নওগাঁয় হস্তান্তরপত্রে স্বাক্ষর না করায় প্রধান শিক্ষককে হুমকির অভিযোগ
নিজস্ব প্রতিবেদক, মান্দা : নওগাঁর মান্দায় সংস্কার ও মেরামত কাজের জন্য একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ২০ লাখ টাকা বরাদ্দ দেয় শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর। দায়সারাভাবে কাজ শেষ করে হস্তান্তরপত্রে প্রধান শিক্ষকের স্বাক্ষর নেওয়ার চেষ্টা করেন ঠিকাদার ও তার লোকজন।
কিন্তু অনিয়ম ও ঘাপলার অভিযোগ এনে প্রধান শিক্ষক ওই হস্তান্তরপত্রে স্বাক্ষর করেননি। ব্যর্থ হয়ে তাকে বিভিন্নভাবে হুমকি দিচ্ছেন ঠিকাদারের ভাড়াটিয়া লোকজন। উপজেলার একরুখী উচ্চবিদ্যালয়ের এ ঘটনায় স্থানীয়দের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, উপজেলার একরুখী উচ্চবিদ্যালয়ে সংস্কার ও মেরামত কাজের জন্য শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর ২০ লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়। এ সংক্রান্ত দরপত্র আহবান করা হলে কাজটি পায় নওগাঁর নাজমা কন্সট্রাকশন নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। পরে ওই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে কাজটি কিনে নেন হুমায়ন কবীর সবুজ নামের এক ব্যক্তি।
সরেজমিনে বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা যায় ৫টি শ্রেণি কক্ষ ও ২টি কমনরুমে ঢেউটিনের ছাউনি দেওয়া হয়েছে। ৫টি শ্রেণি কক্ষের বারান্দায় দেওয়া হয়েছে গ্রীল। ৪টি জানালায় গ্রীলসহ থাই, ৬টি সেলিংফ্যান ও শ্রেণি কক্ষগুলোতে রঙের কাজ করা হয়েছে। বিদ্যালয় চত্বরে নির্মাণ করা হয়েছে একটি শহীদ মিনার।
অভিযোগ উঠেছে, ছাউনিতে ব্যবহার করা হয়েছে অতি-নিম্নমানের ২৫ বান্ডিল ঢেউটিন। পরিমাণমত দেওয়া হয়নি লোহার এ্যাংগেল। নামস্বর্বস্ব কোম্পানির সেলিং ফ্যানগুলো এরই মধ্যে ঠিকাদারকে ফেরত দেওয়া হয়েছে। দায়সারভাবে করা হয়েছে রঙের কাজ।
প্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষক সাইদুর রহমান অভিযোগ করে বলেন, কাজের সময় সিডিউল প্রদান করা হয়নি। শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের দুই কর্মকর্তার সহায়তায় ঠিকাদার দায়সারাভাবে কাজ শেষ করেন। ছাউনিতে অত্যন্ত নিম্নমানের পাতলা ঢেউটিন ব্যবহার করা হয়েছে। পরিমাণমত এ্যাংগেল ব্যবহার না করা হয়নি। এতে করে ঝড়ে ছাউনির টিন উড়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। নামস্বর্বস্ব সেলিং ফ্যানগুলো খুলে এরই মধ্যে ঠিকাদারকে ফেরত দেওয়া হয়েছে।
প্রধান শিক্ষক সাইদুর রহমান আরও বলেন, কাজ শেষ করেই হস্তান্তরপত্রে স্বাক্ষর নেওয়ার জন্য উঠেপড়ে লাগে ঠিকাদার ও তার লোকজন। কিন্তু নিম্নমানের হওয়ায় আমি তাতে স্বাক্ষর করিনি। এ অবস্থায় গত ১৮ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় খোরশেদ আলম নামের এক ব্যক্তি সাংবাদিক পরিচয়ে আমার মোবাইলফোনে কল দিয়ে বিভিন্নভাবে হুমকি প্রদান করেন।
এ প্রসঙ্গে ঠিকাদার হুমায়ন কবীর সবুজ বলেন, সিউিউল অনুযায়ী কাজ করা হয়েছে। এখানে কোনো অনিয়ম হয়নি। এরপরও প্রধান শিক্ষক হস্তান্তরপত্রে স্বাক্ষর না করে হয়রানী করছেন।
অনিয়মের অভিযোগ অস্বীকার করে শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর মান্দার উপসহকারী প্রকৌশলী আমিনুৃর রহমান বলেন, নিয়ম মেনেই কাজ সম্পন্ন করা হয়েছে। এখানে কোনো ঘাপলা হয়নি ।