নিলামে উঠবে ৪৪ এমপির গাড়ি
পদ্মাটাইমস ডেস্ক : দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর এমপিদের জন্য শুল্কমুক্ত সুবিধায় আমদানি করা ৪৪টি বিলাসবহুল গাড়ি নিলামে উঠতে যাচ্ছে।
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সরকার পতনের কারণে গাড়িগুলো খালাস করতে পারেননি তারা। আওয়ামী লীগ সরকার টিকলে ৪০০ কোটি টাকা মূল্যের এসব গাড়ি বিনা শুল্কে খালাস করতেন তারা।
তবে সংসদ বিলুপ্ত হওয়ার দিন কয়েক আগে সাকিব আল হাসান, ফেরদৌস আহমেদ ও ব্যারিস্টার সায়েদুল হক সুমনসহ সাতজন এমপি খালাস করে নিয়ে গেছেন সাতটি গাড়ি। আরও চারজন এমপি জমা দিয়েছিলেন তাদের নথি। তবে সেগুলো আটকে দিয়েছে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ। এখন আর গাড়িগুলো বিনা শুল্কে ছাড়িয়ে নেওয়ার সুযোগ নেই।
কাস্টমস সূত্র জানায়, শর্ত সহজ করে গাড়িগুলো বিক্রি করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। শুল্কসহ এসব গাড়ির প্রতিটির বাজারমূল্য ১০ থেকে ১২ কোটি টাকা। গাড়িগুলোর ইঞ্জিন ক্যাপাসিটি তিন হাজার থেকে চার হাজার সিসি। এই ধরনের গাড়ির ওপর ৮১০ শতাংশ পর্যন্ত শুল্কারোপ হয়ে থাকে। কিন্তু এমপিরা পেতেন শুল্কমুক্ত সুবিধা।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) থেকে প্রাপ্ত তথ্য বিশ্লেষণ করে জানা গেছে, শুল্কমুক্ত সুবিধায় গাড়ি আমদানি করেছেন সাবেক ডেপুটি স্পিকার শামসুল হক টুকু, সাবেক মন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক ও মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, সাবেক তথ্য প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত, মাগুরা-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য সাকিব আল হাসান, ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৫ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ফয়জুর রহমান, লক্ষ্মীপুর-৩ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য গোলাম ফারুক পিংকু, নাটোর-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আবুল কালাম, কিশোরগঞ্জ-৫ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মুজিবুর রহমান মঞ্জু, সংরক্ষিত নারী আসনের সাবেক সংসদ সদস্য জান্নাত আরা হেনরি, সাবেক সংসদ সদস্য ও চিত্রনায়ক ফেরদৌস, হবিগঞ্জের ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন এবং বিএনপি থেকে আওয়ামী লীগে যোগ দেওয়া সাবেক এমপি শাহজাহান ওমরসহ অন্তত ৫১ জন।
কাস্টমস সূত্র জানিয়েছে, শুল্ক সুবিধার আওতায় বেশিরভাগ গাড়ি জাপান ও সিঙ্গাপুর থেকে আমদানি করা হয়েছে। টয়োটা ল্যান্ড ক্রুজার, টয়োটা জিপ, টয়োটা এলসি স্টেশন ওয়াগট মডেলের এসব গাড়ির ইঞ্জিন ক্যাপাসিটি চার হাজার সিসি। সংসদ সদস্যরা প্রতি পাঁচ বছরে একবার শুল্কমুক্ত সুবিধায় গাড়ি আমদানি করতে পারেন।
এ ধরনের গাড়ির ওপর কর ৮১০ শতাংশ পর্যন্ত হতে পারে; তবে এমপিদের তা দিতে হয় না। চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেটে সংসদ সদস্যদের গাড়ির ওপর ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপের প্রস্তাব করা হয়েছিল। শেষ পর্যন্ত প্রস্তাবটি গ্রহণ করা হয়নি।