সাবেক ছাত্রলীগ নেতা মাসুদ হত্যায় মামলা
নিজস্ব প্রতিবেদক : রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) সাবেক ছাত্রলীগ নেতা আব্দুল্লাহ আল মাসুদকে (৩২) হত্যার ঘটনায় মামলা হয়েছে। মঙ্গলবার রাতে নিহতের বড় ভাই মো. বেহেস্তী রাজশাহীর মতিহার থানায় মামলাটি দায়ের করেন বলে ওসি আরিফুল ইসলাম জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, মাসুদের ভাই বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করে মামলা করেছেন। মামলাটি মতিহার থানায় রেকর্ড করা হয়েছে। তদন্ত শেষে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
মামলার এজাহারে বলা হয়, আব্দুল্লাহ আল মাসুদ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের হাসপাতালের স্টোর কিপার পদে কর্মরত ছিলেন। তিনি যোগদানের পর থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের জুবিলি অফিসার্স কোয়ার্টারে সপরিবারে বসবাস করে আসছিলেন। ৭ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় কোয়ার্টার থেকে নবজাতক ও অসুস্থ স্ত্রীর ওষুধ আনতে বিনোদপুর বাজারে যান। এ সময় অজ্ঞাতপরিচয় কে বা কারা তাকে মতিহার থানার অজ্ঞাত স্থানে ধরে নিয়ে গিয়ে উপর্যুপরি মারধর করে মুমূর্ষু অবস্থায় প্রথমে মতিহার এবং পরে বোয়ালিয়া থানায় গ্রেপ্তার দেখানোর জন্য নিয়ে যায়।
এজাহারে আরও বলা হয়, চিকিৎসার সুযোগ না দিয়ে আব্দুল্লাহ আল মাসুদকে হত্যা মামলার আসামি হিসেবে বোয়ালিয়া মডেল থানায় গ্রেপ্তার দেখানোর জন্য উত্তেজিত ছাত্র-জনতা থানা ঘেরাও করে এবং ওসির সঙ্গে বাগবিতণ্ডায় জড়ায়। পরে শারীরিক অবস্থা পর্যবেক্ষণ করে চিকিৎসা দেওয়ার জন্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সহায়তায় রাত সাড়ে ১০টার দিকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক মাসুদের দ্রুত এক্স-রে করে এবং ৩১ নম্বর ওয়ার্ডে ভর্তি করেন। কর্তব্যরত চিকিৎসক ও নার্স মাসুদকে বাঁচানোর সর্বাত্মক চেষ্টা করেন। কিন্তু রাত সাড়ে ১২টার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মাসুদ মারা যান।
হত্যাকাণ্ডটি পরিকল্পিত উল্লেখ করে এজাহারে বলা হয়, অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তি বা ব্যক্তিরা পূর্বশত্রুতার জের ধরে পরিকল্পিতভাবে আব্দুল্লাহ আল মাসুদকে বেধড়ক মারধর করায় তার মৃত্যু হয়।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাবেক সহসম্পাদক ও কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সদস্য আব্দুল্লাহ আল মাসুদ ২০১৪ সালে ক্যাম্পাসে হামলার শিকার হন। সেদিন তার একটি পা গোড়ালি থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। হাতের রগও কেটে দেওয়া হয়। ওই হামলার পর একটি কৃত্রিম পা নিয়ে চলাচল করতেন মাসুদ। এ অবস্থায় দীর্ঘদিন বেকার ছিলেন। পরে ২০২২ সালের শেষদিকে মাসুদ তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে চিঠি লেখেন। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের নির্দেশনায় তাকে বিশ্ববিদ্যালয়ে চাকরি দেওয়া হয়। চাকরি পেয়ে বিয়ে করেন মাসুদ। মারা যাওয়ার চারদিন আগে ৩ সেপ্টেম্বর তিনি সন্তানের বাবা হন।