নওগাঁর ধামইরহাটে আমন ধান রোপনে ব্যস্ত সময় পার করছে কৃষকরা

প্রকাশিত: জুলাই ৩০, ২০২৪; সময়: ৭:১৫ অপরাহ্ণ |
নওগাঁর ধামইরহাটে আমন ধান রোপনে ব্যস্ত সময় পার করছে কৃষকরা

নিজস্ব প্রতিবেদক, ধামইরহাট (নওগাঁ) : নওগাঁ জেলার ধামইরহাট উপজেলায় ধুমছে শুরু হয়েছে আমন ধান রোপণের মৌসুম। গ্রাম বাংলার চিরচেনা দৃশ্যের মতো এখানেও মাঠজুড়ে দেখা যাচ্ছে কৃষকদের কর্ম ব্যস্ততা। বিভিন্ন গ্রামে এখন কৃষকরা সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত আমন ধান রোপণে ব্যস্ত সময় পার করছেন।

এই মৌসুমে আশানুরূপ বৃষ্টিপাতের ফলে আমন ধান রোপণের জন্য মাটি তৈরি হয়েছে বেশ ভালোভাবেই। সেই সাথে সেচের সু-ব্যবস্থাও রয়েছে, যা কৃষকদের জন্য অত্যন্ত সহায়ক হয়েছে। উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে মোট ২১ হাজার হেক্টর জমিতে আমন ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এর মধ্যে অধিকাংশ জমিতেই ইতিমধ্যে চারা রোপণ সম্পন্ন হয়েছে।

মঙ্গলকোঠা গ্রামের স্থানীয় কৃষক আশরাফুল ইসলাম বলেন, “এই বছর বৃষ্টিপাত ও সেচের ব্যবস্থা ভালো থাকায় আমন ধান রোপণে কোনো সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়নি। আমরা আশা করছি, এ মৌসুমে ফলন ভালো হবে এবং আমরা লাভবান হব।
অন্যান্য কৃষকরাও একই ধরনের আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন। তারা বলছেন, আমন ধানের ফলন ভালো হলে তাদের আর্থিক সচ্ছলতা বাড়বে এবং ঋণের বোঝা কমবে।

এদিকে আমন ধান রোপণে ব্যস্ত সময় পার করছেন স্থানীয় শ্রমিকরাও। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত মাঠে কাজ করে যাচ্ছেন তারা। শ্রমিক ইলিয়াস হোসেন বলেন, “আমরা প্রতিদিন সকালে এসে কাজ শুরু করি এবং বিকাল পর্যন্ত কাজ করি। বৃষ্টিপাত ও সেচের সু-ব্যবস্থা থাকায় মাটি খুব ভালোভাবে তৈরি হয়েছে, ফলে রোপণে কোনো সমস্যা হচ্ছে না। তবে এই মুহূর্তে বৃষ্টিপাত না হওয়ায় পানি সংকট আছে, সেচ ব্যবস্থা বেশি জরুরী বলে মনে করছি।

কৃষক ও শ্রমিকদের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় ধামইরহাটে আমন ধানের ভালো ফলন আশা করছে কৃষি বিভাগ। আবহাওয়া পরিবেশ অনুকুল থাকায় শ্রমিকদের কাজের সুযোগ বৃদ্ধির পাশাপাশি তাদের আর্থিক অবস্থাও উন্নত হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

ধামইরহাট উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ মো. তৌফিক আল জুবায়ের জানান, “আমন ধান রোপণের জন্য কৃষকদের সব ধরনের পরামর্শ এবং সহায়তা প্রদান করা হচ্ছে। ইতিমধ্যেই ১১ হাজার ৩৫০ হেক্টর জমিতে রোপা আমন চারা রোপন সম্পন্ন হয়েছে, যা মোট অর্জনের ৫৫ ভাগ। সঠিকভাবে চাষাবাদ ও রোগবালাই প্রতিরোধের জন্য বিভিন্ন সময় কৃষক-কৃষনীদের নিয়ে প্রশিক্ষণ ও কর্মশালা পরিচালনা করা হয়েছে” কৃষি উপ-সহকারীগণ কৃষকদের কল্যাণে মাঠে দিনভর কাজ করে যাচ্ছে।

তিনি আরও জানান, “আমন ধান চাষে সঠিক পদ্ধতি অনুসরণ করলে এবং সময়মতো সার ও সেচ প্রদান করলে ভালো ফলন পাওয়া সম্ভব। আমরা নিয়মিত কৃষকদের জমি পরিদর্শন করে প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা দিচ্ছি। আমন ধান চাষে প্রযুক্তির ব্যবহারের দিকেও নজর দিচ্ছে কৃষি বিভাগ। আধুনিক প্রযুক্তির সাহায্যে ধানের উৎপাদন বৃদ্ধি করা হচ্ছে। বিশেষ করে, উন্নত মানের বীজ এবং সার ব্যবহার করে চাষাবাদ করা হচ্ছে, যা ফলন বৃদ্ধিতে সহায়ক ভূমিকা রাখছে।

আমন ধানের উৎপাদন ভালো হলে কৃষকদের আয় বাড়াবে এবং গ্রামীণ অর্থনীতি সমৃদ্ধ হবে। স্থানীয় বাজার ছাড়াও দেশের বিভিন্ন স্থানে ধান সরবরাহ করা হবে, যা দেশের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সহায়ক হবে।

ধামইরহাটের কৃষকরা আশাবাদী যে, এই বছর তারা আমন ধান থেকে ভালো উৎপাদন পাবেন এবং এটি তাদের আর্থিক সচ্ছলতা নিশ্চিত করবে। তবে, আবহাওয়া ও প্রাকৃতিক দুর্যোগের কথা মাথায় রেখে সতর্ক থাকারও পরামর্শ দিয়েছেন কৃষি বিশেষজ্ঞরা।

পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে