শত নয়, সহস্র রাইসি তৈরি করে রেখেছে ইরান
পদ্মাটাইম ডেস্ক : ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসিসহ দেশটির শীর্ষস্থানীয় কয়েকজন কর্মকর্তা নিহত হওয়ায় সারাবিশ্বে তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। এই দুর্ঘটনাকে কেন্দ্র করে বিশ্ব দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে পড়েছে। বিশ্বের মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশ এবং দেশগুলোর জনগণ প্রেসিডেন্ট রাইসির জন্য প্রার্থনা অব্যাহত রেখেছে। এর বাইরেও ইরানের প্রেসিডেন্টের জন্য শোক প্রকাশ করেছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন, চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিন পিংসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের নেতারা।
অন্যদিকে পশ্চিমা বিশ্ব এই ইস্যুতে অনেকটা নীরব। তবে যুক্তরাষ্ট্রের একজন সিনেটর এবং ইসরায়েলের কয়েকজন ধর্মীয় নেতা রাইসির মৃত্যুতে উল্লাস প্রকাশ করেছেন।
এই অবস্থায় বিশ্লেষকরা বলছেন, রাইসির মৃত্যুতে ইরানের গতিশীল অবস্থার কোন পরিবর্তন হবে না। পশ্চিমারা ইরানের কিছুই করতে পারবে না। কারণ ইরান এ রকম শত নয়, শহস্র রাইসি তৈরি করে রেখেছে।
ইতোমধ্যে এমন ইঙ্গিতও দিয়েছে ইরানের মন্ত্রিসভা। দেশটির মন্ত্রিসভার এক আনুষ্ঠানিক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ইব্রাহিম রাইসির অদম্য চেতনা সঙ্গে নিয়ে ইরান সরকার ‘সামান্যতম বাধা’ ছাড়াই সব কার্যক্রম অব্যাহত রাখবে। এই দুর্ঘটনা পরিকল্পিত নাকি দুর্ঘটনা তা এখনো স্পষ্ট নয়। তবে ইরান এর আগে পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড মোকাবিলা করেছে অত্যন্ত দক্ষতার সাথে।
উদাহরণসরূপ বলা যায়, দেশটির প্রতিরোধ সংগ্রামের প্রতীক জেনারেল কাশেম সোলাইমানির কথা। আধুনিক ইরানে, বিশেষ করে দেশটির ইসলামি বিপ্লব পরবর্তী ইতিহাসে কাশেম সোলাইমানি এক ‘প্রেরণার’ নাম।
অনেকের কাছেই তিনি ‘প্রতিরোধ সংগ্রামের প্রতীক’। ২০২০ সালের ৩ জানুয়ারি ভোরে বিশ্ববাসী জানতে পারে ইরানের সবচেয়ে জনপ্রিয় জেনারেল ও দেশটির বিপ্লবী বাহিনীর কুদস ফোর্স’র কমান্ডার কাশেম সোলাইমানিকে হত্যা করা হয়েছে। এরপর ইরাকে অবস্থিত মার্কিন সেনা ঘাটিতে সরাসারি হামলা চালায় তেহরান। তবুও ইরানকে দমাতে পারেনি যুক্তরাষ্ট্র-ইসরায়েল।
দুঃসময়ে ইরানে পাশে দাঁড়িয়েছে দেশটির বন্ধুরাষ্ট্রগুলোও। এই তালিকায় রয়েছে তুরস্ক, রাশিয়া, চীন, পাকিস্তান, ভেনেজুয়েলাসহ আরও অনেক দেশ।
তুরস্কের প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান বলেছেন, তিনি তার প্রিয় ভাই রাইসির জন্য আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করছেন। তিনি ইরানের জনগণের প্রতি আন্তরিক সমবেদনাও প্রকাশ করছেন। রাইসির মৃত্যুতে গভীর সমবেদনা জানিয়ে পাকিস্তানে একদিনের জাতীয় শোক ঘোষণা করেছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ। মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিম বলেন, রাইসিসহ ইরানের অন্য কর্মকর্তাদের মৃত্যুতে তিনি গভীরভাবে মর্মাহত।
এই তালিকায় একধাপ এগিয়ে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। রাইসির মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করার পাশাপাশি ইরানের অন্তর্বর্তীকালীন প্রেসিডেন্ট মোহাম্মাদ মোখবারের সঙ্গে কথা বলেছেন তিনি। দুই নেতা রুশ-ইরান সম্পর্ক আরও জোরদার করতে তাদের পারস্পরিক অভিপ্রায়ের ওপর জোর দিয়েছেন।