কিছুটা কমেছে সবজির দাম, এখনো চড়া মাছের বাজার
পদ্মাটাইমস ডেস্ক : কয়েকদির আগেও প্রায় সব ধরনের সবজিই ছিল ৮০ থেকে ১০০ টাকার ঘরে। তবে কয়েকদিনের ব্যবধানে শীত মৌসুম উঁকি দেওয়ায় কিছুটা কমেছে সবজির দাম। যদিও এখনো আগের বাড়তি দামেই বিক্রি হচ্ছে সব ধরনের মাছ।
সে কারণে মাছের বাড়তি দাম নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করছেন বাজারে আসা সাধারণ ক্রেতারা। আর ব্যবসায়ীরা বলছেন, মৎস্যখাদ্যের দাম বৃদ্ধি এবং চলমান অবরোধের কারণে চড়া যাচ্ছে মাছের বাজার।
শুক্রবার (১০ নভেম্বর) সাপ্তাহিক ছুটির দিনে বিভিন্ন বাজার ঘুরে দরদামের এমন চিত্র দেখা গেছে।
কাঁচা বাজারগুলোতে প্রতি পিস বাঁধাকপি বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকায়, একইভাবে প্রতি পিস ফুলকপি বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৫০ টাকায়। এছাড়া বাজারে প্রতি কেজি মিষ্টি কুমড়া ৬০ টাকা, শিম ৮০ টাকা, বেগুন ৫০ থেকে ৬০ টাকা, পেঁপে ৩০ টাকা, পটল ৬০ টাকা, মুলা ৫০ টাকা, করলা ৬০ টাকা, আলু ৫০ টাকা, টমেটো ১৪০ টাকা, কাঁচামরিচ ১৬০ থেকে ১৮০ টাকা, শসা ৬০ টাকা, ঢেঁড়স ৬০ টাকা, বরবটি ৮০ টাকা, ঝিঙা ৬০ টাকা, ধুন্দল ৬০ টাকা, কচুর লতি ৮০ টাকা, কচুর মুখি ৮০ টাকা ও দেশি পেঁয়াজ ১৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া এক পিস লাউ বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৭০ টাকায়।
অন্যদিকে, সব ধরনের মাছের দামই বাড়তি যাচ্ছে বলে অভিযোগ জানাচ্ছেন বাজারে আসা সাধারণ ক্রেতারা। বাজার ঘুরে দেখা গেছে, প্রতি কেজি তেলাপিয়া মাছ ২০০ থেকে ২২০ টাকা, পাঙাস মাছ ২২০ থেকে ২৪০ টাকা, চাষের কই ২৫০ থেকে ২৮০ টাকা, টাকি মাছ ৪০০ টাকা, পাবদা মাছ ৩৮০ থেকে ৪০০ টাকা, শিং মাছ ৪০০ থেকে ৪৫০ টাকা, রুই মাছ ৩২০ থেকে ৩৫০ টাকা, কাতল মাছ ৩০০ থেকে ৩৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আর এক কেজি সাইজের ইলিশ কেজি প্রতি বিক্রি হচ্ছে ১১০০ টাকায়।
এছাড়া, প্রতি কেজি গলদা চিংড়ি ১১০০ টাকা ও সাইজে একটু ছোট চিংড়ি বিক্রি হচ্ছে ৬০০ টাকায়। প্রতি কেজি আইড় মাছের দাম ৭০০ টাকা, টেংরা মাছ ৪৮০ থেকে ৫০০ টাকা, বোয়াল মাছ ৭০০ থেকে ৭৫০ টাকা ও রুপচাঁদা আকৃতিভেদে ৮০০ থেকে ১১০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
আর ছোট কাঁচকি মাছ প্রতি কেজি ৪৮০ টাকা, ছোট সাইজের বাইম মাছ প্রতি কেজি ৫৫০ থেকে ৬০০ টাকা, মাঝারি শোল মাছ প্রতি কেজি ১২৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
অন্যদিকে, প্রতি কেজি ব্রয়লার বিক্রি হচ্ছে ১৮০ থেকে ১৯০ টাকায়। সোনালি মুরগি প্রতি কেজি ৩০০ থেকে ৩১০ টাকা, লেয়ার প্রতি কেজি ৩৩০ টাকা, কক প্রতি কেজি ৩০০ টাকা বিক্রি হচ্ছে।
এছাড়া মুরগির লাল ডিম প্রতি হালি (৪ পিচ) বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকায়। পাশাপাশি গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৭৮০ টাকায় ও খাসির মাংস প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ১১০০ টাকায়।
বাজারে পণ্য কিনতে আসা বেসরকারি চাকরিজীবী প্রীতম সাহা বলেন, বাজারে সবজির দাম কিছুটা কমেছে। তবুও ৫০-৬০ টাকার নিচে কিছুই নেই। যদিও কয়েকদিন আগে এসব সবজির দাম আরও বাড়তি ছিল।
কিন্তু মাছের দার এখনো অনেক বেশিই যাচ্ছে। অল্প কিছু পাঙাস, তেলাপিয়া ও চাষের কই মাছ তাও কেনা যায়। কিন্তু ভালো কোনো মাছই আমরা কিনে খেতে পারি না। কারণ ওইসব মাছের দাম এতটাই বেশি যে, আমাদের মতো সাধারণ ক্রেতারা শখ করে ছাড়া কিনতে পারছে না।
সবজির দামের বিষয়ে একই বাজারের সবজি বিক্রেতা খোরশেদ আলম বলেন, শীত মৌসুম প্রায় চলে আসার কারণে সব ধরনের সবজির দামই আগের চেয়ে কমেছে। পুরো শীতে এসবের দাম আরও কমবে।
তবে বর্তমানে দেশে হরতাল-অবরোধ চলার কারণে পরিবহন ভাড়া আগের চেয়ে বেড়ে গেছে এবং পরিবহন পাওয়াও কঠিন। এসব কারণ না থাকলে বর্তমান বাজারের চেয়েও আরও কম দামে সবজি পাওয়া যেত।
মাছের বাড়তি দামের কারণ জানিয়ে মহাখালী বাজারের মাছ বিক্রেতা হাবিবুর রহমান বলেন, মাছের এরকম দাম আরও অনেক আগেই থেকেই চলছে।
তবে হরতাল-অবরোধে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে রাজধানীতে মাছ কম সরবরাহ হচ্ছে। পাশাপাশি পরিবহন ভাড়াও বর্তমানে বাড়তি। এসব মিলিয়েই বর্তমানে মাছের বাজার বাড়তি যাচ্ছে।
তবে যখন থেকে মাছের খাবারের দাম বেড়েছে, মূলত সেই সময় থেকেই মাছের দাম বেড়েছে। এরপর আর কমেনি। সেইসঙ্গে বর্তমান হরতাল অবরোধের কারণে পরিবহন সংকটে মাছের দর আরেক দফা বাড়তি যাচ্ছে।