রাজশাহীর পদ্মায় ৫ বছরে ৫৭ প্রাণহানি
নিজস্ব প্রতিবেদক : গেল পাঁচ বছরে রাজশাহীর পদ্মা নদীতে খেয়া পারাপার, নৌকাডুবি কিংবা গোসল করতে নেমে মারা গেছেন অন্তত ৫৭ জন। নৌ-পুলিশ ও স্থানীয় প্রশাসনের তদারকির অভাবে ঘটছে একেরপর এক প্রাণহানি। বিনোদন কেন্দ্রে এসে লাশ হয়ে বাড়ি ফেরা রোধ করতে নিরাপত্তায় কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি নাগরবাসীর।
রাজশাহী জেলার প্রায় ১০০ কিলোমিটার পদ্মাপাড় জুড়ে বিশাল বিনোদন কেন্দ্র। পদ্মার বুক চিরে চলে প্রায় পাঁচশত ভ্রমণ নৌকা। নগরীতে তেমন কোনো পর্যটনকেন্দ্র নেই। ফলে পদ্মাপাড়ই এই নগরবাসীর প্রধান বিনোদনকেন্দ্র। তাই প্রতিদিনই নদীর পাড়ে বিভিন্ন বয়সী মানুষ বেড়াতে আসেন।
পদ্মাপাড়ে এসে ভ্রমণ নৌকায় মানুষ উপভোগ করছেন পদ্মার বিশালতা। পদ্মা ভ্রমণে গিয়ে বিভিন্ন সময় ঘটছে দুর্ঘটনা। এতে হচ্ছে প্রাণহানি। তবে কেন ঘটছে এমন দুর্ঘটনা, এ নিয়ে যাত্রী ও মাঝিরা দোষারোপ করছেন একে-অপরকে।
পদ্মায় খেয়া পারাপার, নৌকা ভ্রমণ কিংবা গোসল করতে গিয়ে হতাহতের ঘটনা প্রায় ঘটে থাকে। স্থানীয় প্রশাসন ও ফায়ার সার্ভিসের দেয়া তথ্য বলছে, গেল ৫ বছরে পদ্মায় অন্তত ৫৭ জন লাশ হয়ে ফিরেছে। এদের মধ্যে গোসল করতে নেমে ২১, নৌকা ভ্রমণ কিংবা খেয়া পারাপার করতে গিয়ে নৌকা ডুবে মারা গেছেন ২২ জন। এছাড়াও বিভিন্ন সময় পদ্মায় মিলেছে অজ্ঞাত পরিচয় অর্ধগলিত লাশ ১৪টি। এখনও নিখোঁজ অন্তত ৬ জন।
রাজশাহী নৌ-পুলিশের পুলিশ সুপার (এসপি) মোহাম্মদ রুহুল কবীর খান বলেন, “রাজশাহীর পদ্মা নদীতে যতগুলো ঝুঁকিপূর্ণ পয়েন্ট আছে, সেগুলো তারা চিহ্নিত করেছে। পদ্মায় দুর্ঘটনা এড়াতে মাঝিদের পাশাপাশি নৌ-ভ্রমণকারীদেরও সচেতন করতে কাজ করছে নৌ-পুলিশ”।
পদ্মায় বড় ধরনের কোনো দুর্ঘটনা ঘটলেই স্থানীয় প্রশাসন নড়েচড়ে বসে। গঠন করা হয় তদন্ত কমিটি। তবে নৌ-দুর্ঘটনা রোধে কমিটির দেওয়া কোনো সুপারিশ, মাঠ পর্যায়ে বাস্তবায়নের উদ্যোগ দেখা যায় না।
রাজশাহী জেলা প্রশাসক শামীম আহমেদ বলেন, “নৌ-দুর্ঘটনা রোধে মাঝি ও বিনোদনপ্রেমীদের সচেতন করতে পদ্মাপাড় জুড়ে নানা উদ্যোগ নেওয়া হবে”।
রাজশাহীর পদ্মায় ডুবে মারা যাওয়ার ঘটনা বন্ধে প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। নগরবাসীর চাওয়া, ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা চিহ্নিত করে প্রশাসনের দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া।