আত্রাইয়ে রাজা-বাদশাকে বের করতে ভাঙতে হবে দেয়াল

প্রকাশিত: জুন ১১, ২০২৪; সময়: ২:২২ অপরাহ্ণ |
আত্রাইয়ে রাজা-বাদশাকে বের করতে ভাঙতে হবে দেয়াল

নিজস্ব প্রতিবেদক, আত্রাই : নওগাঁর আত্রাইয়ে আসন্ন কুরবানি ঈদে এবারের বড় চমক রাজা-বাদশা। সম্পর্কে তারা মামা ভাগ্নে। রাজার নামের ষাঁড়টির ওজন ২৭ মন আর বাদশার ওজন প্রায় ২২ মন।

একই ঘরে আড়াই বছরেরও বেশি সময় ধরে বড় হয়েছে ষাঁড় দুটি। এখন গোয়ালে জায়গা হচ্ছে না তাদের, তাই বিক্রি করতেই হবে।

গোয়ালের দরজা ছোট, তাই দেয়াল ভেঙ্গে রাজা-বাদশাকে বের করতে হবে। এবার কোরবানি ঈদে বিক্রির জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে তাদের। এই দুই ষাঁড়ের দাম হাঁকাচ্ছেন ২০ লাখ।

নওগাঁর আত্রাই উপজেলার আহসানগঞ্জ ইউনিয়নের বেওলা গ্রামের মজিবর সরদারের ছেলে জাহিদুল সরদার। তার বাড়িতেই বেড়ে ওঠা ষাঁড় রাজা ও বাদশা।

তবে শারীরিক গঠন ও ওজনের কারণে গোয়াল ঘরের দরজা দিয়ে তাদের বের করা সম্ভব হবে না বলে আশঙ্কা করছেন খামারি। ওদের বের করতে হলে দেয়াল ভাঙতে হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে জাহিদুল ইসলাম জানান, তিনি মূলত ধান-চাল, ভুট্টা, সরিষার আড়তদার। বাড়িতে বেশ কয়েকটা ফ্রিজিয়ান জাতের গাভি রয়েছে তার।

আড়াই বছর আগে দুই গাভি থেকে দুটি সাদা-কালো রঙের ষাঁড় বাছুর পেয়েছেন তিনি। বাছুরের শারীরিক গঠন দেখে আর বিক্রি করেননি। শখের বসে ধীরে ধীরে লালন পালন করেছেন।

তিনি আরও জানান, ষাঁড় দুটি প্রস্তুত করতে কোনো রাসায়নিক বা ক্ষতিকর মেডিসিন বা খাবার খাওয়ানো হয়নি। নিজের সন্তানের মতো যত্নে লালন-পালন করেছেন।

জাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘হাট-বাজারে গিয়ে যদি সন্তানদের জন্য যদি কলা, আঙুর আপেল নিয়ে আসি, তাহলে ষাঁড় দুইটার জন্যও কলা বা বিভিন্ন ফলমূল নিয়ে আসতাম। মূলত খৈল-ভ’সি, ভুট্টা, ডাল, বুট, ধানের গুঁড়া, খুদের ভাত এবং খড়-ঘাস এসব খাবার খাইয়ে তৈরি করা হয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘আড়াই বছর আগে গোয়াল ঘরের খুঁটিতে বেঁধে রাখা হয়েছে ওদের। এখনো বের করা হয়নি। এখন ওদের যে শারীরিক গঠন আর যে পরিমাণ ওজন হয়েছে, তাতে গোয়াল ঘরের দরজা দিয়ে আর বের করা সম্ভব নয়। গোয়াল ঘরের দেয়াল ভেঙেই বের করতে হবে।’

দুটি গরু লালন-পালনে তার অনেক টাকা ব্যয় হয়েছে উল্লেখ করে জাহিদুল ইসলাম জানান, ২৭ মন ওজনের রাজার দাম চাওয়া হচ্ছে ১২ লাখ টাকা এবং ২২ মন ওজনের বাদশার দাম চাওয়া হচ্ছে ৮ লাখ টাকা। তবে কী দামে বিক্রি হবে, তা এখনো বলতে পারছেন না তিনি।

এ বিষয়ে আত্রাই উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তর কর্মকর্তা আবু আনাছ বলেন, ‘জাহিদের ষাঁড় দুটি (রাজা-বাদশা) প্রস্তুতে আমরা তাঁকে সার্বিক পরামর্শ দিয়ে সহযোগিতা করেছি।’

তিনি আরও বলেন, ‘এবার কোরবানি উপলক্ষে উপজেলায় ২ হাজার ৪০৫ জন খামারি প্রায় ৫২ হাজার ৪৮৭টি পশু প্রস্তুত করেছেন।

এর মধ্যে ৮ হাজার ৫৬৮টি গরু, ২২টি মহিষ, ৩৭ হাজার ৯০২ ছাগল এবং ৫ হাজার ৯৯৫টি ভেড়া রয়েছে। এই উপজেলায় চাহিদা রয়েছে ২৬ হাজার ৫৪০টি। ফলে চাহিদা পূরণের পর অতিরিক্ত প্রায় ২৬ হাজার পশু বিক্রি হবে।’

 

পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে