উন্নয়নের নামে প্রকৃতি ধ্বংস, পরিণতি নিয়ে সতর্ক করলেন বিজ্ঞানীরা
পদ্মাটাইমস ডেস্ক : পৃথিবী গরম হয়ে পড়ছে এবং তার ফলে দ্রুত বদলে যাচ্ছে আবহাওয়ার বহুদিনের চেনাজানা আচরণ।
সহজ ভাষায় যাকে বলা হচ্ছে জলবায়ু পরিবর্তন। আর এই জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে ঘন ঘন বন্যা, খরা, সামুদ্রিক ঝড়, ভূমিধস এবং দাবানলের মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগ হচ্ছে।
বিজ্ঞানীদের কথায়, আমরা আমাদের গ্রহকে মারাত্মক অনিশ্চয়তার মধ্যে ঠেলে দিচ্ছি। আর এর জন্য তারা দায়ী করছেন উন্নয়নের নামে নিরবচ্ছিন্ন প্রকৃতি ধ্বংস করাকে।
জলবায়ু সংক্রান্ত একটি গবেষণা প্রতিবেদনে বিজ্ঞানীরা এমন দাবি করেছেন। ‘বায়োসায়েন্স’ নামে এক বিজ্ঞান পত্রিকায় প্রতিবেদনটি প্রকাশিত হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্র, নেদারল্যান্ডস, ব্রিটেন, ব্রাজিল, অস্ট্রেলিয়া, জার্মানি এবং চীনের মোট ১২ জন বিজ্ঞানী মিলে গবেষণাপত্রটি প্রকাশ করেছেন। এর শিরোনাম ‘দ্য ২০২৩ স্টেট অব দ্য ক্লাইমেট রিপোর্ট: এন্টারিং আনচার্টেড টেরিটরি’।
চলতি বছরের জলবায়ু সংক্রান্ত বিশেষ কিছু পরিবর্তনের উল্লেখ করা হয়েছে ওই রিপোর্টে। সারা বিশ্বে অস্বাভাবিক তাপপ্রবাহ থেকে শুরু করে মহাসাগরের রেকর্ড তাপমাত্রা বৃদ্ধি বা অতিবৃষ্টিতে ভয়াবহ বন্যা ও ধসের কথাও বলা হয়েছে।
এর পাশাপাশি দক্ষিণ মেরু প্রদেশের চারপাশে থাকা সমুদ্রে ভাসমান বরফের স্তর হ্রাসের কথাও বিশেষভাবে উঠে এসেছে বিজ্ঞানীদের কথায়।
তারা জানিয়েছেন, চলতি বছরে এ পর্যন্ত মোট ৩৮ দিন পৃথিবীর গড় উষ্ণতা শিল্প বিপ্লবের আগের সময়ের থেকে দেড় ডিগ্রি সেলসিয়াস বেশি ছিল। জলবায়ুর এই চরম পরিবর্তনের একমাত্র কারণ হলো মানুষ ও তাদের দ্বারা প্রকৃতির এই ধ্বংসলীলা।
মানবজাতির কার্যকলাপ ছাড়াও অবশ্য এই ১২ জন বিজ্ঞানী কিছু জটিল বিষয়ের কথা গবেষণায় উল্লেখ করেছেন। যার মধ্যে পানির স্তরের নীচে থাকা আগ্নেয়গিরির বাষ্পের প্রভাব, আফ্রিকার ধুলো এবং এল নিনো উল্লেখযোগ্য।
গবেষক দলের অন্যতম সদস্য ওরেগন স্টেট ইউনিভার্সিটি কলেজ অব ফরেস্ট্রির বিজ্ঞানী উইলিয়াম রিপলের কথায়, পৃথিবীতে আমাদের জীবন এখন কার্যত অবরুদ্ধ।
অদূর ভবিষ্যতে এই অতিরিক্ত তাপমাত্রা বৃদ্ধি এবং তাপপ্রবাহের জেরে খাদ্য এবং পানির অভাব দেখা দেওয়ার আশঙ্কাও করছেন তারা।
তাদের ভাষায় এর থেকে বাঁচার একমাত্র উপায় হলো জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার কমানো এবং তার জায়গায় পুনর্ব্যবহারযোগ্য শক্তির প্রয়োগ বাড়ানো।