বাংলাদেশ বেতারের কর্মকর্তারা আন্দোলনে, ব্যাচভিত্তিক পদোন্নতিসহ নানা দাবি
নিজস্ব প্রতিবেদক : বিসিএস (তথ্য) ক্যাডারের অন্তর্ভুক্ত বাংলাদেশ বেতারের বিভিন্ন গ্রেডে কর্মকর্তারা দীর্ঘদিন যাবৎ পদোন্নতিবঞ্চিত। বর্তমানে বিদ্যমান আন্তক্যাডার–বৈষম্য নিরসন করা সময়ের দাবি। আন্তক্যাডার–বৈষম্য নিরসন করা না গেলে বৈষম্যহীন সমাজ এবং রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করা অত্যন্ত দুরূহ হয়ে যাবে। আজ সোমবার সকালে আগারগাঁওয়ে বেতার ভবনের সামনে ব্যাচভিত্তিক পদোন্নতিসহ নানা দাবিতে আন্দোলনে বেতারের কর্মকর্তারা কর্মসূচি পালন করার সময় এসব কথা বলেন।
মানববন্ধনে দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে একটি উন্নত ও বৈষম্যহীন ব্রডকাস্টিং সার্ভিস বিনির্মাণে বাংলাদেশ বেতারের কর্মকর্তারা নিজেদের বৈষম্যের বিষয়ে বলতে গিয়ে জানান, বিসিএস (তথ্য) ক্যাডারের অন্তর্ভুক্ত বাংলাদেশ বেতারের বিভিন্ন গ্রেডে কর্মকর্তারা দীর্ঘদিন যাবৎ পদোন্নতিবঞ্চিত।
আন্তক্যাডার–বৈষম্য তো আছেই এমনকি তথ্য ক্যাডারভুক্ত হয়েও বেতারের কর্মকর্তারা ক্যাডারের অভ্যন্তরীণ বৈষম্যেরও শিকার। প্রথমত, তথ্য ক্যাডারে নিয়োগপ্রাপ্ত হলেও কোনো এক রহস্যময় কারণে এ ক্যাডারটিকে বিভিন্ন সময় তথ্য বেতার বা বেতার ক্যাডার বলে পরিচিতি দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে; যদিও পিএসসির সার্কুলারে এ ধরনের কোনো ক্যাডারের অস্তিত্ব নেই। দ্বিতীয়ত, বাংলাদেশ বেতারের অভ্যন্তরে অনুষ্ঠান, বার্তা ও প্রকৌশল—তিনটি উইং বিদ্যমান। বাংলাদেশ বেতারের অনুষ্ঠান বিভাগের কর্মকর্তারা এখানেও চরমভাবে বঞ্চিত ও বৈষম্যের শিকার।
দাবি তুলে কর্মকর্তারা বলেন, বাংলাদেশ বেতারের অনুষ্ঠান বিভাগের ২৪ থেকে ২৭তম বিসিএসের কর্মকর্তারা ষষ্ঠ গ্রেডে, যাঁদের অধিকাংশ ১৪ বছরের অধিক এবং ২৮ থেকে ৩৭তম নবম গ্রেডের অধিকাংশ কর্মকর্তা ৮ থেকে ১৪ বছর ধরে পদোন্নতিবঞ্চিত। উল্লেখ্য, এসব ব্যাচের কর্মকর্তারা এখনো পর্যন্ত তাঁদের প্রথম প্রমোশনই পাননি ২৭ থেকে ২৪তম গ্রেডের কর্মকর্তারা। ক্ষেত্রবিশেষে ৯ থেকে ১৫ বছর একই গ্রেডে (ষষ্ঠ) রয়ে গেছেন, যেখানে প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তাদের মধ্যে ২৯ ব্যাচ ইতিমধ্যে ৫ম গ্রেডের পদে পদোন্নতি পেয়েছেন। একই বিভাগের ৯ম, ১৩তম ও ১৫তম বিসিএসের কর্মকর্তারা এখনো চতুর্থ গ্রেডে আছেন।
এ ছাড়া বেতারের অনুষ্ঠান, বার্তা ও প্রকৌশল বিভাগের সব কর্মকর্তা ব্যাচভিত্তিক পদোন্নতিবঞ্চিত।
কর্মকর্তাদের ব্যাচভিত্তিক প্রশাসন ক্যাডারের মতো পদোন্নতির তারিখ থেকে ভূতাপেক্ষ পদোন্নতি প্রদান করা। শূন্য পদ না থাকলে বা পদ সৃজন হওয়ার আগপর্যন্ত ভূতাপেক্ষ ইনসিট/সুপার নিউমারারি পদে পদোন্নতি প্রদান করা না হলে বৈষম্যহীন প্রশাসন বিনির্মাণ প্রায় অসম্ভব। বাংলাদেশ বেতারের অভ্যন্তরীণ এবং ক্যাডার হিসেবে সামগ্রিক বৈষম্য নিরসনে তথ্য ক্যাডার একীভূত করাসহ উপসচিব পদে ন্যায্যতার ভিত্তিতে বাংলাদেশ বেতারের কর্মকর্তাদের নিয়োগ প্রদান করা জরুরি। এ ছাড়া বর্তমানে বিদ্যমান আন্তক্যাডার–বৈষম্য নিরসন করা সময়ের দাবি। আন্তক্যাডার–বৈষম্য নিরসন করা না গেলে বৈষম্যহীন সমাজ এবং রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করা অত্যন্ত দুরূহ হয়ে যাবে।