বাগমারার ভবানীগঞ্জ সরকারী বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের অধ্যক্ষের পদত্যাগ
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক, বাগমারা : বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের তোপের মুখে পদত্যাগ করেছেন রাজশাহীর বাগমারা উপজেলার ভবানীগঞ্জ সরকারী বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের অধ্যক্ষ হাতেম আলী। তিনি ছয় ঘন্টা অবরুদ্ধ ছিলেন। সকাল থেকেই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মীরা কলেজ চত্বরে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ মিছিল-সমাবেশ করেছিলেন।
বুধবার (২১ আগষ্ঠ) বিকেল তিনটার দিকে তিনি পদত্যাগ করে কলেজ চত্বর ত্যাগ করেন অধ্যক্ষ। এ সময় শিক্ষার্থীরা অধ্যক্ষ হাতেম আলীর বিরুদ্ধে বিভিন্ন ধরনের অনিয়ম, দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি ও ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগ তুলে শ্লোগান দেন।
জানা যায়, আওয়ামীলীগ সরকারের শাসন আমলে গত ২০১৩ সালে ভবানীগঞ্জ সরকারী বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের অধ্যক্ষ হিসেবে যোগদান করেন হাতেম আলী। তার পূর্বে তিনি রাজশাহীর পুঠিয়া উপজেলার সাধনপুর পুঙ্গু নিকেতন ডিগ্রী কলেজে কর্মরত ছিলেন। ভবানীগঞ্জ কলেজে যোগদান করেই তিনি বেপোয়া হয়ে উঠেন। তাঁর বড় ভাই হাসান আলী ভবানীগঞ্জ সরকারী বিশ্বদ্যিালয় কলেজের হিসাব রক্ষক পদে চাকরী করতেন।
বড় ভাইয়ের চাকরীর সুবাদে কাউকে তোয়াক্কা না করে তৎকালীন স্থানীয় সাংসদ ইঞ্জিনিয়ার এনামুল হকের নির্দেশ মোতাবেক কলেজের কার্যক্রম পরিচালনা করতে শুরু করেন। স্থানীয় সাংসদের ছত্রছায়ায় কলেজের কার্যক্রম পরিচালনার কারনে শিক্ষক, কর্মচারী ও শিক্ষার্থীর সাথে দুরত্বের সৃষ্টি হয়। যোগদানের পর পরই তিনি বিভিন্ন অনিয়মের সাথে জড়িয়ে পড়েন।
শিক্ষক, শিক্ষার্থীরা বার বার হাতেম আলীকে অধ্যক্ষের পদ থেকে সরানোর জন্য মিটিং, মিছিলসহ বিভিন্ন দপ্তরে অনিয়ম, দুর্নীতির অভিযোগে অভিযোগ দিয়ে রাভ করতে পারেনি। ওই সব ঘটনার সূত্র ধরে বুধবার সকাল থেকেই বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থীরা কলেজ চত্বরে অবস্থান নেন। বেলা বাড়ার সাথে সাথে শিক্ষার্থীদের সংখ্যা বৃদ্ধি বেড়ে যায়।
এক পর্যায়ে শিক্ষার্থীরা হ্যান্ড মাইকে পদত্যাগের দাবী জানিয়ে বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন করতে থাকে। খবর পেয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাহাবুবুল ইসলাম ও সেনা সদস্যরা। তারা আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি দেখে সেখান থেকে চলে যান। এ সময় অধ্যক্ষ হাতেম আলী বাহিরে বেরনোর চেষ্টা করলে শিক্ষার্থীরা তাঁকে অবরুদ্ধে করে রাখেন। পরে বিকেল তিনটার দিকে তিনি পদত্যাগ পত্রে স্বাক্ষর করে কলেজ থেকে বেরিয়ে যান। আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা পদত্যাগ পত্র নিয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার দপ্তরে জমা দেন।
এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহাবুবুল ইসলাম বলেন, পদত্যাগের বিষয়টি দেখবেন মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড। তাদের মাধ্যমে ব্যবস্থা নিবেন শিক্ষা মন্ত্রনালয়। আইন শৃংখলার অবনিত না হয় সে জন্যই আমি সেখানে গিয়েছিলাম। পদত্যাগের বিষয়ে আমার কিছুই করার নেই বলে তিনি এই প্রতিবেদককে জানিয়েছেন।