নানা আয়োজনে নববর্ষ বরণের প্রস্তুতি
পদ্মাটাইমস ডেস্ক : দরজায় কড়া নাড়ছে বাঙালির প্রাণের উৎসব পয়লা বৈশাখ। পুরোনোকে বিদায় করে আসছে বাংলা নববর্ষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ। নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে দিনটিকে বরণ করবেন বাঙালিরা। বৈশাখের আগমন উপলক্ষে সর্বত্র চলছে প্রস্তুতি।
নগর কিংবা গ্রামে পয়লা বৈশাখে বসবে বৈশাখী মেলা। মেলায় ক্রেতাদের জন্য রাখা হয় বাঙালির ঐতিহ্যবাহী কারুপণ্য। মাটির তৈরি হাঁড়ি-পাতিল, শিশুদের বিভিন্ন ধরনের খেলনা পাওয়া যাবে মেলায়। এ উপলক্ষে মৃৎশিল্পীরা ব্যস্ত হয়ে পড়েন বর্ণিল সব মাটির জিনিসপত্র বানাতে।
রাজধানীর রমনা বটমূলে প্রতি বছরের মতোই গান, কবিতা ও নানা আয়োজনে নববর্ষকে বরণ করবে ছায়ানট। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের উদ্যোগে মঙ্গল শোভাযাত্রা বের হবে।থাকবে শিল্পকলা একাডেমিসহ বিভিন্ন সংগঠনের নানা আয়োজন।
ছায়ানটের এবারের বর্ষবরণের প্রতিপাদ্য ‘স্বাভাবিকতা ও পরস্পরের প্রতি সম্প্রীতির সাধনা’। এই অনুষ্ঠান ঘিরে এখন চলছে মঞ্চ তৈরিসহ চূড়ান্ত প্রস্তুতি। রমনা পার্ক প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠানস্থলের সীমারেখা টানা হচ্ছে।
বৈশাখের আয়োজন ঘিরে সার্বক্ষণিক নিরাপত্তা দিতে গোটা এলাকা ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরার (সিসি ক্যামেরা) আনছে গণপূর্ত অধিদপ্তর। অন্যদিকে ধানমন্ডির ছায়ানট ভবনে প্রায় দেড়শ শিল্পীকে নিয়ে বর্ষবরণ অনুষ্ঠানের চূড়ান্ত মহড়া চলছে।
ছায়ানটের সাধারণ সম্পাদক লাইসা আহমদ লিসা জানান, পহেলা বৈশাখের আগের দিন মঞ্চে শিল্পীরা চূড়ান্ত মহড়ার অংশ নেবেন। অনুষ্ঠানের নিরাপত্তার জন্য সব ব্যবস্থা নেবে ডিএমপি।
পহেলা বৈশাখ সকাল ৯টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদ থেকে মঙ্গল শোভাযাত্রা শুরু হবে। সেখানে চলছে শেষ সময়ের প্রস্তুতি। বর্তমান বা সাবেক শিক্ষার্থীরা যে যখন সময় পাচ্ছেন, প্রাণের টানে ছুটে আসছেন মঙ্গল শোভাযাত্রার প্রস্তুতিতে।
মঙ্গল শোভাযাত্রার আহ্বায়ক সাদিত সাদমান বলেন, বর্ষবরণে মঙ্গল শোভাযাত্রা শুরু হবে সকাল ৯টা থেকে। এখন চলছে শেষ সময়ের প্রস্তুতি। তৈরি করা হচ্ছে মুখোশ, পুতুল, চাকাসহ দেশি ঐতিহ্যের বিভিন্ন প্রতীক।
শিক্ষার্থীরা রংতুলি, কাগজ, বাঁশ, বেত, চাটাই নিয়ে কাজ করছেন ভাগে ভাগে। মঙ্গল শোভাযাত্রার পোস্টার তৈরির জন্য যে কর্মশালা আয়োজিত হয়েছিল, তা থেকে ৪০ জন শিল্পীর আঁকা পোস্টার নিয়ে বিশেষ প্রদর্শনী হবে শনিবার দুপুরে।
চারুকলা অনুষদে এই আয়োজনের উদ্বোধনের পর মঙ্গল শোভাযাত্রার প্রস্তুতি নিয়ে কথা বলবেন অতিথিরা। বর্ষবরণের আগের দিন শনিবার চারুকলায় রয়েছে লোকগানের
তিনি আরও জানান, কাঠামোর পাশাপাশি এবার মুখোশ, বড় মুখোশ, গাজীর পটের দুটি চিত্র বাঙালি সংস্কৃতির অংশ হিসেবে থাকবে। এবারের শোভাযাত্রায় বৈচিত্র্য আনা হয়েছে মোটিফ ও কালারের মাধ্যমে।পরিবেশনা।
এদিকে বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী জেলায় জেলায় বর্ষবরণের প্রস্তুতি নিয়েছে। এবার তাদের পহেলা বৈশাখের সর্ববৃহৎ অনুষ্ঠানটি হবে যশোরে। এ ছাড়া খুলনা, ময়মনসিংহ, চট্টগ্রাম, চাঁদপুর, নেত্রকোনা, বরিশালে নববর্ষ পালনের প্রস্তুতি চলছে পুরোদমে।
উদীচীর সাধারণ সম্পাদক অমিত রঞ্জন দে বলেন, ‘ছায়ানটের বর্ষবরণ সফল করতে আমরাও সহযোগিতা করছি। বর্ষবরণে উদীচী কার্যালয়ে ঘরোয়াভাবে আনন্দ আয়োজনের ব্যবস্থা রয়েছে।
নববর্ষ আয়োজনের নিরাপত্তা সম্পর্কে পুলিশ সদর দপ্তরের মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের পুলিশ সুপার ইনামুল হক সাগর জানান, ‘পহেলা বৈশাখ বাঙালির ঐতিহ্য। বর্ষবরণ প্রস্তুতির শুরু থেকেই এবার সর্বোচ্চ নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।
পহেলা বৈশাখের সব আয়োজনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হবে। ছায়ানটের অনুষ্ঠানকে নির্বিঘ্ন করতে সব রকম ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। রমনা পার্কে সিসি ক্যামেরা লাগানো হচ্ছে। এ ছাড়া আশপাশের ভবনের সিসি ক্যামেরাগুলোও আমরা মনিটরিং করব।