প্রশাসনবিহীন ইবিতে বেড়েছে বহিরাগত; নিরাপত্তা শঙ্কায় নারী শিক্ষার্থীরা

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১৯, ২০২৪; সময়: ৪:১৫ অপরাহ্ণ |
প্রশাসনবিহীন ইবিতে বেড়েছে বহিরাগত; নিরাপত্তা শঙ্কায় নারী শিক্ষার্থীরা

নিজস্ব প্রতিবেদক, ইবি : ছাত্রজনতার অভ্যুত্থানে গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকার পতনের পর থেকে দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে প্রশাসনিক ব্যক্তিদের পদত্যাগের হিড়িক পড়ে। যার ধারাবাহিকতায় ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য, উপ-উপাচার্য, কোষাধ্যক্ষ, প্রক্টর, ছাত্র উপদেষ্টাসহ ৬ হলের প্রভোস্টগণ পদত্যাগ করেন।

এদিকে দীর্ঘদিন ধরে প্রশাসন বিহীন ক্যাম্পাসে বেড়েছে বহিরাগতদের আনাগোনা। এতে নিরাপত্তা শঙ্কায় ভুগছেন ক্যাম্পাসের নারী শিক্ষার্থীরা বলে অভিযোগ তাদের।

শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, ছাত্রীদের জন্য বরাদ্দকৃত শেখ হাসিনা হল, বঙ্গমাতা ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হল ও খালেদা জিয়া হলের প্রভোস্টবৃন্দ পদত্যাগের পর থেকে তাদের দায়িত্ব পালন করছেন স্ব স্ব হলের হাউজ টিউটরগণ। তবে সবসময় হাউজ টিউটরদের পাওয়া যায় না বলে অভিযোগ অনেকের।

প্রভোস্ট না আসা অবধি হলের অন্যান্য অনেক সমস্যার সমাধান না হওয়ায় ভোগান্তিতেও রয়েছেন শিক্ষার্থীরা। পাশাপাশি প্রক্টরের পদত্যাগে প্রক্টরিয়াল বডির কার্যক্রম ব্যাহত হওয়ায় সন্ধ্যার পর ক্যাম্পাসে বহিরাগত শিক্ষার্থী এবং স্থানীয় ছেলেপেলেদের আনাগোনা দেখা যায়।

এদিকে ক্যাম্পাসের বাহিরে থাকা নারী শিক্ষার্থীর অনেকেই জানান, দীর্ঘদিন যাবত বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনবিহীন থাকায় সবচেয়ে নিরাপত্তা শঙ্কায় ভুগছেন ক্যাম্পাসের বাহিরে বিভিন্ন মেসে থাকা নারী শিক্ষার্থীরা। উপাচার্য, প্রক্টর, ছাত্র উপদেষ্টা গুরুত্বপূর্ণ তিন প্রশাসনিক পদে কেউ না থাকায় তাদের কোনো সমস্যায় পাচ্ছে না তাৎক্ষণিক কোনো প্রতিকার।

তাই অভিভাবক শূন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে নিজেদের একপ্রকার অসহায় বলে দাবি করেছেন তারা। একইসাথে একাডেমিক কাজে স্থবিরতা অপসারণে উপাচার্য নিয়োগ এখন সময়ের দাবি বলে উল্লেখ করেছেন তারা।

ছাত্র হলের আবাসিক শিক্ষার্থীরা বলেন, প্রায় দুই মাস প্রভোস্ট ছাড়াই হল চলছে, হলের অনেক কাজও আটকে রয়েছে। নিরাপত্তার দিক বিবেচনা করলে আমাদের মধ্যে একটু শঙ্কা রয়েছে। কারণ একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের যেখানে প্রক্টর নেই, প্রভোস্ট নেই, হাউজ টিউটরদের কাজের প্রতি অনিহাও দেখা যাচ্ছে।

রাতে কোন শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে পড়লে তার ব্যবস্থা নেওয়ার মতোও কেউ নেই। আনসার আমাদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে কাজ করলেও একটা ভয়ের স্থান থেকেই যায়। আমার মতে একটি ছাত্রী হলে অবশ্যই প্রভোস্ট থাকা গুরুত্বপূর্ণ। যতো দ্রুত সম্ভব নতুন প্রভোস্ট নিয়োগের দাবী জানাই।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ও আর্থিক দায়িত্বপ্রাপ্ত জ্যেষ্ঠ অধ্যাপক ড. আ ব ম ছিদ্দিকুর রহমান আশ্রাফী বলেন, “বর্তমানে প্রভোস্টের অনুপস্থিতিতে হাউজ টিউটরগণ দায়িত্ব পালন করছেন। নারী শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার জন্য হলের গেটে সার্বক্ষনিক আনসার মোতায়নের পাশাপাশি হাউজ টিউটরদের বলা হয়েছে যেন তারা শিক্ষার্থীদের কাছে যায়, তাদের সাথে কথা বলে, তাদের সুবিধা-অসুবিধা জেনে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারে। খালেদা জিয়া হলের শিক্ষার্থীদের আবাসন ব্যবস্থা আমাদের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ ছিলো। আমি প্রশাসনিক এবং আর্থিক দায়িত্ব পেলেও আমি সবদিকেই খেয়াল রাখার চেষ্টা করছি। আমরা চেষ্টা করেছি দ্রুত তাদের এই সমস্যা সমাধানের।”

উল্লেখ্য, প্রশাসনিক এবং একাডেমিক কাজে গতি ফেরাতে গত কয়েকদিন যাবত ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা উপাচার্য নিয়োগের দাবিতে আন্দোলন করে আসছে। যেখানে নিজ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে উপাচার্য নিয়োগেরও দাবি জানিয়েছেন তারা।

 

পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে