরনের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। বাইরে থেকে শ্রমিক ও কম্বাইন্ড হারভেস্টার নিয়ে আসার ব্যবস্থা করা হয়েছে। বড় ধরনের প্রাকৃতিক বিপর্যয় না হলে কোনো রকম বাধা ছাড়া হাওড়ের ফসল কেটে ঘরে তোলা যাবে।

 

পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে