মিছিলের সামনে যাওয়ায় কর্মীকে থাপ্পড় বিএনপি নেতার

প্রকাশিত: অক্টোবর ২০, ২০২৩; সময়: ৮:৩৩ অপরাহ্ণ |
মিছিলের সামনে যাওয়ায় কর্মীকে থাপ্পড় বিএনপি নেতার

পদ্মাটাইমস ডেস্ক : রাজধানীর নয়াপল্টনে সমাবেশে মিছিল নিয়ে যাওয়ার সময় প্রকাশ্যে ওয়ার্ড পর্যায়ের এক কর্মীকে নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সভাপতি মুহাম্মদ গিয়াসউদ্দিনের থাপ্পড় মারার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। বুধবার বিকেলে নয়াপল্টনে দলীয় কার্যালয়ে মিছিল নিয়ে যাওয়ার সময় সিদ্ধিরগঞ্জের ৫ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সদস্য সালাউদ্দিনকে থাপ্পড় দেন তিনি।

এই ঘটনার ভিডিও বৃহস্পতিবার বিকেলে সেটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। এই ঘটনায় দলের তৃণমূল নেতাকর্মীদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। গিয়াসউদ্দিন নারায়ণগঞ্জ-৪ (ফতুল্লা-সিদ্ধিরগঞ্জ) আসনে বিএনপি দলীয় সাবেক সংসদ সদস্য।

ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা যায়, নীল রঙের শার্ট পরা জেলা বিএনপির সভাপতি গিয়াসউদ্দিন দৌড়ে গিয়ে মিছিলের সামনে সাদা শার্ট পরা একজনকে থাপ্পড় দেন। এ সময় ধাক্কা দিয়ে সামনে থেকে ওই ব্যক্তিকে সরিয়ে দেন। এ সময় গিয়াসউদ্দিন আরও একজন বয়স্ক লোককে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দেন। নেতাকর্মীদের সঙ্গে চিৎকার চেঁচামেচি করেন এবং একপর্যায়ে নেতাকর্মীদের দুই হাতের বুড়ো আঙুল উঁচিয়ে দেখাতে দেখা যায় তাকে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বুধবার বেলা তিনটার দিকে নয়াপল্টনে যাওয়ার সময় ফকিরাপুল পুলিশ বক্সের সামনে নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির নেতা-কর্মীরা জড়ো হন। সেখানে বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান ভূঁইয়া, জেলা বিএনপির সভাপতি মুহাম্মদ গিয়াসউদ্দিনসহ জেলার বিভিন্ন স্থান থেকে দলের নেতাকর্মীরা অংশ নেন। নেতাকর্মীরা সামনে চলে এলে মেজাজ হারিয়ে ফেলেন গিয়াসউদ্দিন। নেতাকর্মীদের ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন; ধমক ও ধাক্কা দেন। তাঁর সঙ্গে এসে সালাউদ্দিনও নেতাকর্মীদের ধাক্কা দেওয়া শুরু করেন। তখন গিয়াসউদ্দিন সালাউদ্দিনকে থাপ্পড় দেন এবং তাঁকে সরিয়ে দেন। এ সময় মিছিলের সামনে বয়স্ক এক ব্যক্তিকেও ধাক্কা দেন তিনি।

এ বিষয়ে সালাউদ্দিন বলেন, ‘নদীর (নারায়ণগঞ্জের বন্দর) থেকে কিছু লোক এসে মিছিলের সামনে এসে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা করলে আমি তাদেরকে থামানোর চেষ্টা করি। তখন তিনি (জেলার সভাপতি গিয়াসউদ্দিন) আমাকে থাপ্পড় দেন। বিষয়টি কেউ হয়তো ভিডিও করেছে, পরে সেটি ভাইরাল হয়েছে।’

অভিযোগের বিষয়ে জেলা বিএনপির সভাপতি মুহাম্মদ গিয়াসউদ্দিন বলেন, ‘মিছিল বের করার সময় অতি উৎসাহী কিছু কর্মী সিনিয়র নেতাদের পেছনে ফেলে দিয়ে সামনে এসে মুঠোফোনে সেলফি তুলছিল এবং বেয়াদবি করছিল। এতে সাংবাদিকদের ছবি তুলতে সমস্যা হচ্ছিল। তাদেরকে ধমক দিয়ে বারণ করার চেষ্টা করি, কিন্তু তারা শোনেনি। তখন আমি আমার লোককে থাপ্পড় দিয়েছি। কেউ উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে সেটি ভিডিও করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দিয়েছে।’

জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক গোলাম ফারুক খোকন বলেন, শৃঙ্খলা ফেরাতে গিয়ে মেজাজ হারিয়ে দলের এক কর্মীকে থাপ্পড় দিয়ে শাসন করেছিলেন জেলার সভাপতি। বিষয়টি নিয়ে এর বাইরে কিছু বলতে তিনি রাজি হননি।

তবে জেলা বিএনপির সভাপতির এমন আচরণে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন কয়েকজন নেতা। দলের নেতাকর্মীদের সঙ্গে জেলা সভাপতির এমন ঘটনায় তাঁরা বিব্রত। তাদের অভিযোগ, প্রতিবারই কর্মসূচিতে নেতাকর্মীদের সঙ্গে জেলা বিএনপির সভাপতি এমন ঘটনা ঘটাচ্ছেন। তাঁর কারণে দলের কর্মসূচিতে অনেক নেতাকর্মী আসতে চান না। পৃথকভাবে তাঁরা দলের কর্মসূচি পালন করছেন।

পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে