মহাদেবপুরে ইউপি সদস্যের বিরুদ্ধে অন্যের বউ ভাগিয়ে বিয়ে করার অভিযোগ
নিজস্ব প্রতিবেদক, মহাদেবপুর (নওগাঁ) : নওগাঁর মহাদেবপুরে এক ইউপি সদস্যের বিরুদ্ধে ঔষধ কোম্পানির প্রতিনিধির এক সন্তানসহ বউকে ভাগিয়ে নিয়ে বিয়ে করার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় এলাকায় চলছে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা।
জানা গেছে, উপজেলার ভীমপুর ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়াডের সদস্য ও সোনাপুর গ্রামের মৃত হাবিবুর রহমানের ছেলে ইউপি সদস্য মো. আজমল হোসেন রুমুন এক ঔষধ কোম্পানির প্রতিনিধির বউকে ভাগিয়ে নিয়ে বিয়ে করেছেন। এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, বিগত কয়েক বছর পূর্বে সোনাপুর গ্রামের মৃত মছির উদ্দিনের মেয়ে ফৌজিয়ার খাতুন ওরফে টুম্পার সাথে ওই ইউপি সদস্য প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তাকে ভাগিয়ে নিয়ে বিয়ে করেছিলেন। তাদের সংসারে একটি ছেলে সন্তান হয়। এর কয়েক বছর পর উভয়ের মধ্যে বনিবনা না হওয়ায় তাদের বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটে। তাদের সন্তানটি ইউপি সদস্যের কাছেই থাকে।
এরপর ইউপি সদস্য আজমল হোসেন রুমন উপজেলার উত্তরগ্রাম ইউনিয়নের উত্তরগ্রামের এক নারীকে বিয়ে করে। অন্যদিকে ফৌজিয়ার খাতুন টুম্পার আপন মামাতো ভাই ঔষধ কোম্পানির প্রতিনিধি ধামইরহাট উপজেলার কাজিপুর গ্রামের মো. আব্দুল বারী সরদারের ছেলে মো. মাহবুবুল আলম মিঠুর সাথে উভয় পরিবারের সম্মতিতে ২০১৯ সালে তাদের বিয়ে হয়। সেখানেও একটি ছেলে সন্তানের জন্ম হয়। এর মাঝে ইউপি সদস্য রুমন তার দ্বিতীয় স্ত্রী থাকা অবস্থায় টুম্পাকে নিয়ে আবারও পালিয়ে এবং উভয় পরিবারের চাপে কয়েকদিন পর টুম্পাকে তার পরিবারের কাছে ফেরত দিতে বাধ্য হয় রুমন। কিছুদিন পূর্বে ইউপি সদস্য রুমুন উত্তরগ্রামে বিয়ে করা তার দ্বিতীয় স্ত্রীকে তালাক দেয়। গত (২৯জুন) শনিবার বেলা প্রায় ১১টার দিকে মাহবুবুল আলম এর স্ত্রী ফৌজিয়া খাতুন টুম্পাকে বদলগাছী ভাড়া বাসা থেকে এক সন্তানসহ পালিয়ে নিয়ে অজানার উদ্দেশ্যে পাড়ি জমায় ইউপি সদস্য রুমন।
এর কয়েকদিন পরে ইউপি সদস্য রুমন টুম্পা ও তার সন্তানকে নিয়ে নিজ বাড়িতে ফিরে এলে এলাকায় শুরু হয় আলোচনা-সমালোচনার ঝড়। এখন তারা সোনাপুর গ্রামে রুমন এর বাড়িতে স্বামী-স্ত্রী হিসেবে বসবাস করছে। এ বিষয়ে ইউপি সদস্য মো. আজমল হোসেন রুমন জানায়, ৬ মাস পূর্বে ফৌজিয়া খাতুন টুম্পা তার স্বামীকে তালাক দেয় এবং সে কয়েকদিন আগে টুম্পাকে বিয়ে করেছে। টুম্পার স্বামী মো. মাহবুবুল আলম এর সাথে কথা হলে তিনি জানান, গত ২৬ জুন বুধবার পর্যন্ত বদলগাছি ভাড়া বাসায় তার স্ত্রী ফৌজিয়া খাতুন টুম্পা ও সন্তানকে নিয়ে একসাথে থেকেছেন। পরদিন বৃহস্পতিবার স্ত্রী-সন্তানকে বাসায় রেখে তার কর্মস্থল আদমদিঘীতে ফিরে গেছেন।
এরপর শুক্রবারেও তার স্ত্রী টুম্পার সাথে মোবাইলে কথা হয়েছে। শনিবারে তার স্ত্রীর ফোন বন্ধ পেয়ে শ^শুড়বাড়ীসহ সকল আত্মীয়দের বাড়ীতে ফোনে যোগাযোগ করে তার কোন সন্ধান পাননি। পরবর্তীতে ইউপি সদস্য মো. আজমল হোসেন রুমনের ফোন থেকে মেসেঞ্জারে একটি তালাক নামা পান তিনি। সেখানে দেখা যায়, গত ডিসেম্বরের ১৬ তারিখে তাকে তালাক দিয়েছে মর্মে লেখা রয়েছে। তিনি আরো অভিযোগ করেন যে, মৈনম এলাকার এক কাজীর মাধ্যমে ব্যাকডেটে এ ভূয়া তালাকনামা তৈরি করা হয়েছে। এ বিষয়ে আইনগত পদক্ষেপ নেবেন বলেও জানান তিনি।
এলাকায় সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ইউপি সদস্য রুমন এ নিয়ে তিনবার টুম্পাকে নিয়ে পালিয়ে যাওয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে এলাকায় সমালোচনার ঝড় উঠেছে। গত ইউপি নির্বাচনে আজমল হোসেন রুমন মেম্বার হওয়ার পর “ভালোবাসার মেম্বার” নামে একটি ফেসবুক আইডিও চালু করেন। অনেকেই বিনোদন করে বলা-বলি করছে, ভালোবাসার মেম্বারের টুম্পার প্রতি ভালোবাসা শেষ হয় নাই, তাই এবার হ্যাটট্রিক করেছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয়রা বলেন, একজন জনপ্রতিনিধির এমন কাজ করা মোটেও ঠিক হয়নি। এ বিষয়ে জানতে ভীমপুর ইউপি চেয়ারম্যান রামপ্রসাদ ভদ্রের মোবাইলে বারবার ফোন দিলেও তিনি তা রিসিভ করেননি।