শিক্ষার্থীবান্ধব বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে তোলার প্রত্যয় ইবি উপাচার্যের
নিজস্ব প্রতিবেদক, ইবি : শিক্ষার্থীবান্ধব বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে তোলার প্রত্যয় নিয়ে কাজ করবেন বলে মন্তব্য করেছেন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের নবনিযুক্ত উপাচার্য অধ্যাপক ড. নকিব মোহাম্মদ নসরুল্লাহ। তিনি বলেন, “বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শহিদদের রক্তের ফসল হিসেবে আমি এখানে এসেছি। ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের যে লক্ষ্য উদ্দেশ্য তার সাথে মিল রেখে বিশ্ববিদ্যালয়কে একটি আধুনিক, যুগোপযোগী ও আন্তর্জাতিক মানের বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে গড়ে তোলার চেষ্টা করব। আমি এসেছি শিক্ষার্থীদের জন্য। এই বিশ্ববিদ্যালয়কে শিক্ষার্থীবান্ধব হিসেবে গড়ে তোলাই আমার আমার লক্ষ্য।”
মঙ্গলবার (২৪ সেপ্টেম্বর) বিকেল সাড়ে ৪ টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ে পৌঁছান ইবি উপাচার্য ড. নকিব নসরুল্লাহ। এসময় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকে তাকে বরণ করে নেয় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীরা। পরবর্তীতে নিজ কার্যালয়ে উপস্থিত হয়ে যোগদানের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করে উপস্থিত শিক্ষক শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে এসব কথা বলেন তিনি।
ইবি উপাচার্য বলেন, “আজকের এই বাংলাদেশ, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শহীদের রক্তের ফসল। শহিদদের রক্তের বিনিময় দেয়ার জন্য আমি যদি বিন্দুমাত্র প্রচেষ্টা অব্যহত রাখি তাহলে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের আদর্শ, উদ্দেশ্য, লক্ষ্যকে সামনে রেখে আদর্শ একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হিসেবে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়কে তৈরি করতে পারি তাহলে আমার এই প্রচেষ্টা সফল হবে।
আমার কোনো ব্যক্তিগত উদ্দেশ্য এখানে নেই, আমার উদ্দেশ্য তা, যা আমার ছাত্রদের উদ্দেশ্য। আমি কোনো ব্যক্তিগত স্বার্থে না, কোনো গোষ্ঠীর জন্য না, কোন নির্দিষ্ট আদর্শেরও না। ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের যে লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য তার সাথে আমার চিন্তা চেতনার ঐক্য মিল রেখে আমি এখানে কাজ করবো এবং আমার কাজ হবে সত্য পথের কাজ। আমি আইন অনুসারে কাজ করবো। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের যারা স্টেকহোল্ডার আছে তাদের জন্য কাজ করবো। আমি চাই এই বিশ্ববিদ্যালয়কে একটি শিক্ষার্থীবান্ধব বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে গড়ে তুলতে।
ড. নকিব আরো বলেন, “এই বিশ্ববিদ্যালয়ে আসার জন্য কোনো ব্যক্তিগত পরিকল্পনা আমার ছিলোনা। আমি মনে করি উপাচার্যের এই পদটি ‘ দিস ইস নট এ পোস্ট অফ পাওয়ার, দিস ইস এ পোস্ট অফ রেসপনসেবলিটি।’ আমি দায়িত্ব পালনের জন্য এসেছি। সবার সহযোগিতার মাধ্যমে বৈষম্যবিরোধী একটি সিস্টেম চালু করার মাধ্যমে আমি সামনে অগ্রসর হবো।
আমি কোনো বহিরাগত মানুষ না। আমি এখানে দীর্ঘ সাড়ে ১০ বছর চাকরি করেছি। আমি আমার শিক্ষকতা জীবনের শুরু এখানে করেছি। আমাদের মধ্যে ঐক্যের বন্ধন বৃদ্ধি পাবে, আমাদের মধ্যে হিংসা, হানাহানি থাকবেনা। আমরা সবাই একসাথে কাজ করবো। শিক্ষার্থীদের জন্য লেখাপড়ার পাশাপাশি গবেষণার পথ উন্মুক্ত করার লক্ষ্যে আমি কাজ করবো।
এর আগে, গতকাল ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের চ্যান্সেলর ও বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিনের অনুমোদনক্রমে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৪ তম উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ পান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক ড. নকিব মোহাম্মদ নসরুল্লাহ।
বিশ্ববিদ্যালয়ে তাকে স্বাগত জানিয়ে আনন্দ মিছিল করে শিক্ষার্থীরা। ছাত্রজনতার গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে গত ৮ আগস্ট পদত্যাগ করেন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৩তম উপাচার্য অধ্যাপক ড. শেখ আবদুস সালাম।