রাজশাহীতে কাফনের কাপড় জড়িয়ে অনশনে শিক্ষার্থীরা
নিজস্ব প্রতিবেদক : সেপ্টেম্বর মাসেই পরীক্ষা গ্রহণ ও ফলাফল প্রকাশসহ ৭ দফা দাবিতে এবার ‘কাফনের কাপড়’ গায়ে দিয়ে অনশন কর্মসূচি পালন করছেন রাজশাহী মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (রামেবি) নার্সিং অনুষদের শিক্ষার্থীরা।
রোববার (৮ সেপ্টেম্বর) দুপুর ১২টায় রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়ের সামনে তারা কর্মসূচি পালন করেন। এসময় আরও ৩ জন শিক্ষার্থী অসুস্থ হলে তাদের রাজশাহী মেডিকেলে ভর্তি করা হয়। সন্ধ্যা ৬টায় লিখিত আশ্বাস দিয়ে পানি পান করিয়ে অনশন ভাঙান বিভাগীয় কমিশনার ড. দেওয়ান মুহাম্মদ হুমায়ূন কবীর।
রামেবি অধিভুক্ত রাজশাহী, রংপুর, দিনাজপুর, লালমনিরহাট সরকারী নার্সিং কলেজ এবং সিরাজগঞ্জ, বগুড়া ও রাজশাহীস্থ বিভিন্ন বেসরকারি নার্সিং কলেজের শিক্ষার্থীরা গত বুধবার থেকে লাগাতার আন্দোলন করে যাচ্ছেন।
এদিন বেলা ১১টায় রামেবি পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের কার্যালয়ের সামনে জড়ো হন শিক্ষার্থীরা। মিছিল নিয়ে লক্ষিপুর হয়ে সিএন্ডবি মোড় পার হয়ে বিভাগীয় কমিশনার কার্যালয়ের সামনে তারা অনশনে বসেন। দুপুর ২টার দিকে রাজশাহী নার্সিং কলেজ ও সিরাজগঞ্জের সাখাওয়াত মেমোরিয়াল নার্সিং কলেজের দুজন ছাত্রী অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাদের রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। পরে আরেকজন অসুস্থ হলে তাকেও হাসপাতালে নেয়া হয়। বর্তমানে হাসপাতালে ১৪ শিক্ষার্থী চিকিৎসাধীন।
তবে দুপুর একটার দিকে অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (উন্নয়ন ও আইসিটি) মোহাম্মদ কবির উদ্দীন শিক্ষার্থীদের কাছে আসেন। তিনি চলমান আন্দোলনের ১০ সমন্বয়ককে নিয়ে আলোচনায় বসেন এবং বিষয়টি স্বাস্থ্য উপদেষ্টার দপ্তরে জানান।
দপ্তর থেকে টেলিফোনে কবির উদ্দীনকে জানানো হয়, বিষয়টি নিয়ে মিটিং চলছে। ফাইলও মিটিংয়ে রয়েছে৷ এসময় কবির উদ্দীন সমন্বয়কদের ফিরে গিয়ে পরে খোঁজ নিতে বলেন। তবে দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত সমন্বয়করা যাবেন না বলে সাফ জানিয়ে দেন। অন্যতম সমন্বয়ক রায়হান আলী বলেন, আমাদের ১১ শিক্ষার্থী হিটস্ট্রোক করে রাজশাহী মেডিকেলে মৃত্যুর মুখে রয়েছেন। আমাদের ৩ হাজার নার্সিং শিক্ষার্থীর ভবিষ্যৎ হুমকির মুখে। সমাধান না নিয়ে ফিরে যাওয়ার সুযোগ নেই।
আন্দোলনকারী ঘোষণা দেন, ফায়সালা না দিলে আমরাই রামেবির উপাচার্য ও পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক হয়ে কার্যালয়ে বসব। নোটিশ দিয়ে পরীক্ষা শুরু ও ফলাফল প্রকাশ করা হবে।
সন্ধ্যা ৬টার দিকে বিভাগীয় কমিশনার ড. দেওয়ান মুহাম্মদ হুমায়ূন কবীর শিক্ষার্থীদের কাছে আসেন এবং রোববার রাত বা সোমবারের মধ্যে সমাধান হবে বলে লিখিত আশ্বাস দেন। এরপর অনশন ভাঙান তিনি। শিক্ষার্থীদের তিনি বলেন, আমি হলফ করে বলতে পারি- রোববার রাত বা সোমবারের মধ্যে অবশ্যই বিষয়টি সমাধান হবে।
এদিকে, রংপুর, দিনাজপুর ও লালমনিরহাটসহ বেশ কয়েকটি নার্সিং কলেজে একই দাবিতে রোববার সমাবেশ করা হয়েছে। শিক্ষার্থীদের সঙ্গে শিক্ষকরাও কর্মসূচিতে অংশ নেন। এ সময় ক্লাস বর্জন করে শ্রেণীকক্ষে তালা ঝুলিয়ে দেন শিক্ষার্থীরা।