চ্যালেঞ্জিং সময়ে আছি, ইসরায়েল সব ফ্রন্টে হামলার জন্য প্রস্তুত
পদ্মাটাইমস ডেস্ক : ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে উত্তেজনার পারদ বেশ বেড়েছে। সিরিয়ায় ইরানি কনস্যুলেটে ইসরায়েলের সন্দেহভাজন হামলার কারণে তেহরান এবার পাল্টা হামলা চালাতে পারে বলে জোর শঙ্কা রয়েছে।
এমন অবস্থায় ইসরায়েল চ্যালেঞ্জিং সময়ে রয়েছে বলে জানিয়েছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু। একইসঙ্গে ইসরায়েল সব ফ্রন্টে হামলার জন্য প্রস্তুত বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি।
বৃহস্পতিবার (১১ এপ্রিল) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা আনাদোলু।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সিরিয়ায় তেহরানের কনস্যুলেটে তেল আবিবের সন্দেহভাজন হামলার পর ইরানের সাথে উত্তেজনা বেড়ে যাওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে ইসরায়েলের সেনাবাহিনী সব ফ্রন্ট থেকে চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় প্রস্তুত বলে বৃহস্পতিবার জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু।
টাইমস অব ইসরায়েলের খবর অনুযায়ী, এফ-১৫ ফাইটার জেট ঘাঁটিতে ইসরায়েলি সামরিক পাইলটদের উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে নেতানিয়াহু বলেন, ‘আমরা চ্যালেঞ্জিং সময়ে রয়েছি, আমরা গাজায় একটি যুদ্ধের মধ্যে রয়েছি, যা পুরোদমে চলছে।’
ইরানের সম্ভাব্য হামলার প্রেক্ষিতে তিনি বলেন, ইসরায়েলি সেনাবাহিনী ‘অন্যান্য ফ্রন্ট থেকে চ্যালেঞ্জের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে’।
আনাদোলু বলছে, ইসরায়েলের দূরপাল্লার হামলায় প্রাথমিক অস্ত্র হচ্ছে এফ-১৫ যুদ্ধবিমান। নেতানিয়াহু তার বক্তৃতার জন্য এই ঘাঁটিকে বেছে নেওয়ায় এটিকে ইরানকে লক্ষ্য করার হুমকির একটি ইচ্ছাকৃত ইঙ্গিত বলে মনে করা হচ্ছে।
ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের সাধারণ একটি নীতি আছে: যারা আমাদের আঘাত করবে, আমরা তাদের আঘাত করব।’
গত ১ এপ্রিল সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কে ইরানের কনস্যুলেট ভবনে হামলায় ইরানের সিনিয়র সামরিক নেতাসহ ১৩ জন নিহত হন। ইসরায়েল অবশ্য সেই হামলার দায় স্বীকার করেনি, তবে তারাই এই হামলার পেছনে রয়েছে বলে ব্যাপকভাবে ধারণা করা হচ্ছে।
ইসরায়েলি সেই হামলার ‘কঠোর’ জবাব দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে ইরান। এরপর থেকে ইরানের প্রতিশোধমূলক হামলার আশঙ্কায় ওই অঞ্চলে মার্কিন ও ইসরায়েলি বাহিনীকে উচ্চ সতর্কাবস্থায় রাখা হয়েছে।
মূলত গাজায় উত্তেজনা তীব্রতর হওয়া এবং উত্তেজনা কমানোর আহ্বানের মধ্যেই সিরিয়ায় ইরানি কনস্যুলেটে ইসরায়েলি হামলা এবং প্রত্যাশিত ইরানি প্রতিশোধমূলক হামলার শঙ্কায় মধ্যপ্রাচ্যে সর্বাত্মক আঞ্চলিক যুদ্ধের আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।
এছাড়া ইরানের পাল্টা হামলার আশঙ্কার মধ্যেই ইসরায়েলের পাশে দাঁড়িয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। ইরান হামলা করলে ইসরায়েলের প্রতি দৃঢ় সমর্থনের প্রতিশ্রুতিও দিয়েছেন তিনি।
তিনি বলেছেন, ‘যেমনটা আমি প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুকে বলেছি, ইরান এবং এর প্রক্সি বাহিনীগুলোর হুমকি থেকে ইসরায়েলের নিরাপত্তা রক্ষায় আমাদের প্রতিশ্রুতি লোহার আবরণের মতো দৃঢ়। আমি আবারও বলছি, লোহার আবরণের মতো দৃঢ়।’
অন্যদিকে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন গত বুধবার ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্টের সঙ্গে ফোনে কথা বলেছেন।
মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘পররাষ্ট্রমন্ত্রী ব্লিংকেন ইসরায়েলের নিরাপত্তার প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থনের কথা পুনর্ব্যক্ত করেছেন এবং স্পষ্ট করে জানিয়ে দিয়েছেন যে, ইরান ও তার প্রক্সিদের যেকোনও হুমকির বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র ইসরায়েলের পাশে থাকবে।’
ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি গত বুধবার বলেন, কনস্যুলেটে হামলার জন্য ইসরায়েলকে ‘শাস্তি’ দেওয়া হবে। তিনি বলেন, হামলাটি ইরানের মাটিতে হামলার সমতুল্য।
ভয়াবহ সেই হামলায় অন্তত ১৩ জন নিহত হন, যাদের মধ্যে সাতজন ইসলামিক রেভল্যুশনারি গার্ড কর্পস (আইআরজিসি) সামরিক উপদেষ্টাও ছিলেন। ইরানি কর্তৃপক্ষ এই হামলার জন্য ইসরায়েলকে দায়ী করেছে।