এমভি আবদুল্লাহতে অভিযানের প্রস্তুতি
পদ্মাটাইমস ডেস্ক: সোমালিয়ার জলদস্যুদের হাতে জিম্মি হওয়া বাংলাদেশের পতাকাবাহী জাহাজ এমভি আবদুল্লাহ ও অপহৃত নাবিকদের উদ্ধারে অভিযান চালানোর প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে।
আন্তর্জাতিক বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাণিজ্যিক জাহাজটি দস্যুদের কবলমুক্ত করতে সোমালি পুলিশ ও আন্তর্জাতিক নৌবাহিনী অভিযানের প্রস্তুতি নিচ্ছে।
সোমালিয়ার পান্টল্যান্ড অঞ্চলের পুলিশের সূত্র উদ্ধৃত করে এ খবর দিয়েছে সংবাদ সংস্থাটি। পান্টল্যান্ড সোমালিয়ার আধা স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল, যেখানে জলদস্যুদেরে বেশকিছু ঘাটি রয়েছে বলে মনে করা হয়।
রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পান্টল্যান্ডের পুলিশ বলছে, তারা জানতে পেরেছে যে, এমভি আবদুল্লাহকে জিম্মিমুক্ত করতে দস্যুদের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক নৌবাহিনী একটি অভিযানের পরিকল্পনা করেছে। আর এই অভিযানে অংশ নিতে তারাও প্রস্তুত রয়েছে।
গত মঙ্গলবার মোজাম্বিক থেকে ৫৫ হাজার মেট্রিক টন কয়লা বোঝাই করে সংযুক্ত আরব আমিরাতে উদ্দেশ্যে রওনা হয় চট্টগ্রামভিত্তিক ব্যবসায়ী কবির গ্রুপের জাহাজটি। পথে ভারত মহাসাগরে সোমালিয়ার জলদস্যুদের কবলে পড়ে।
মোগাদিসু থেকে এক হাজার ১১১ কিলোমিটার পূর্বে ভারত মহাসাগর থেকে ছিনতাই করে বাণিজ্যিক কার্গো জাহাজটিকে প্রথমে নেয়া হয় সোমালিয়ার গারাকাড এলাকায়। উপকূল থেকে প্রায় ৩৭ কিলোমিটার দুরে নোঙর ফেলা হয়।
এক পর আবার অবস্থান বদলে আবদুল্লাহকে নেয়া হয় গদবজিরান উপকূল এলাকায়। এবার নোঙর ফেলা হয় উপকূলের আরো কাছে, মাত্র সাড়ে ৭ কিলোমিটার দূরে। এরপর আর এগিয়ে উপকূলের পৌনে তিন কিলোমিটার দূরত্বে নেয়া হয়েছে।
রয়টার্স লিখেছে, গত সপ্তাহে সোমালিয়ার উপকূলে ছিনতাই করা হয় এমভি আবদুল্লাহকে। সোমালি জলদস্যুরা গত নভেম্বর থেকে ২০টিরও বেশি জাহাজে হামলা চালিয়েছে। এর আগে প্রায় এক দশক তারা চুপচাপ ছিলো।
গত শনিবার সোমালি উপকূলে এক অভিযানে এমভি রুয়েনকে জলদস্যুদের কবল থেকে মুক্ত করে ভারতীয় নৌ কমান্ডোরা। জাহাজটির ১৭ ক্রুকে অক্ষত অবস্থায় উদ্ধার করার পাশাপাশি জাহাজে থাকা ৩৫ জলদস্যুর সবাইকে আটক করে ভারতীয় নৌ বাহিনীর এই কমান্ডেরা।
আরব সাগরে মাল্টার পতাকাবাহী ওই জাহাজটি তিন মাস আগে ছিনিয়ে নিয়ে নাবিকদের জিম্মি করে জলদস্যুরা। এরপর ওই জাহাজ নিয়ে বিভিন্ন নৌযানে তারা হামলা চালাতে থাকে। ভারতীয় নৌবাহিনীর যুদ্ধজাহাজ আইএনএস তর্কশ গত বৃহস্পতিবার সকালে এমভি আবদুল্লাহর কাছাকাছি পৌঁছেছিলো। কিন্তু নাবিকরা সশস্ত্র জলদস্যুদের হাতে জিম্মি থাকায় সে সময় অভিযান চালানো থেকে বিরত থাকেন ভারতীয় নৌ সেনারা।
জলদস্যুতা নির্মূলে কাজ করে যাওয়া ইউরোপীয় ইউনিয়ন নেভাল ফোর্স তাদের ‘অপারেশন আটলান্টার’ অংশ হিসেবেও এমভি আবদুল্লাহর ওপর নজর রাখছে।
যে আন্তর্জাতিক নৌ বাগিনীর কথা পান্টল্যান্ড পুলিশ বলেছে, সেটি কোন দেমেলে সে বিষয়ে রয়টার্স কিছু জানাতে পারেনি।
সরকার ও জাহাজের মালিকপক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, তারা জিম্মিদের ফিরিয়ে আনতে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। তবে দস্যুদের পক্ষ থেকে কোনো সাড়া মিলছে না।