বাঘায় গৃহবধু হত্যা মামলার পলাতক আসামীর মৃত্যু
নিজস্ব প্রতিবেদক, বাঘা : রাজশাহীর বাঘায় গৃহবধুর আত্নহত্যার তিনদিন পর, সোমবার (১৫ জুলাই) রাতে ওই গৃহবধুর স্বামী জারমান আলীও গলায় ফাঁস দিয়ে আত্নহত্যা করেছেন। এর আগে গত শুক্রবার (১২ জুলাই) রাতে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্নহত্যা করে, উপজেলার আড়ানী ইউনিয়নের ঝিনা মধ্যপাড়া গ্রামের জারমান আলী (২০)’স্ত্রী সাগরিকা খাতুন (১৮)। জারমান ওই গ্রামের নওশাদ আলীর ছেলে। গৃহবধু সাগরিকা খাতুন নাটোরের বাগাতিপাড়া উপজেলার নওশারা-ঘোরলাজ গ্রামের আবদুল গাফফার আলীর মেয়ে।
হত্যার অভিযোগ এনে-জারমান আলীসহ ৪জনকে আসামী করে থানায় মামলা করেন, গৃহবধু সাগরিকার পিতা গাফফার আলী। ঘটনার দিন নওশাদ আলী ও মা বুলুয়ারা বেগমকে আটক করে পুলিশ। তারা কারাগারে বন্দী রয়েছেন। মামলায় পলাতক ছিলেন জারমান আলী। মামলায় আসামী করা হয়েছে জারমান আলীর আরেক মাকেও।
জানা গেছে, গত জুন মাসের প্রথম সপ্তাহে জারমান আলীর সাথে বিয়ে হয় সাগরিকার। বিয়ের সময় ১লক্ষ টাকা যৌতুকের মধ্যে ৫০ হাজার টাকা দেন মেয়ের পরিবার। গাফফার আলী অভিযোগ করেছেন,বাঁকি ৫০ হাজার টাকা না দেওয়ার তার মেয়েকে নির্যাতন করা হতো। ঘটনার দিন নির্যাতনে মেয়ের মৃত্যুর পর রশিতে ঝুলিয়ে আত্নতহ্যার প্রচার করা হয়েছে।
ওই সময় জারমান আলীর পরিবার দাবি করেছেন, শুক্রবার (১২ জুলাই) সন্ধ্যার পর ঝিনা বাজারে যান জারমান আলী । রাত ৮টার দিকে বাড়িতে ফিরে দেখেন ঘরের ভেতর থেকে ছিটকানি দেওয়া। ডাকাডাকির এক পর্যায়ে সাড়া শব্দ না পেয়ে ঘরের দরজা ভেঙ্গে ভেতরে গিয়ে সাগরিকাকে তীরের সাথে ঝুলতে দেখেন। তাকে উদ্ধার করে পুঠিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেন। সেখানকার কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষনা করেন। খবর পেয়ে পুঠিয়া থানার পুলিশ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে নওশাদ আলী ও বুলুয়ারা বেগমকে আটক করে। ময়না তদন্তের পর সাগরিকা খাতুনের লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
পুলিশ জানায়, খবর পেয়ে মঙ্গলবার(১৬ জুলাই) সকালে জারমান আলীর নিজ বাড়ির ৪০০ মিটার দক্ষিণে জৈনক ইমাজ আলীর আম বাগানে গলায় ফাঁস দেওয়া ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। এ ঘটনায় একটি ইউডি মামলা হয়েছে।
প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, মামলায় পিতা-মাতা জেলে,তিনিও আসামী। এমন হতাশাগ্রস্থ হয়ে আত্মহত্যার পথ বেছে নিতে পারেন।
বাঘা থানার পরিদর্শক (তদন্ত ) সোয়েব খান বলেন, ময়না তদন্ত রিপোর্ট পেলে মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবে।