চাঁপাইনবাবগঞ্জের ভোলাহাটে অসময়ে মাচায় তরমুজ উৎপাদন

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ৪, ২০২৩; সময়: ৭:০২ অপরাহ্ণ |
চাঁপাইনবাবগঞ্জের ভোলাহাটে অসময়ে মাচায় তরমুজ উৎপাদন

আমিনুল ইসলাম তন্ময় : প্রচন্ড গরমের তীব্র পিপাসায় সবাই চায় এক গ্লাস পানি। এ সময় এক টুকরো তরমুজ পেলে আর কি লাগে! আর সকলের পছন্দের সেই তরমুজ যদি সারা বছর পাওয়া যায়, তাহলেত কথায় নেই! চাঁপাইনবাবগঞ্জে ভোলাহাট উপজেলায় দিন দিন বাড়ছে অসময়ের ফসল গ্রীষ্মকালীন তরমুজের চাষ। আধুনিক প্রযুক্তি সম্প্রসারণের মাধ্যমে রাজশাহী বিভাগের কৃষি উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় প্রথবারের মত গত বছর প্রদর্শনী আকারে ২ বিঘা জমিতে তরমুজ চাষ হয়েছিল।

সেখানে মাত্র ৩০ হাজার টাকা খরচ করে ১ লাখ টাকার উপর লাভ পেয়েছিলেন কৃষক। ফলে এ বছর এই ফসলের আবাদ ছড়িয়ে পড়েছে পুরো উপজেলায়। চলতি বছর ৫ একরেরও বেশি জমিতে আবাদ হয়েছে গ্রীষ্মকালীন তরমুজের।

তরমুজ চাষি আমিরুল ইসলাম চাষ করেছেন দুই বিঘা তরমুজ। তিনি জানান, আমি একজন সবজি চাষি। গত বছর জোর করে গ্রীষ্মকালীন তরমুজ চাষ করায় উপজেলা কৃষি অফিস। এ সময় এক বিঘা জমি থেকে খরচ বাদে ১ লাখ টাকার উপর আয় করেছি। সেই বছরই একই জমিতে একই মাচায় দ্বিতীয় বার তরমুজ চাষ করি এবং সেখানেও অনেক লাভ হয়। ফলে এবার আমি দুই বিঘা জমিতে এই তরমুজ চাষ করেছি। এখন পর্যন্ত ফল ভাল আছে। আশা করছি এবারো ভালো লাভবান হতে পারবো।

এছাড়াও আনসারুল ইসলাম জানান, এ তরমুজ মাত্র ৬০ দিনে বিক্রির উপযুক্ত হয়ে যায়। এত অল্প সময়ে অন্য কোন ফসলে এত বেশি লাভ হয় না । ফলে আমি এইবার ১ বিঘা জমিতে তরমুজ চাষ করেছি। সামনের বছর আরো বেশি পরিমাণে চাষ করব বলে জানান তিনি। কৃষক আশরাফুল বলেন, আমি গত বছর এই তরমুজ চাষে অল্প খরচে ব্যাপক লাভবান হতে দেখে উদ্বুদ্ধ হয়ে আমি ৩ বিঘা জমিতে তরমুজ চাষ করেছি। অনেক ফল এসেছে। ফলের ভারে মাচা ভেঙ্গে পড়ছে। আশা করছি, লাভবান হতে পারবো। প্রথমে অসময়ে তরমুজ চাষ করে ক্ষতির মুখে পড়ার ভয় দেখালেও এখন অনেকেই বলছে সামনের বছর তাঁরাও তরমুজ চাষ করবেন।

অপর একজন কৃষক মুনিরুল ইসলাম বলেন, নতুন ফসল চাষ একটু কঠিন। তবে কৃষি বিভাগ সব সময় আমাদের পাশে ছিল এবং পরামর্শসহ সকল বিষয়ে সহযোগিতা করেছে। তাই আশা করছি আমি ভাল ফলন পাবো।

এ বিষয়ে ভোলাহাট উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সুলতান আলী জানান, গত বছর মাত্র ২ বিঘা জমিতে তরমুজ চাষ হয়েছিল। এবার ৫ একর-এ তরমুজ চাষ হয়েছে। আগামী বছর আরো বৃদ্ধি পাবে। গ্রীষ্মকালীন তরমুজ চাষ অত্যন্ত লাভজনক। অসময়ে তরমুজের দামও ভাল পাওয়া যায়। পাইকার জমিতে এসে তরমুজ নিয়ে যায়। ফলে তরমুজ বাজারজাত নিয়ে কৃষককে চিন্তা করতে হয় না।

অল্প সময়ে ফসল হয় বিধায় একই জমিতে একই খরচে দুইবার তরমুজ চাষ করা যায়। আধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে রাজশাহী বিভাগের কৃষি উন্নয়ন প্রকল্পসহ অন্যান্য প্রকল্পের মাধ্যমে উচ্চ মূল্যের ফসল চাষ এবং কৃষি ক্ষেত্রে আধুনিক প্রযুক্তির বিস্তারে কৃষি বিভাগ সব সময় কৃষকের পাশে আছে এবং থাকবে। তিনি বলেন, অদম্য অগ্রযাত্রায় এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশের কৃষি। সেখানে পিছিয়ে নেই ভোলাহাটের কৃষিও।

পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে