রাবি শিক্ষার্থীদের নির্মিত ২ চলচ্চিত্রের প্রদর্শনী
নিজস্ব প্রতিবেদক, রাবি : রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) নাট্যকলা বিভাগের দুই শিক্ষার্থীর নির্মিত স্বাধীন চলচ্চিত্র ‘কালার অব প্যারাডাইস’ ও ‘ফ্যাঁকড়া’ সিনেমার প্রদর্শনী আগামী ২২ এবং ২৩ নভেম্বর। সিনেমা নির্মাণে কলাকুশলী হিসেবে কাজ করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীরা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ সুখরঞ্জন সমাদ্দার ছাত্র-শিক্ষক সাংস্কৃতিক কেন্দ্রে (টিএসসিসি) বিকেল থেকে শুরু করে প্রতিদিন তিনটি করে শো দেখানো হবে।
‘কালার অব প্যারাডাইস’ সিনেমার পরিচালক রাহি আব্দুল্লাহ। তিনি নাট্যকলা বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী। সিনেমায় অভিনয়শিল্পী হিসেবে কাজ করেছেন সাদেক রহমান, হিমাংশু চন্দ্র বর্মন, নুর ইসলাম এবং শাওন দাশ।
অন্যদিকে ‘ফ্যাঁকড়া’ সিনেমার নির্মাতা নাজমুস সাকিব নাট্যকলা বিভাগের মার্স্টার্সের শিক্ষার্থী। সিনেমায় অভিনয় করেছেন একই বিভাগের বিভিন্ন শিক্ষাবর্ষের শাওন দাস, রিপন সোনাই, তুহিন ইমরুলসহ কয়েকজন তরুণ শিক্ষার্থী।
পদ্মার চরের এক বাবা আর ছেলের গল্প নিয়ে নির্মিত ‘কালার অব প্যারাডাইস’ সিনেমার কেন্দ্রীয় চরিত্রে অভিনয় করেছেন সাদেক রহমান। গল্পটি আবর্তিত হয়েছে একজন বোবা চরিত্রকে কেন্দ্র করে।
চরিত্রের নাম হাফিজ। যিনি প্রকৃতির কাছে নিজের সত্ত্বা বিলিয়ে দিয়েছেন। কাছুয়া নামের এক জেলে একদিন পদ্মায় মাছ ধরতে গিয়ে একটি তাবিজ পায়। এরপর সে তাবিজটি নিয়ে বাড়িতে আসে।
সেদিন রাতেই কাছুয়া স্বপ্নে দেখে তার ছেলেকে যদি হাফেজ বানানোর। কিন্তু কাছুয়ার ছেলে হাফিজ একইসাথে মূক এবং বধির। হাফেজের কুরআনের হাফেজ হওয়া অসম্ভব।
তাহলে হাফিজের সাথে কি ঘটবে? বাবার অন্ধ বিশ্বাস আর সমাজের নিয়ম না জানা হাফিজকে কেন্দ্র করেই কালার অব প্যারাডাইসের গল্প আর্বতিত হয়েছে।
ফ্যাঁকড়া সিনেমার কেন্দ্রীয় চরিত্রে অভিনয় করেছেন শাওন দাস। চরিত্রের নাম অনুরাগ। সিনেমায় দেখা যাবে অস্তিত্বের সংকটে ভোগা এক তরুণ অনুরাগকে। যে একটি ফিল্ম বানাতে চায়।
জীবনের প্রথম ফিল্মের স্ক্রিপ্ট লেখার পর থেকেই পদে পদে ধাক্কা খায় সে। এক ছিনতাইকারীর সাথে পরিচয় ঘটে তার। অনুরাগ নতুন করে বেরিয়ে পরে তার ফিল্মের গল্পের সন্ধানে।
এরপর সে জড়িয়ে পরে বিপদে। অনুরাগের বিপদ থেকে উত্তরণ সহ ধারাবাহিকভাবে বিভিন্ন বিষয় ফুটিয়ে তোলা হয়েছে সিনেমাটিতে।
নির্মাতা রাহি আব্দল্লাহ তার সিনেমা ‘কালার অফ প্যারাডাইস’ এর হাফিজ চরিত্রটিকে মূল উপজীব্য হিসেবে তুলে ধরে বলেন, হাফিজ কিভাবে সমাজের অন্ধবিশ্বাস ও সামাজিক চাপের সাথে সংগ্রাম করে নিজের সত্ত্বাকে টিকিয়ে রেখেছে এবং নিজেকে এগিয়ে নিয়েছে সেই গল্পই দেখা যাবে সিনেমায়।
‘ফ্যাঁকড়া’ সিনেমার পরিচালক নাজমুস সাকিব বলেন, সৃষ্টিশীল মানুষের নানা প্রতিবন্ধকতা নিয়ে মূলত সিনেমাটি নির্মান করা হয়েছে। গল্পের চরিত্র অনুরাগ আমাদের মতো সিনেমার মানুষদের কথা বলে।
একটা সিনেমা বানাতে কত পরিশ্রম, ধৈর্য্য, সময়, ঝুঁকিও বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতার মুখোমুখি হতে হয়। শত বিপদের সম্মুখীন হয়েও কিভাবে নিজের লক্ষ্যে পৌঁছাতে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ সেই গল্প উঠে এসেছে সিনেমাটিতে।
এর আগে ২০২১ সালে অনুষ্ঠিত ফ্রান্সের কান ওয়ার্ল্ড ফিল্ম ফেস্টিভালে স্বল্পদৈর্ঘ্য সিনেমা ‘টেনর’ এর জন্য সেরা তরুণ নির্মাতার পুরস্কার পান নাট্যকলা বিভাগের শিক্ষার্থী তরুণ এই নির্মাতা রাহি আব্দুল্লাহ।
অন্যদিকে নাজমুস সাকিব ২০২১ সালে ‘একটি নিউ নরমাল সিনেমা’ নির্মানের কৃতিত্বে ’14th International Children Film Festival’ এ বেস্ট নিউ নরমাল সেকশনে এওয়ার্ড লাভ করে।