বাগমারায় বাংলা ভাইয়ের আস্তানায় নির্মিত শহীদ মিনারের উদ্বোধন ১৫ আগস্ট

প্রকাশিত: আগস্ট ১৪, ২০২৩; সময়: ৪:৪৭ pm |
বাগমারায় বাংলা ভাইয়ের আস্তানায় নির্মিত শহীদ মিনারের উদ্বোধন ১৫ আগস্ট

নিজস্ব প্রতিবেদক, বাগমারা : এরই মধ্যে প্রস্তুত করা হয়েছে বাংলা ভাইয়ের আস্তানায় নিার্মিত শহীদ মিনার। ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবসে উদ্বোধন করা হবে সেই শহীদ মিনার। প্রধান অতিথি হিসেবে শহীদ মিনারের উদ্বোধন করবেন, রাজশাহী-৪ (বাগমারা) আসনের সংসদ সদস্য, সড়ক পরিবহণ ও সেতু মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ও বাগমারা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার এনামুল হক।

বাংলা ভাই এই নামের সাথে জড়িয়ে আছে হাজারো বঞ্চনা নিপীড়ন, নির্যাতন ও রক্তপাতের ইতিহাস। ২০০৪ সালে বাংলা বাহিনীর জুলুম নির্যাতনে বাগমারা সহ আশেপাশের এলাকায় অন্তত ২২ জন নিহত হয়। গুম হয় আরো শতাধিক এবং পুঙ্গত্ববরণ করেন আরো অর্ধশত। তৎকালীন বিএনপি-জামায়াতের মদতপুষ্ট হয়ে ওই বছর মার্চ-এপ্রিল বাগমারা সহ আশেপাশের এলাকায় তথাকথিত চরমপন্থী দমনের নামে তাণ্ডপ চালায় বাংলা ভাই বাহিনী। এই বাহিনীর প্রধান তাত্বিক গুরু শায়ক আব্দুর রহমান ও সেকেন্ড ইন কমাণ্ড সিদ্দিকুর রহমান ওরফে বাংলাভাই গঠন করেন। পরে তারা অন্য একটি বাহিনী গঠন করে তার নাম দেন জেএমবি। এই জেএমবি’র প্রথম ঘাটি বা আস্তানা স্থাপিত হয় বাগমারার হামিরকুৎসায়।

হামিরকুৎসা বাজার সংলগ্ন কুৎখাত রাজাকার রমজান কাঁয়ার বাড়িতে স্থাপতি হয় বাংলা ভাইয়ের ক্যাম্প। এই ক্যাম্পে বসেই বাংলা ভাই এলাকা দাঁপিয়ে বেড়াতেন। চালাতেন নির্যাতন। রমজান কাঁয়ার বাড়ি সংলগ্ন একটি আম বাগান ও হামিরকুৎসা হাইস্কুল মাঠে টর্চার সেল স্থাপন করে দিনরাত তারা নির্যাতন চালাতেন। সে সময় বাংলা ভাই এলাকার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে স্বউদ্যোগে নির্মিত শহীদ মিনারগুলো তাগুতি শাসন বলে ভেঙ্গে গুড়িয়ে দেন। সেই অবধি এলাকায় আর কোন শহীদ মিনার স্থাপতি হয়নি।

তবে এলাকার তরুণ প্রজন্ম বাংলা ভাইয়ের সেদিনের তাণ্ডবকে স্মরণ করে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে বাংলা ভাষার ইতিহাস তুলে ধরতে স্থানীয় এমপি’র নিকট একটি শহীদ মিনার নির্মাণের দাবী জানান। পরে বাংলা ভাইয়ের তাণ্ডব চালানো স্থানেই শদীদ মিনার নির্মাণের কার্যক্রম শুরু করেন ইঞ্জিনিয়ার এনামুল হক এমপির ছোট ভাই কেএন ইঞ্জিনিয়ারিং লিঃ এর পরিচালক মনিমুল হক। এরই মধ্যেই শেষ হয়েছে শহীদ মিনারের নির্মাণ কাজ। শহীদ মিনারটি নির্মাণে ব্যবহৃত হচ্ছে উন্নত টাইলস ও মার্বেল পাথর।

এদিকে শহীদ মিনারের নির্মাতা মনিমুল হক জানান, ১৫ আগস্ট জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এঁর শাহাদৎ বার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবসে শহীদ মিনার করা হবে। সেই সাথে শহীদ মিনারের পাশে নির্মিত হয়েছে একটি গোলচক্কর। এখানে ঢাকা সহ বিভিন্ন জেলার দূরত্ব মাইল ফলক লেখাটি পথচারীর দৃষ্টি আকর্ষণ করছে। যে মাঠে সাধারণ মানুষকে নির্যাতন করা হয়েছে সেই মাঠেই শহীদ মিনার নির্মিত হওয়ায় শিক্ষার্থী সহ এলাকাবাসীর অনেক খুশি। এর মাধ্যমে কলঙ্ক মোচন হবে। নতুন প্রজন্ম জানবে বাংলা ভাষার ইতিহাস। জাগ্রত হবে দেশপ্রেম।

  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে