ইউএস অ্যাগ্রিমেন্টের প্রতারণা তদন্তে এবার সিআইডি
নিজস্ব প্রতিবেদক : প্রতারকচক্রের তৈরি করা মোবাইল অ্যাপ ‘ইউএস অ্যাগ্রিমেন্ট’-এ বিনিয়োগের নামে বিপুল পরিমাণ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার ঘটনায় রাজশাহীতে কাইজার আহমেদ নামের আরও এক ভুক্তভোগী মামলা করেছেন। আদালত এই মামলাটি তদন্তের জন্য পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগকে (সিআইডি) দায়িত্ব দিয়েছেন।
বুধবার (০৭ ফেব্রুয়ারি) রাজশাহীর রাজপাড়া থানার আমলী আদালতে মামলাটি দায়ের করেন কাইজার আহমেদ। তার আইনজীবী শামীম আখতার হৃদয় এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। এ নিয়ে রাজশাহীতে ইউএস অ্যাগ্রিমেন্টের প্রতারণার ঘটনায় মোট নয়টি মামলা হলো।
আইনজীবী শামীম আখতার হৃদয় জানান, মামলায় ইউএস এগ্রিমেন্টের রাজশাহী বিভাগীয় প্রধান মো. ওয়াহেদুজ্জামান সোহাগ (৩৮), তাঁর স্ত্রী ও বিভাগীয় ব্যবস্থাপক ফাতেমা তুজ জহুরা ওরফে মিলি (৩২) এবং জেলা এজেন্ট মিঠুন মন্ডলকে (৩৬) আসামি করা হয়েছে। ওয়াহেদুজ্জামান ও ফাতেমা দম্পত্তির বাড়ি নগরীর নওদাপাড়া এলাকায়। মিঠুন মণ্ডলের বাড়ি নগরীর বোয়ালিয়াপাড়ায়।
মামলার আরজিতে কাইজার আহমেদ বলেছেন, আসামিরা তাকে এই অ্যাপে বিনিয়োগ করলে মাসে এক লাখ টাকার বিপরীতে ১১ হাজার ২০০ টাকা মুনাফা দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়েছিলেন। সরল বিশ^াসে ২০২২ সালের ডিসেম্বরে তিনি ২৮ লাখ টাকা বিনিয়োগ করেন। এরমধ্যে কাইজারের নিজের টাকা ছিল দুই লাখ। বাকি টাকা দিয়েছিলেন মামলার ছয়জন সাক্ষী।
আইনজীবী জানান, দণ্ডবিধির ৪০৬, ৪২০ ও ৩৪ ধারায় মামলাটি দায়ের করা হয়েছে। আদালতের বিচারক শংকর সাহা মামলাটি গ্রহণ করে তদন্তের জন্য সিআইডিকে দিয়েছেন।
এর আগে মঙ্গলবার রাজশাহীর আদালতে দুটি, তার আগে সোমবার চারটি এবং রোববার একটি মামলা করেন ভুক্তভোগীরা। এসব মামলা তদন্ত করতে দেওয়া হয়েছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই)। এছাড়া এছাড়া ২৩ জানুয়ারি রাজশাহীর গোদাগাড়ী থানায় এবং ১৭ জানুয়ারি রাজশাহীর রাজপাড়া থানায় আরও দুটি মামলা হয়েছে। এসব মামলা পুলিশ তদন্ত করছে।
ভাল মুনাফা পাওয়ার প্রলোভনে ইউএস অ্যাগ্রিমেন্ট অ্যাপে রাজশাহীর অন্তত শতাধিক নারী-পুরুষ প্রায় ৫০ কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছিলেন। সারাদেশে এই অ্যাপে প্রায় ২ হাজার মানুষ বিনিয়োগ করে অন্তত ৩০০ কোটি টাকা খুইয়েছেন বলে রাজশাহীর ভুক্তভোগীরা বলছেন।
রাজপাড়া থানায় পাঁচজনের বিরুদ্ধে প্রথম মামলাটি দায়েরের পর রাজশাহী মহানগর পুলিশ আসামিদের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা চেয়ে ইমিগ্রেশন বিভাগে চিঠি দেয়। এর আগেই অ্যাপের বিভাগীয় ব্যবস্থাপক ফাতেমা তুজ জহুরা ওরফে মিলি ছাড়া অন্য আসামিরা আত্মগোপনে চলে যান। পুলিশ এখনও পর্যন্ত তাদের গ্রেপ্তার করতে পারেনি। আর মামলা হওয়ার পর ফাতেমা আদালতে হাজির হয়ে জামিন নেন। পরে তিনিই উল্টো ভুক্তভোগীদের বিরুদ্ধে হুমকি-ধমকি দেওয়ার অভিযোগে আদালতে একটি মামলা করেছেন।