সমুদ্রের ওপর মাছের চোখের আকারের রেস্তোরাঁ

প্রকাশিত: মার্চ ১৮, ২০২৪; সময়: ৩:৫১ অপরাহ্ণ |
সমুদ্রের ওপর মাছের চোখের আকারের রেস্তোরাঁ

পদ্মাটাইমস ডেস্ক : নরওয়ের ফিয়র্ড অঞ্চলে অদ্ভুত এই ধাতুর গোলকের অর্থ কী? স্থাপত্য ও খাদ্যের অনুরাগীরা কিসের টানে সেখানে হাজির হচ্ছেন? ভাসমান এই আর্ট ইনস্টলেশনের নাম ‘স্যামন আই’, যার মধ্যে একটা রেস্তোরাঁও রয়েছে।

মাছ প্রজননের পারিবারিক ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের কর্ণধার সোন্দ্রে আইডের মাথায় সেই আইডিয়া এসেছিল। কিন্তু সেই নির্মাণের মাধ্যমে তিনি ঠিক কী করতে চান?

‘আইডে ফিয়র্ডব্রুক’-এর কর্ণধার সেই প্রশ্নের জবাবে বলেন, ‘স্যামন আইয়ের লক্ষ্য মানুষকে প্রেরণা জোগানো। তারা যেন আরও টেকসইভাবে সি-ফুড বা সামুদ্রিক মাছ কাজে লাগায়। সমুদ্রের টেকসই উন্নয়নের চিহ্ন হিসেবে সেটিকে বর্ণনা করা হচ্ছে।’

পর্যটকদের কাছে জনপ্রিয় হারডাঙা ফিয়র্ডের কাছেই প্রথাবিরোধী সেই স্থাপনার দেখা পাওয়া যায়। সোন্দ্রে জানালেন, সেটি আসলে ফিয়র্ডের মাঝে ভাসছে, প্রায় ১,০০০ মিটার গভীরে সেটির নোঙর ফেলা রয়েছে। ডেনমার্কের কভোরনিং ডিজাইন কোম্পানি মাছের চোখের আকারের সেই স্থাপনা ডিজাইন করেছে। পাঁচ মিটার উঁচু ঢেউয়ের ধাক্কাও সামলানোর ক্ষমতা সেটির রয়েছে।

৯ হাজারেরও বেশি ইস্পাতের প্লেট দেখতে মাছের আঁশের মতো। স্যামন মাছের চোখের সঙ্গে মিল আসলে এমন এক আইডিয়ার অংশ, যা মাছ ধরার কাজকে ভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি থেকে দেখতে উদ্বুদ্ধ করে। ভেতরের অংশেও সেটির গোল আকৃতি টের পাওয়া যায়।

সোন্দ্রে আইডে বলেন, ‘ভেতরের অংশ তুলে ধরা আমাদের কাছে খুব জরুরি। এমন বক্ররেখা এবং এমন বৈশিষ্ট্যের ভবন থাকলে ভেতরের অংশেও সব গুণাগুণ আনা আমাদের জন্য জরুরি ছিল। গোটা ভবনে প্রায় কোনও সরল রেখা নেই।’

পানির স্তরের তিন মিটার নিচে প্রদর্শনীর জায়গা রয়েছে। গোটা বিশ্বের খাদ্য শিল্পখাত কীভাবে আরও টেকসই হতে পারে, সেটাই সেখানকার মূল বিষয়।

এছাড়া অ্যাকোয়াকালচার বা সমুদ্রে চাষই বা কোন ভূমিকা পালন করতে পারে? ‘আইরিস’ রেস্তোরাঁর খাদ্য তালিকায়ও সেই ভাবনার প্রতিফলন দেখা যায়। ২০২৩ সালের জুন মাসে সেটি উদ্বোধন করা হয়েছে।

সেখানকার খাদ্যের কনসেপ্টের নেপথ্যে কে আছেন, সেটা জানতে কাছের স্নিলস্টাফেইটয় দ্বীপে যেতে হবে। সেখান থেকেই রেস্তোরাঁর প্রধান রাঁধুনী আনিকা মাডসেন নৌকায় করে প্রতিদিন কাজে যান।

নিজের দেশ ডেনমার্কে নামী রেস্তোরাঁগুলোতে কাজ করার সময়েই তিনি টেকসই রন্ধনপ্রণালীর আইডিয়া থেকে উৎসাহ পেতেন। শুধু জলপথে পৌঁছানে সম্ভব, এমন মাছের রেস্তোরাঁ তার কাছে আদর্শ মনে হয়।

আনিকা মাডসেন মনে করেন, ‘কাছের শহরে এমন রেস্তোরাঁ খোলা অবশ্যই অনেক সহজ হতো। কিন্তু মনে হয় এই প্রকল্পের সৌন্দর্যের কারণেও আমি না বলতে পারিনি। আমাদের কাহিনী তুলে ধরে অতিথিদের খাদ্যের উপকরণের কাছে নিয়ে আসা সত্যি জরুরি। এর বিপরীতটা নয়। সেই লক্ষ্যে অবশ্যই আমরা অনেক সি-ফুড পরিবেশন করি।’

সরাসরি সমুদ্র ও আশপাশের এলাকা থেকেই রেস্তোরাঁয় খাদ্যের উপকরণ আনা হয়। সেই সব উপকরণ দিয়ে আনিকা ১৮ পদের মেনু সৃষ্টি করেন।

টেকসই আইডিয়াকে খাদ্যের রূপ দিতে যে সব পদ সৃষ্টি করা হয়, ‘৫০০ মিটার’ তারই অন্যতম। মাসেল, ওয়াইল্ড জুনিপার, চিংড়ি ও সিউইড-সহ সেটির সব উপকরণই ৫০০ মিটার ব্যসের মধ্য থেকে সংগ্রহ করা হয়। সব মানুষই যাতে তারই মতো স্থানীয় পর্যায়ের সম্পদের কদর করেন, আনিকা সেটাই চান।

পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে