ঈদবাজারে সেমাই চিনি মসলা বিক্রির ধুম, দামও চড়া!
পদ্মাটাইমস ডেস্ক : ঈদুল ফিতরের বাকি আর মাত্র কয়েকদিন। শেষ মুহূর্তে জামা-কাপড়ের দোকানে যেমন উপচেপড়া ভিড়, তেমনি ঈদকেন্দ্রিক ভোগ্যপণ্য কিনতেও বাজারে বেজায় ভিড়। আর্থিক অবস্থা যেমনই হোক, ঈদ নিয়ে উচ্ছ্বাসের কমতি নেই ক্রেতাদের। তবে রোজার আগে থেকেই এবার অতিপ্রয়োজনীয় পণ্যগুলোর দাম চড়া। বাড়তি দামেই প্রয়োজনীয় পণ্য কিনে নিচ্ছেন ক্রেতারা। তবে ঈদের আগে দাম আরও বেড়ে যাওয়ার শঙ্কা তাদের।
শনিবার (৬ এপ্রিল) রাজধানীর মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেট, টাউনহল মার্কেট ও কাওরানবাজার ঘুরে ঈদের আগে মানুষের কেনাকাটার এমন চিত্র দেখা গেছে।
নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের লাগামহীন দামের কারণে সংসার খরচের ফর্দ আগেই কাটছাঁট করতে হয়েছে সাধারণ মানুষকে। ঈদের চাহিদা বাড়তি দামকে আরও উসকে দিচ্ছে। ঈদ যতই ঘনিয়ে আসছে, ততই ঊর্ধ্বমুখী হচ্ছে চিনি, পোলাও চাল, দুধ, সেমাই ও কিশমিশের দাম। একই সঙ্গে মসলা জাতীয় পণ্যের মূল্যও বেশ বাড়তি।
ঈদ এলেই বাজারে সেমাইয়ের চাহিদা বেড়ে যায় কয়েক গুণ। এবারের ঈদেও বাজারে বেড়ে গেছে সেমাই বিক্রি। বাজার ঘুরে দেখা গেছে, দোকানগুলোতে লাচ্ছা ও চিকন সেমাই প্যাকেটজাত ও খোলা আকারে বিক্রি হচ্ছে; সামর্থ্য অনুযায়ী কিনছেন ক্রেতারা।
গেল বছরের তুলনায় এ বছর মানভেদে সেমাইয়ের দাম বেড়েছে কেজিতে ১০ থেকে ২০ টাকা। বর্তমানে খোলা লাচ্ছা সেমাই বিক্রি হচ্ছে কেজিপ্রতি ১৬০ থেকে ১৮০ টাকায়। আর চিকন সেমাই কেজিপ্রতি বিক্রি হচ্ছে ১০০ থেকে ১৪০ টাকায়। প্যাকেটজাত ২০০ গ্রাম সেমাই ব্র্যান্ডভেদে ৪৫ থেকে ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
চাহিদা বেড়েছে মসলার
মসলা পরিমাণ দাম
এলাচ ১ কেজি ৩২৫০ টাকা
দারুচিনি ১ কেজি ৫৫০ টাকা
লবঙ্গ ১ কেজি ১৬০০ টাকা
জিরা ১ কেজি ৭০০ টাকা
জয়ফল ১ কেজি ১২৫০ টাকা
জয়ত্রী ১ কেজি ৩৬০০ টাকা
আলুবোখারা ১ কেজি ৪৮০ টাকা
পেস্তা বাদাম ১ কেজি ২৯৫০ টাকা
কাজুবাদাম ১ কেজি ১২৫০ টাকা
এছাড়া চিনা বাদাম ১৯০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। কিশমিশ বিক্রি হচ্ছে মানভেদে ৫৫০ থেকে ৬৫০ টাকা কেজি দরে।
এর মধ্যে এলাচ গত সপ্তাহে ২৮৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে। এক সপ্তাহের ব্যবধানে এর দাম বেড়েছে ৪০০ টাকা। এছাড়াও জয়ত্রী বিক্রি হয়েছে ৩৪০০ টাকা ও কাজু বাদাম বিক্রি হয়েছে ১২০০ টাকায়। এক সপ্তাহে এসব পণ্যের দাম বেড়েছে যথাক্রমে ২০০ ও ৫০ টাকা।
বিক্রেতাদের দাবি, এখনও হাতে সময় আছে বলে মানুষ সেমাই বা মসলা জাতীয় পণ্য কম কিনছে। কয়েক দিন পরেই এসব পণ্য বেশি কিনবে।
ঈদে প্রয়োজনীয় ভোগ্যপণ্য পোলাও চাল। রমজান মাসের শুরু থেকে ১-২ টাকা করে বেড়ে এখন খোলা চিনিগুঁড়া ১২৫ থেকে মানভেদে ১৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া বিভিন্ন কোম্পানির প্যাকেটজাত চাল ১৬০ টাকা কেজিতে বিক্রি হতে দেখা গেছে।
ব্যবসায়ীরা জানান, এরই মধ্যে ডানো, পুষ্টি, ডিপ্লোমাসহ ইত্যাদি ব্র্যান্ডের গুঁড়া দুধ কেজিতে ৫০ টাকা বেড়ে গেছে। অন্য কোম্পানিগুলোও দাম বাড়াতে পারে। খোলা চিনি ১৪০ টাকা ও প্যাকেটজাত চিনি ১৭০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। দামও কোথাও কোথাও কেজিপ্রতি ৫ টাকা বাড়তি রাখা হচ্ছে।
দাম বেড়ে যাওয়ার কারণ জানতে চাইলে টাউনহল মার্কেটের শরিফুল স্টোরের বিক্রেতা রইস বলেন, দাম কেন বাড়ছে জানি না। বিক্রি যদি বেশি হয় দাম আরও বাড়বে। আর যদি বিক্রি কম হয় তাহলে দাম আরও কমবে। তবে এখন পর্যন্ত বেচাকেনা ভালোই চলছে।
কারওয়ান বাজারে পণ্য কিনতে আসা বশির উদ্দিন বলেন, পুরো রোজার মাসে বাড়তি দামে জিনিসপত্র কিনতে হয়েছে। ঈদকে কেন্দ্র করে পণ্যের দাম নতুন করে বাড়ানো হয়েছে। পরিস্থিতি যা দেখছি ,সামনে হয়তো আরও দাম বাড়বে। উৎসবকে পুঁজি করে ব্যবসায়ীরা অতি মুনাফা করছে।
নিত্যপণ্যের অস্থির বাজার নিয়ন্ত্রণে নিয়মিত বাজার তদারকির দাবি জানান তিনি।