ভোটে হেরে সংগ্রাম চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা কেমালের
পদ্মাটাইমস ডেস্ক : টানা তৃতীয়বারের মতো তুরস্কের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছেন ২০ বছর ধরে তুরস্ক শাসন করে আসা রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোয়ান। বিরোধী প্রার্থী কেমাল কিলিচদারোগলুকে পরাজিত করে প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ রান-অফ নির্বাচনে জয় ছিনিয়ে নেন তিনি।
তবে গণতন্ত্রের জন্য নিজের সংগ্রাম চালিয়ে যাওয়ার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেছেন পরাজিত প্রার্থী কেমাল কিলিচদারোগলু।
একইসঙ্গে আগামীতে জনগণকে আরও আত্মবিশ্বাসী ও মাথা উঁচু করে দাঁড়ানোর আহ্বানও জানিয়েছেন তিনি। রোববার (২৮ মে) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে তুর্কি সংবাদমাধ্যম হুররিয়ত ডেইলি নিউজ।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নেশন অ্যালায়েন্সের প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী কেমাল কিলিচদারোগলু গণতন্ত্রের জন্য তার সংগ্রাম চালিয়ে যাওয়ার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেছেন এবং জনগণকে মাথা উঁচু করে দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন।
এরদোয়ানের কাছে রান-অফ নির্বাচনে পরাজয়ের পর রোববার গভীর রাতে দেওয়া এক বিবৃতিতে কিলিচদারোগলু এই মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, ‘নেশন অ্যালায়েন্স সকল ফ্রন্টে সংগ্রাম করেছে। আমরা এই সংগ্রাম অব্যাহত রাখব।’
বর্তমান প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোয়ানের কাছে নির্বাচনে পরাজয়ের কথা পরোক্ষভাবে স্বীকার করে কিলিচদারোগলু রোববারের এই ভোটকে তুরস্কের ইতিহাসের সর্বকালের সবচেয়ে পক্ষপাতদুষ্ট নির্বাচনগুলোর মধ্যে একটি বলে বর্ণনা করেছেন।
প্রেসিডেন্ট এরদোয়ানকে ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, ‘রাষ্ট্রের সকল কিছু সম্পূর্ণভাবে একজন ব্যক্তির কাছে বন্ধক রাখা হয়েছে।’
অবশ্য নেশন অ্যালায়েন্সকে যেসব ভোটার ভোট দিয়েছেন তাদের সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন কিলিচদারোগলু। পরাজিত এই প্রার্থী জোর দিয়ে বলেছেন, ২৫ মিলিয়নেরও বেশি মানুষ তাকে ভোট দিয়েছেন। অবশ্য বিজয়ী প্রার্থী এরদোয়ানের সঙ্গে তার ভোটের ব্যবধান ২০ লাখেরও বেশি।
কিলিচদারোগলুর দাবি, ‘মানুষের অধিকার লঙ্ঘিত হলে আমি কখনোই চুপ থাকতে পারিনি। লাখ লাখ উদ্বাস্তু এখানে আসার পর তুর্কি নাগরিকরা যে দ্বিতীয় শ্রেণীর নাগরিক হয়ে উঠেছে তা আমি কখনোই সহ্য করতে পারিনি। আমি এই বিষয়ে লড়াই করেছি এবং লড়াই চালিয়ে যাবো।’
তিনি বলেন, ‘দেশের জন্য সামনে যে কঠিন দিন অপেক্ষা করছে সেটি নিয়েই এখন আসলে আমি দুঃখ পাচ্ছি। তবে আমি আশ্বস্ত করতে পারি, তেমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হলে আমরাই আবার তাদের সামনে দাঁড়ানোর চেষ্টা করব।’
এর আগে রোববার সন্ধ্যায় তুরস্কের সুপ্রিম ইলেকশন কাউন্সিলের (ওয়াইএসকে) চেয়ারম্যান প্রেসিডেন্ট পদে এরদোয়ানের পুনর্নির্বাচিত হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
আঙ্কারায় সাংবাদিকদের সাথে কথা বলার সময় ওয়াইএসকে প্রধান আহমেত ইয়েনার বলেন, দ্বিতীয় রাউন্ডের ভোটে এরদোয়ান বিরোধী প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী কেমাল কিলিচদারোগলুকে হারিয়ে প্রেসিডেন্ট পদে জয়ী হয়েছেন।
রোববারের নির্বাচনে তুরস্কের ক্ষমতাসীন প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান ৫২ শতাংশেরও বেশি ভোট পেয়ে জয়ী হয়েছেন। অন্যদিকে প্রতিদ্বন্দ্বী কিলিচদারোগলু পেয়েছেন প্রায় ৪৮ শতাংশ ভোট। আর এই দুই প্রার্থীর মধ্যে ভোটের ব্যবধান ২০ লাখেরও বেশি।
৬৯ বছর বয়সী এরদোয়ান ২০০৩ সালে প্রাথমিকভাবে প্রধানমন্ত্রী হিসাবে তুরস্কের ক্ষমতায় এসেছিলেন।
সর্বশেষ এই নির্বাচনকে সামনে রেখে তার জাস্টিস অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট পার্টি (একে পার্টি) সরকারের উন্নয়ন কর্মকাণ্ড প্রসারিত করার প্রতিশ্রুতির পাশাপাশি আরও উন্নয়নের রূপরেখো সামনে এনেছিল।