১২ ঘন্টা পর অবরুদ্ধ ভিসি উদ্ধার, রাবি রণক্ষেত্র

প্রকাশিত: জুলাই ১৭, ২০২৪; সময়: ১০:১৯ অপরাহ্ণ |
১২ ঘন্টা পর অবরুদ্ধ ভিসি উদ্ধার, রাবি রণক্ষেত্র

নিজস্ব প্রতেবেদক : পাঁচ দফা দাবিতে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) উপাচার্য অধ্যাপক গোলাম সাব্বির সাত্তারসহ প্রশাসনের কর্তাব্যক্তিদের প্রশাসন ভবনে রেখে গেটে তালা দেন কোটা আন্দোলনকারীরা। এতে অবরুদ্ধ হয়ে পড়েন তাঁরা। তবে প্রায় ১২ ঘন্টার পর তাদের উদ্ধার করেছে রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশ ও রেঞ্জ পুলিশ, বিজিবি ও র‌্যাবের সমন্বেয়ে যৌথ বাহিনীর বিশেষ দল।

বুধবার (১৭ জুলাই) সন্ধ্যা ৭ টায় রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের নেতৃত্বে যৌথ অভিযানে রাবির ভিসিকে প্রশাসনিক ভবন থেকে উদ্ধার করে নিরাপদ জায়গায় নিয়ে যায় পুলিশ। আরএমপির তিন শতাধিক পুলিশ সদস্য এই অভিযানে অংশ নেয়।

রাজশাহী রেঞ্জের ডিআইজি আনিসুর রহমান বলেন, কোটা সংস্কার আন্দোলনে সাধারণ শিক্ষার্থীরা হল ছাড়ার নির্দেশনা অমান্য করে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা প্রত্যাহার, ছাত্র রাজনীতি বন্ধসহ বিভিন্ন দাবি নিয়ে রাবির ভিসিকে অবরুদ্ধ করে রাখে। শিক্ষার্থীরা প্রশাসনিক ভবনের সামনে দিনব্যাপী অবস্থান করে রাবির ভিসিকে অবরুদ্ধ করে রাখে। সন্ধ্যায় যৌথ অভিযানে রাবির ভিসিকে প্রশাসনিক ভবন থেকে ১২ ঘন্টা পরে উদ্ধার করে তার বাস ভবনে নিয়ে যাওয়া হয়। এ সময় ছাত্রদের ছত্রভঙ্গ করতে বেশ কিছু টিয়ারসেল ও সাউন্ড গ্রেনেড ছুঁড়া হয়। তবে কোন হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধসহ পাঁচ দফা দাবি জানিয়ে প্রশাসনকে আলটিমেটাম কোটা সংস্কারে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। বিশ্ববিদ্যালয়ের সৈয়দ নজরুল ইসলাম প্রশাসনিক ভবনের গেটে তালা দিয়ে উপাচার্যকে অবরুদ্ধ করে রাখেন তাঁরা।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের কাছে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে লিখিতভাবে পাঁচ দফা দাবি জানান আন্দোলনকারীরা। বেলা দুইটার মধ্যে এসব দাবির ব্যাপারে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য প্রশাসনকে দাবি জানান তাঁরা। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কর্তাব্যক্তিরা দীর্ঘ আলোচনা শেষে বেলা আড়াইটার দিকে শিক্ষার্থীদের দাবির বিষয়ে তাঁদের সিদ্ধান্ত জানান। এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যসহ প্রশাসনের কর্তাব্যক্তিরা আন্দোলনকারীদের তোপের মুখে পড়েন।

আন্দোলনকারীরা বলছেন, তাঁদের পাঁচ দফা দাবির একটিও প্রশাসন মেনে নেয়নি। এ জন্য প্রশাসনকে নতুন করে আরও সময় বেঁধে দেওয়া হয়েছে। একপর্যায়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক গোলাম সাব্বির সাত্তারসহ প্রশাসনের কর্তাব্যক্তিদের প্রশাসন ভবনে রেখে গেটে তালা দেন আন্দোলনকারীরা। এতে অবরুদ্ধ হয়ে পড়েন তাঁরা।

আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের দাবি

১. ক্যাম্পাসে আজীবন সব ধরনের ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ করা। এ জন্য লিখিতভাবে প্রভোস্টদের স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা। ক্যাম্পাসে কোনো সন্ত্রাসী যাতে ঢুকতে না পারে, সেই ব্যবস্থা করা। বঙ্গবন্ধু হলের প্রভোস্টকে পদত্যাগ করতে হবে।
সৈয়দ নজরুল ইসলাম প্রশাসনিক ভবনের গেটে তালা দেওয়া। সেখানে শিকল গলায় আন্দোলনকারী একজন বসে আছেন।

২. হল খালি করার করার নির্দেশ ও ক্যাম্পাস ছুটির সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করতে হবে। মেসমালিকদের চিঠি দিয়ে মেসগুলো খোলা রাখতে হবে ও হলের সিট ফাঁকা থাকা সাপেক্ষে প্রভোস্টকে বিজ্ঞপ্তি দিয়ে সিট বরাদ্দ দিতে হবে।

৩. চলমান আন্দোলন নিয়ে যাতে কোনো মামলা না হয়, তা নিশ্চিত করতে হবে। আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।

৪. প্রশাসনিকভাবে মিডিয়ার উপস্থিতিতে অভিযান চালিয়ে ক্যাম্পাস অস্ত্রমুক্ত করতে হবে।

৫. ছাত্রলীগের দখল করা কক্ষগুলো গণরুমে পরিণত করতে হবে।

পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে