বিশ্ব শিক্ষক দিবসে শিক্ষার্থীদের ভাবনা
পদ্মাটাইমস ডেস্ক : শিক্ষকতা একটি আদর্শ ও মহান পেশা,সেবামূলক কাজ ও একটি সমাজকল্যাণমূলক ব্রত। শিক্ষক সমাজের মহামানব, তাদের সমাজের মেরুদণ্ডও বলা হয়। আজ ৫ই অক্টোবর। বিশ্বজুড়ে শিক্ষকদের আনুষ্ঠানিক ভাবে সম্মান জানানোর দিন। জাতিসংঘ শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সংস্কৃতি সংস্থা ইউনেস্কো দিনটিকে বিশ্ব শিক্ষক দিবস হিসাবে স্বীকৃতি দিয়েছে। শিক্ষকদের জন্য নিবেদিত এই দিনকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (বাকৃবি), বাংলাদেশ টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয় (বুটেক্স) ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) শিক্ষার্থীদের মনোভাব তুলে ধরেছেন বাকৃবির শিক্ষার্থী কাজী ফারাহ তাসফিয়া।
বাকৃবির স্নাতকোত্তর শিক্ষার্থী নূরেজান্নাতী জেবা বলেন, ‘আমার জীবন ও ভবিষ্যত গঠনকারী শিক্ষকদের সম্মান করার একটি বিশেষ উপলক্ষ্য হলো শিক্ষক দিবস। প্রত্যেক শিক্ষকই কোনো না কোনো শিক্ষার্থীর জীবনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন, প্রতিকূলতা অতিক্রম করার পথনির্দেশনা দিয়ে থাকেন। আমিও আমার শিক্ষকদের কাছ থেকেই সমালোচনামূলক চিন্তা করার এবং প্রয়োজনে উদার ও মানবিক হওয়ার শিক্ষা পেয়েছি। আমার কাছে ‘শিক্ষক দিবস’ হলো তাদের পরিশ্রম ও অবদানকে স্বীকৃতি দেওয়ার একটি ক্ষুদ্র আয়োজনমাত্র।’
বাকৃবির মাৎস্যবিজ্ঞান অনুষদের শিক্ষার্থী খোশনূর ইয়াসমিন রত্না জানান, ‘একজন শিক্ষার্থীর জীবনে শিক্ষকের গুরুত্ব বলে শেষ করা যাবে না। স্কুল কলেজ থেকে ভার্সিটির লাইফ প্রায় অনেকটাই আলাদা। ভার্সিটির শিক্ষকগণের ভূমিকাও অনেকটা ভিন্ন আঙ্গিকের। নতুনভাবে খাপ খাইয়ে নেয়া থেকে শুরু করে ভিন্ন ভিন্ন বিষয়ের উপর শিক্ষাদান দিয়ে থাকেন তারা। একজন শিক্ষার্থীর ক্যারিয়ার গঠন অর্থাৎ লাইফের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সময় পাশে থেকে সাজেশন দিয়ে থাকেন ভার্সিটির শিক্ষকগণ। তাই আজ শিক্ষক দিবসে আমাদের জীবনের সকল শিক্ষকদের জানাই শ্রদ্ধা আর শিক্ষক দিবসের অনেক অনেক শুভেচ্ছা।’
বাকৃবির ভেটেরিনারি অনুষদের মো. আশিকুর রহমান জানান, ‘বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে অনেক শিক্ষকের সান্নিধ্যে আসার সু্যোগ হয়েছে। তবে লেকচারার শিক্ষকদের আন্তরিকতা এবং বন্ধুসুলভ আচরণ পড়াশোনাকে আরো আকর্ষণীয় করে তুলতে সাহায্য করে। ভেটেরিনারি অনুষদের ব্যবহারিক পড়াশোনা এমন শিক্ষক থাকলে বেশ সহজ হয়ে দাঁড়ায়। সর্বোপরি বাংলাদেশের সকল শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের জানাই শিক্ষক দিবসের শুভেচ্ছা।’
