‘বড় চ্যালেঞ্জে’র মুখোমুখি ইসি, সতর্ক অবস্থানে আইন শৃঙ্খলা বাহিনী
পদ্মাটাইমস ডেস্ক : বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর হুমকি, নানামুখী চ্যালেঞ্জ এবং উৎকণ্ঠা নিয়েই আজ দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করতে যাচ্ছে কাজী হাবিবুল আউয়াল নেতৃত্বাধীন নির্বাচন কমিশন। আজ সন্ধ্যা ৭টায় বাংলাদেশ টেলিভিশন ও বাংলাদেশ বেতারে জাতির উদ্দেশে ভাষণ প্রদানের মধ্য দিয়ে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করবেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার।
এর আগে, বিকেল ৫টায় প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়ালের সভাপতিত্বে তফসিল সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে আলোচনা করতে সভায় বসবেন সব কমিশনাররা।
বুধবার সকাল ১০টায় কমিশনের মুখপাত্র ইসি সচিব মো. জাহাংগীর আলম সাংবাদিকদের বলেছিলেন, অতীতে রেকর্ড করা ভাষণের মাধ্যমে প্রধান নির্বাচন কমিশনাররা জাতীয় নির্বাচনের তফসিল দিলেও এবার সিইসির সেই ভাষণ বিটিভি ও বেতারে সরাসরি সম্প্রচার করা হবে। অতীতে কমিশন সভা শেষে ভাষণ রেকর্ড করে প্রচার করা হতো। এই প্রথমবার নির্বাচন ভবন থেকে সরাসরি সম্প্রচার করা হবে তফসিলসহ সিইসির ভাষণ।
এদিকে তফসিল ঘোষণা হলে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো ইসি ঘেরাও কর্মসূচিতে যাবে বলে আগেই ঘোষণা দিয়ে রেখেছিল। তাই তফসিল ঘোষণাকে কেন্দ্র করে যেকোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে সতর্ক অবস্থানে রয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। গতকাল থেকেই নির্বাচন কমিশনের সামনে ও আশেপাশের এলাকায় নিরাপত্তা জোরদার করা হয়। তবে গতকাল শুধু পুলিশি নিরাপত্তা থাকলেও আজ সকাল থেকেই পুলিশ, বিজিবি, র্যাব ও আনসার বাহিনীর সদস্যরা নির্বাচন কমিশনের আশেপাশের এলাকায় নিরাপত্তায় সচেষ্ট রয়েছে। এছাড়া, নির্বাচন কমিশনের আশেপাশের বিভিন্ন সড়কে ব্যারিকেড দিয়ে রাস্তা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
অন্যদিকে, তফসিল ঘোষণাকে কেন্দ্র করে নিরাপত্তা পরিস্থিতি দেখতেই দুপুরে ইসিতে আসেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার (ডিএমপি) হাবিবুর রহমান। তিনি সিইসিসহ সকল কমিশনার এবং ইসি সচিবের সঙ্গে দুপুরের খাবার খেয়ে বেরিয়ে যান। এ সময় তিনি সাংবাদিকদের বলেন, তফসিল ঘোষণা হবে, তাই সার্বিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা দেখার জন্য আমি এসেছি। সবার সঙ্গে কথা বললাম। যেসব নিরাপত্তা ব্যবস্থা রয়েছে, তা দেখতে এসেছি।
হাবিবুর রহমান বলেন, নির্বাচন কমিশন ও নগরবাসীর নিরাপত্তার জন্য যে সমস্ত পদক্ষেপ পুলিশের পক্ষ থেকে নেওয়া দরকার, যেমন সিকিউরিটি চেকআপ এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা যেগুলো আছে সেগুলো দেখা, এগুলো আমরা করছি। অবরোধের মধ্যে তফসিল হচ্ছে, বিরোধী দলগুলো বলছে আরও কঠোর আন্দোলনে যাবে। তবে পুলিশ জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে। যদি কোনো নৈরাজ্য হয় সেখানে পুলিশ অবশ্যই কঠোর অবস্থান নেবে।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোটের দিনক্ষণ নিয়ে ইসির কর্মকর্তারা জানান, খুবই গোপনীয়তায় এবারের তফসিল ও ভোটের তারিখ নির্ধারণ করা হচ্ছে। তবে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ আগামী ২ অথবা ৩ এবং ৬ অথবা ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত হতে পারে। সন্ধ্যা ৭টায় সিইসি জাতির উদ্দেশে ভাষণের মধ্য দিয়ে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করবেন সিইসি।
সাংবিধানিক বিধান অনুযায়ী গত ১ নভেম্বর দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের ক্ষণ গণনা শুরু হয়েছে। চলতি একাদশ সংসদের মেয়াদ শেষ হবে আগামী ২৯ জানুয়ারি। যার ফলে আগামী ২৯ জানুয়ারির মধ্যে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের বাধ্যবাধকতা রয়েছে।
এর আগে, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন হয় ২৩ ডিসেম্বর। গত দশম সংসদ ভোট ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত হয়েছিল। ২০১৩ সালের ২৫ নভেম্বর ওই নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হয়। সংসদের বাইরে থাকা দেশের প্রধান রাজনৈতিক দল বিএনপি ও তাদের মিত্রসহ বেশ কয়েকটি রাজনৈতিক দল ওই নির্বাচন বর্জন করে। ওই নির্বাচনে সরকারি ও বিরোধী দলের ১৫৩ জন প্রার্থী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছিলেন।