কোরআন ছুঁয়ে কসম করা যাবে?
পদ্মাটাইমস ডেস্ক : কোরআন মুমিনদের জন্য হেদায়েতের বাণী। আল্লাহ তায়ালা বলেছেন, এটা ওই (মহান) কিতাব যাতে কোন সন্দেহ নেই, মুত্তাকীদের (ধর্ম-ভীরুদের) জন্য পথ নির্দেশ (হিদায়াত)। (সুরা বাকারা, আয়াত ২)
একজন মুমিনের জীবনের স্বার্থকতা হলো কোরআনের বিধি-বিধান অনুযায়ী নিজের জীবন পরিচালনা করা। এ বিষয়ে আল্লাহ তায়ালা বলেন, যারা বিশ্বাস করে আপনার (রাসুলের) প্রতি যা অবতীর্ণ করেছি এবং তোমার আগে যা অবতীর্ণ করেছি তার প্রতি এবং যারা পরকালের উপর দৃঢ় বিশ্বাস রাখে। উহারাই স্বীয় রবের প্রদর্শিত পথে অবস্থিত এবং তাহারাই মুক্তি পাবে।’ (সুরা বাকারা, আয়াত, ৩-৫)
প্রত্যেকের উচিত দুনিয়া ও আখেরাতের কল্যাণের জন্য কোরআন অনুযায়ী আমল করা। এর বাইরে অন্য কিছুতে বা ব্যক্তি স্বার্থে কোরআনকে ব্যবহার না করা। এরপরও অনেকে বিভিন্ন পরিস্থিতির কারণে কোরআন হাতে নিয়ে কসম করে থাকেন।
হাদিসে নিষেধাজ্ঞা :
এ বিষয়ে আলেমরা বলেন, কসম একমাত্র আল্লাহ তায়ালার নামেই করা যায়। আল্লাহ তায়ালার নাম ব্যতীত অন্য কোনো জিনিসের কসম করা নাজায়েয। এমনকি কোরআন শরীফের কসম করাও জায়েয নয়।
হাদিস শরিফে এসেছে,
عَنْ سَعْدِ بْنِ عُبَيْدَةَ قَالَ : سَمِعَ ابْنُ عُمَرَ رَجُلًا يَحْلِفُ : لَا وَالْكَعْبَةِ. فَقَالَ لَهُ ابْنُ عُمَرَ : إِنِّي سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ ﷺ يَقُولُ : مَنْ حَلَفَ بِغَيْرِ اللَّهِ فَقَدْ أَشْرَكَ
সা’দ ইবনু আবূ উবাইদাহ রহ. সূত্রে বর্ণিত, তিনি বলেন, আব্দুল্লাহ ইবন ওমর রা. এক ব্যক্তিকে এভাবে শপথ করতে শুনলেন, ‘না! এ কা’বার শপথ।’
তখন ইবন ওমর রা. তাকে বললেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি, যে ব্যক্তি আল্লাহ ছাড়া অন্য কিছুর নামে শপথ করে সে শিরক করলো। (আবু দাউদ ৩২৫১)
অপর হাদিসে এসেছে, সাহাল ইবনে মিনজাব থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন,
مَنْ حَلَفَ بِسُورَةٍ مِنَ الْقُرْآنِ لَقِيَ اللَّهَ بِعَدَدِ آيِهَا خَطَايَا
যে ব্যক্তি কোরআন শরিফের কোন একটি সূরার কসম করবে সে ওই সূরার প্রত্যেকটি আয়াতের বদলায় একটি করে গুনাহ নিয়ে আল্লাহর সাথে সাক্ষাত করবে। (মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা হাদীস ১২৩৬০)
কসম করে ফেললে করণীয় কী?
তবে নাজায়েয হলেও কোরআন মাজীদের কসম করলে কসম সংঘটিত হয়ে যায়। সুতরাং যে বিষয়ে এ কসম করা হয়; সে বিষয় না মেনে চললে কসম ভেঙ্গে যাবে। তখন এ কসমের জন্য কাফফারা আদায় করতে হবে।
আর কসমের কাফফারা হল, দশ জন মিসকীনকে দুই বেলা তৃপ্তি সহকারে খানা খাওয়ানো। অথবা প্রত্যেককে এক জোড়া কাপড় দেওয়া। আর তা সম্ভব না হলে এক টানা তিন দিন রোজা রাখা। (বাদায়েউস সানায়ে ৩/৬৩; আলবাহরুর রায়েক ৪/২৮৬; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ২/৫৩)