বাকৃবির আরেক স্নাতকোত্তর শিক্ষার্থী আদেল মোহাম্মদ কিবরিয়া জানান, ‘একজন শিক্ষার্থীর জীবনে একজন শিক্ষকের প্রভাব কতখানি তা পরিমাপ করা অসম্ভব। শিক্ষক হলেন সেই সত্ত্বা যিনি একজন শিক্ষার্থীর জীবনকে সুন্দরভাবে গড়ার পথ দেখিয়ে দেন। সেজন্যে একজন শিক্ষার্থীর কাছে তার শিক্ষক হলো আবেগের জায়গা, শ্রদ্ধার জায়গা এবং তার আদর্শ। তাই আজ এই শিক্ষক দিবসে মানুষগড়ার এমন নিঃস্বার্থ কারিগরদের প্রতি রইলো শ্রদ্ধা ও কৃতজ্ঞতা।’
বাকৃবির কৃষি অনুষদের শিক্ষার্থী আল সাউদ সৌহার্দ্য বলেন, ‘টিচার্স ডে উপলক্ষে সকল শিক্ষার্থীবান্ধব শিক্ষককে জানাই আমার পক্ষ থেকে আন্তরিক শ্রদ্ধাবোধ জ্ঞাপন করছি। আমার ফেভারিট টিচার এগ্রি ক্যামিস্ট্রির মহিউদ্দিন স্যার কারণ ইউনিভার্সিটিতে শুরুর ক্লাসগুলো থেকেই স্যারের পড়ানো আর টিচিং গাইডেন্স আমার ভালো লেগেছে। ভালো থাকুক শিক্ষক নামের মানুষ তৈরির সকল কারিগর।’
বাকৃবির কৃষি প্রকৌশল ও প্রযুক্তি অনুষদের শিক্ষার্থী জয়শ্রী ভদ্র স্বর্ণা জানান, ‘শিক্ষক হলেন মানুষ গড়ার কারিগর। কারিগর যেমন কাঁচা মাটির তাল নিয়ে অতি সযত্নে একটি পূর্নাবয়ব মূর্তি তৈরী করেন,শিক্ষক ও তেমনি অতি সযত্নে আমাদের কাঁচা মনের সুপ্ত প্রতিভাকে বিকশিত করেন এবং ধাপে ধাপে আরো শীর্ষে উঠার পথকে মসৃণ করে দেন। প্রতি বছর অক্টোবরের পাঁচ তারিখে, বিশ্বের প্রায় ১০০ টি দেশে ‘শিক্ষক দিবস’ পালন করা হয়ে থাকে। বিশ্ব শিক্ষক দিবস, শিক্ষা ও উন্নয়নের ক্ষেত্রে শিক্ষকদের অসামান্য অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ এবং তাদের কঠোর পরিশ্রম ও সাফল্যের প্রশংসা করার জন্য উদযাপন করা হয়।’
এছাড়া বাংলাদেশ টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মো. মাসুম বিল্লাহ তরফদার বলেন, ‘শিক্ষকদের অবদান শুধুমাত্র শ্রেণিকক্ষে সীমাবদ্ধ নয়, বরং আমাদের চরিত্র ও মূল্যবোধ গঠনেও তা অপরিহার্য। আমার শিক্ষাজীবনের কিছু শিক্ষকের ব্যবহার, জীবনযাপনের ধারা এবং দূরদর্শিতা আমাকে মুগ্ধ ও অনুপ্রাণিত করেছে। তারা শুধু আমাকে জ্ঞান দেননি বরং সঠিক পথে চলার পথও দেখিয়েছেন। তাই এই বিশেষ দিনে আমি আমার শিক্ষকদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা ও কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছি।’
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী কাজী নাবিলা ওবায়েদ জানিয়েছেন, ‘শিক্ষাজীবনে বন্ধুসুলভ শিক্ষক পাওয়া আশীর্বাদস্বরূপ। এমন শিক্ষক পেলে পড়াশোনা হয়ে উঠে সহজ ও আকর্ষণীয়। আমার বিশ্ববিদ্যালয়ের এমনই একজন শিক্ষক হলেন নিশাত রায়হানা ঈশিতা ম্যাম। তিনি পড়াশোনার পাশাপাশি আমাদের নানা ব্যক্তিগত সমস্যা সমাধানেও সাহায্য করে থাকেন।’