মহাদেবপুরে যৌথ ব্যবসার ১১০ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ
নিজস্ব প্রতিবেদক, মহাদেবপুর : নওগাঁর মহাদেবপুরে মাসুদ রানা নামে এক ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে যৌথ ব্যবসায়ের প্রায় ১১০ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। শনিবার (৩ আগস্ট) সন্ধ্যায় মাসুদ রানার ছোট ভাই সাজেদুর রহমান সাজু উপজেলা সদরে তার ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে এসব অভিযোগ করেন।
তিনি বলেন, ২০১৭ সালে তাদের পিতা মোদাচ্ছের আলি মারা যাবার সময় তাদের ২৬ একর জমি, চারটি অটোমেটিক রাইস মিল, একটি ফিলিং স্টেশন, আটটি ট্রাক, একটি ট্যাংক লড়ি ও বেশ কয়েকটি বড় পুকুরে মাছের চাষসহ বিপুল পরিমাণ সম্পদ রেখে যান। বাবার মৃত্যুর পর এসব সম্পদ দেখাশোনা ও ব্যবসা পরিচালনা করেন বড়ভাই মাসুদ রানা।
এর পরবর্তী সময়ে মাসুদ রানা ও সাজেদুর রহমান সাজুর যৌথ স্বাক্ষরে আল-আরাফাহ ইসলামি ব্যাংক হতে ১০৬ কোটি টাকার সিসি ঋণ উত্তোলন করেন করেন তিনি। বিশাল এ ব্যবসা পরিচালনার জন্য যেকোনো মুহুর্তে টাকার প্রয়োজন হতে পারে, এমন অজুহাতে মাসুদ রানা সকল হিসাবের চেকবইতে ফাঁকা চেকে সাজুর স্বাক্ষর করে নেন।
২০২২-২০২৩ সালের মধ্যে মাসুদ রানা আল-আরাফাহ ইসলামি ব্যাংক হতে ১০৬ কোটি টাকা সম্পূর্ণ উত্তোলন করে যৌথ ব্যবসায় বিনিয়োগ না করে সেই টাকায় তার নিজের ও স্ত্রীর নামে মহাদেবপুর, পোরশা ও নওগাঁ শহরে কয়েকটি বহুতল ভবন এবং ১০ একর কেনেন। এতে যৌথ ব্যবসায় আর্থিক সংকট ও ধস দেখা দেয়।
সাজু, তার মা সাহারা বেওয়া ও বোন মৌসুমী আকতার এসব বিষয়ে মাসুদ রানার কাছে জানতে চাইলে তিনি ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান থেকে আত্মগোপনে চলে যান। এই ঘটনার পর বিভিন্ন ব্যাংকে খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন যে, যৌথ ঋণের ১০৬ কোটি টাকা, সাজুর নামে আইএফআইসি ব্যাংক, ষ্টান্ডার্ড ব্যাংক ও রূপালি ব্যাংকে খোলা দুই কোটি টাকার চারটি এফডিআর স্বাক্ষর জালিয়াতি করে মাসুদ রানা উত্তোলন করে নেন।
তাদের মা সাহারা বেওয়ার অংশের সমুদয় সম্পত্তি রেজিষ্ট্র্রি করে নিয়ে দুই কোটি বিশ লক্ষ টাকার চেক দিলেও তাদের মা সে টাকা তুলতে পারেননি। মাসুদ নিজেই সে টাকা উত্তোলন করে আত্মসাৎ করেন।
এসব বিষয় পারিবারিকভাবে বার বার সমাধানের চেষ্টা করা হলেও মাসুদ রানা কৌশলে কালক্ষেপণ করে ছোট ভাই সাজু, মা সাহারা বেওয়া ও বোন মৌসুমীর বিরুদ্ধে একের পর এক মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানী করছেন। সংবাদ সম্মেলনে তাদের মা ও বোন উপস্থিত ছিলেন।
তারা ব্যাংক ঋণ পরিশোধ, স্বাক্ষর জাল করে টাকা উত্তোলন, মিথ্যা মামলা দায়ের ও অন্যান্য বিষয় তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্টদের প্রতি অনুরোধ জানান। এ ব্যাপারে জানতে মাসুদ রানার মোবাইলফোনে বার বার কল দেওয়া হলেও তিনি তা রিসিভ করেননি।