মঙ্গল গ্রহে বরফের সাগর!
পদ্মাটাইমস ডেস্ক : বর্তমানের সঙ্গে অতীতের ফারাক অনেক। মঙ্গলের মানচিত্রই বুঝিয়ে দিচ্ছে পার্থক্য। কোনো এক সময় জলের অস্তিত্ব থাকলেও, বর্তমানে ধূধূ করছে লালগ্রহটি।
মরিচা ধরা লোহার মতো রং তার পরিচিতিও হয়ে দাঁড়িয়েছে। কিন্তু একসময় মোটেও এমন দেখতে ছিল না মঙ্গলগ্রহ। লাল, নীল, সবুজ রঙের খেলা ছিল তার বুকেও।
বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, আজ থেকে ৩৫০ কোটি বছর আগে মঙ্গলের বায়ুমণ্ডল ছিল অত্যন্ত পুরু। এখনকার থেকে তাপমাত্রাও ছিল অনেক কম। মাটির বুক চিরে বয়ে যেত পানির ধারা।
এমনকি মঙ্গলের উত্তরে ছিল আস্ত কয়েকশো মিটার গভীর, আস্ত একটি মহাসাগর। সৌরঝড়ের প্রকোপে সেই জলের ভাণ্ডার বিলীন হয়ে যায় বলে মত বিজ্ঞানীদের।
তারই কিছু অবশিষ্টাংশ বর্তমানে চোখে পড়ে মঙ্গলের মেরু অঞ্চলে। মঙ্গলের মাটির নিচে বরফের আস্তরণ হিসেবে বর্তমানে অবস্থান করছে ওই পানি। অর্থাৎ, মাটির নিচে বরফ অবস্থায় রয়েছে পুরো এক মহাসাগর পরিমাণ পানি!
পৃথিবীর মতো প্রাণধারণের উপযোগী গ্রহ থেকে মঙ্গল বর্তমান অবস্থায় পৌঁছাল কী করে, তা নির্ধারণে, প্রযুক্তির সাহায্যে মঙ্গলের আগের মানচিত্র তৈরি করেছেন বিজ্ঞানীরা।
তবে পৃথিবীর তুলনায় মঙ্গলের ভূ-প্রকৃতি জটিল বলে মত বিজ্ঞানীদের একাংশের। তাদের দাবি, পৃথিবীতে সাধারণত জল ও খনিজের মধ্যে বিক্রিয়া থেকেই কাদা তৈরি হয়। তা থেকে অন্য খনিজ উৎপন্ন হয় আবার।
জল ও আয়রন বা ম্যাগনেসিয়ামের মধ্যে বিক্রিয়া ঘটলে জল শুকিয়ে লবণ পড়ে থাকে। কিন্তু মঙ্গলের বুকে এমন লবণও রয়েছে, যা কাদার ঢের আগেই তৈরি হয়।
শুধু তাই নয়, মঙ্গলের বুকে জলের অস্তিত্ব দীর্ঘকালীন ছিল নাকি ক্ষণস্থায়ী, বিলীন হয়ে গিয়ে ফের জলের আবির্ভাব ঘটে কিনা, তা জানতেও চলছে গবেষণা।
মঙ্গলকে নিরীক্ষণ করতে ইউরোপিয়ান স্পেস এজেন্সি যে মার্স এক্সপ্রেস মহাকাশযান ব্যবহার করে, তাতে বসানো ওমেগা যন্ত্রই মঙ্গলের ভূ-প্রকৃতি সম্পর্কে বিশদ তথ্য জোগাচ্ছে বিজ্ঞানীদের।