খুলনায় কর্মবিরতিতে ইন্টার্নরা, বন্ধ ওষুধের দোকান
পদ্মাটাইমস ডেস্ক : খুলনা মেডিকেল কলেজ (খুমেক) হাসপাতালের ইন্টার্ন চিকিৎসকের সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনায় হাসপাতালের সামনের ওষুধের দোকান বন্ধ রেখেছেন ব্যবসায়ীরা। অন্যদিকে তিন দফা দাবি নিয়ে হাসপাতালের সামনে অবস্থান নিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। ফলে ভোগান্তিতে পড়েছেন রোগীরা। বুধবার সকাল ৮টা থেকে কর্মসূচি পালন করছেন ইন্টার্ন চিকিৎসকেরা।
সরেজমিনে হাসপাতালে গিয়ে দেখা গেছে, সকাল থেকে কর্মবিরতী পালন করছেন ইন্টার্ন চিকিৎসকেরা। চিকিৎসাসেবা পেলেও গতকাল মঙ্গলবার থেকে ওষুধের দোকান বন্ধ থাকায় দূর-দুরান্ত থেকে ওষুধ কিনে রোগীদের খাওয়াতে হচ্ছে। এতে করে অতিরিক্ত অর্থ এবং ভোগান্তিতে পড়ছেন রোগী ও স্বজনেরা।
মোল্লাহাট থেকে আসা মো. সেলিম নামে এক রোগীর স্বজন জানান, মঙ্গলবার রাতে তাঁর ভাইকে হাসপাতালে ভর্তি করিয়েছেন। হাসপাতালের সামনে দোকান বন্ধ থাকায় বয়রা থেকে ওষুধ কিনতে হয়েছে তাঁকে।
বটিয়াঘাটা থেকে স্ত্রীকে নিয়ে গত সোমবার রাতে হাসপাতালে ভর্তি করিয়েছেন মো. রব হোসেন। হাসপাতালের সামনে দোকান বন্ধ থাকায় তিনি হেরাজ মার্কেট থেকে ওষুধ কিনে আনেছেন। এ জন্য তাঁর টাকা বেশি খরচ হচ্ছে।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ কেমিস্ট অ্যান্ড ড্রাগিস্ট সমিতির কেন্দ্রীয় কমিটির পরিচালক ও খুলনা জেলা শাখার সদস্য মো. জিল্লুর রহমান জুয়েল বলেন, নিরাপত্তাহীনতা কারণেও ব্যবসায়ীরা দোকান খুলছে না। ব্যবসায়ীরা শঙ্কায় রয়েছে আবারও শিক্ষার্থীরা দোকানে হামলা চালাতে পারেন। এ ঘটনায় দোষী ওষুধ ব্যবসায়ীদের গ্রেপ্তারের দাবি জানাচ্ছি।
অন্যদিকে চিকিৎসকদের অবস্থান কর্মসূচিতে হাসপাতালের সেবায় কিছুটা বিঘ্ন ঘটলেও তেমন কোনো অসুবিধা হচ্ছে না বলে দাবি করেছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এবং রোগীর স্বজনেরা।
খুমেকে ভর্তি রোগী মো. আসলাম জানান, রাতে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন তিনি। ভর্তির পরপরই চিকিৎসকেরা দেখেছেন বলে জানান তিনি। অপরদিকে রাতে ভর্তি হয়ে চিকিৎসাসেবা পেয়েছেন বলে জানিয়েছেন জাহাঙ্গীর হোসেন নামে আরেক রোগী।
খুমেক হাসপাতালের পরিচালক মো. রবিউল ইসলাম বলেন, চিকিৎসা কার্যক্রম কোনো সমস্যা হচ্ছে না। চিকিৎসা সেবা স্বাভাবিক রয়েছে।
খুমেক হাসপাতাল ইন্টার্ন চিকিৎসক পরিষদের সভাপতি ডা. সাইফুল ইসলাম অন্তর বলেন, মেডিকেল শিক্ষার্থীদের ওপর হামলাকারীদের গ্রেপ্তারের দাবিতে সোমবার থেকে কর্মবিরতি ঘোষণা করা হয়েছে। তবে মঙ্গলবার জাতীয় শোক দিবসের কারণে কর্মসূচি কিছুটা শিথিল ছিল। আজ বুধবার সকাল থেকে কর্মসূচি পালন হচ্ছে।
গত সোমবার রাতে মেডিকেলের এক শিক্ষার্থী বিপ্লব মেডিসিন কর্নার নামে হাসপাতালের সামনে দোকানে ওষুধ কিনতে যান। ৭০ টাকার ওষুধ কিনে ১০ শতাংশ অর্থাৎ ৭ টাকা কমিশন কম না রাখায় শিক্ষার্থীর সঙ্গে ব্যবসায়ীর বাগ্বিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় উভয় পক্ষের মোট ১৫ থেকে ২০ জন বেশি আহত হয়েছেন। ঘটনার পর দোষী শিক্ষার্থীদের গ্রেপ্তার ও শাস্তির দাবিতে ওষুধ ব্যবসায়ীরা দোকান বন্ধ রেখেছেন।