আ.লীগ নেতাদের বাড়ি, কার্যালয়, থানায় ভাঙচুর-লুটপাট, নিহত ১৪
পদ্মাটাইমস ডেস্ক : শেখ হাসিনার পদত্যাগ ও দেশত্যাগের খবরে সাতক্ষীরায় হামলা ও সহিংসতায় ১৪ জন নিহত হয়েছে।
স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সোমবার (৫ আগস্ট) সন্ধ্যায় সাতক্ষীরা শহরে আওয়ামী লীগ নেতাদের বাড়ি, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও কার্যালয়ে ভাঙচুর-লুটপাট করা হয়। তাদের কারও কারও বাড়ি আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেওয়া হয়।
এদিকে সাতক্ষীরা সদর, শ্যামনগর থানা ও কলারোয়া থানা এবং ট্রাফিক কার্যালয়ে অগ্নিসংযোগ ও লুটপাটের কথা জানিয়েছে পুলিশ।
প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় সূত্র জানায়, শেখ হাসিনার দেশত্যাগের খবর ছড়িয়ে পড়ার পর প্রতাপনগর ইউনিয়নের কয়েক হাজার লোক জড়ো হয়ে সন্ধ্যা ৬টার দিকে আওয়ামী লীগ নেতা জাকির হোসেনের কল্যাণপুরের বাড়িতে হামলা করে। এসময় জাকির বন্দুক দিয়ে গুলি করেন। গুলিতে ঘটনাস্থলেই আদম আলী, আনাজ বিল্লাহ ও আনাজ আলী (১৮) মারা যান।
এরপর জাকিরের বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয় হামলাকারীরা। তারা রাত ৮টার দিকে জাকিরসহ তার পাঁচ স্বজনকে পিটিয়ে হত্যা করে।
নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে আছেন জেলার আশাশুনি উপজেলার প্রতাপনগর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও কল্যাণপুর গ্রামের বাসিন্দা জাকির হোসেন, তার ভাই জাহাঙ্গীর হোসেন, ভাইপো সজিব হোসেন, ভাগনে আশিকুর রহমান, স্বজন সাকের আলী ও গাড়িচালক শাহিন হোসেন। এছাড়া আশাশুনি থানার কল্যাণপুর গ্রামের আদম আলী (২৮), কোলা গ্রামের আনাজ বিল্লাহ (১৭) ও কুড়িকাউনিয়া গ্রামের আনাজ আলী (১৮), সদর উপজেলার বৈকারি গ্রামের আওয়ামী লীগের কর্মী আসাফুর রহমান (৪০), মৃগাডাঙ্গা গ্রামের তৌহিদ ইসলাম (৩০), সাইফুল ইসলাম (২৫), বিএনপির কর্মী জাহিদ হোসেন (২৮) ও ফারুক হোসেন (৩৫) নিহত হয়েছেন।
একইভাবে সোমবার রাতে সদর উপজেলার বৈকারি গ্রামের আওয়ামী লীগ কর্মী আসাফুর রহমানকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। রাত ৯টার দিকে মৃগাডাঙ্গা আওয়ামী লীগ ও বিএনপির কর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষে মৃগাডাঙ্গা গ্রামের আওয়ামী লীগ কর্মী তৌহিদ ইসলাম, সাইফুল ইসলাম, বিএনপির কর্মী জাহিদ হোসেন (২৮) ও ফারুক হোসেন নিহত হন।
আশাশুনি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বিশ্বজিত অধিকারি এ তথ্য নিশ্চিত করে জানান, নিহতদের মরদেহগুলো উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানকে সদর হাসপাতালে পাঠানোর জন্য বলা হয়েছে।
অপরদিকে সাতক্ষীরা কারাগার থেকে যেসব আসামিকে বিক্ষুব্ধ জনতা তালা ভেঙে বের করে নিয়ে গিয়েছিল তারা অনেকে মঙ্গলবার সকাল থেকে আবার স্ব ইচ্ছায় কারাগারে প্রবেশ করছেন বলে কারা সূত্রে জানা গেছে।
সাতক্ষীরার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হুমায়ূন কবির বলেন, কয়েকটি বাড়ি ভাঙচুর করা হয়েছে বলে শুনেছি। পরিস্থিতির উন্নতির চেষ্টা চলছে। সবাইকে ঘরে ফিরে যেতে সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে মাইকিং করা হচ্ছে।
এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত সাতক্ষীরায় স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে জনজীবন। দোকানপাট, ব্যাংক, অফিস-আদালত খোলা ছিল। বাস না চললেও অন্যান্য যান চলাচল ছিল স্বাভাবিক।