বীজ প্রত্যয়ন অফিসারের যোগসাজসে রাজশাহীতে বিক্রি হচ্ছে অবৈধ বীজ

প্রকাশিত: অক্টোবর ১২, ২০২৪; সময়: ৩:০৯ অপরাহ্ণ |
বীজ প্রত্যয়ন অফিসারের যোগসাজসে রাজশাহীতে বিক্রি হচ্ছে অবৈধ বীজ

নিজস্ব প্রতিবেদক : রাজশাহীতে বীজ বিক্রির বৈধ অনুমোদন না থাকা সত্ত্বেও বৈধ আমদানিকারক ও অনুমোদন প্রাপ্ত ডিলারের প্যাকেট নকল করে বীজ বিক্রির অভিযোগ উঠেছে। আর এঅবৈধ কর্মকান্ডে রাজশাহী জেলা বীজ প্রত্যয়ন অফিসার সাজ্জাদ হোসেনের জড়িত থাকার অভিযোগ করেছেন ইয়াকুব ট্রেড ইন্টারন্যাশনালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আব্দুল খালেক।

তিনি অভিযোগ করেন, আমি কৃষি মন্ত্রণালয়ের সচীব জাতীয় বীজ বোর্ড এবং মহাপরিচালক বীজ অনুবিভাগের নিকট হতে হাইব্রীড জাতের ভূট্টা বীজ বিশাল-৫৫৫ গত ১ সেপ্টম্বর এবং বিরাট-৫৫৫ গত ২২ আগস্ট বীজ বিক্রির অনুমোদন নিয়েছেন। এছাড়াও কৃষি মন্ত্রণালয়ের বীজ শাখা-১ হতে ভারত থেকে ৫৫ মে.টন পর্যন্ত বীজ আমদানির অনুমোদন দিয়েছে। কিন্তু একই নামে রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার চর আষাড়িয়াদহ ইউনিয়নের বীজ বিক্রেতা শামীম বীজ ভান্ডারের স্বত্বাধিকারী শামীম রেজা একই নামে এবং আমার বীজের প্যাকেট নকল করে বিভিন্ন জায়গায় বিক্রি করছে যা সম্পন্ন ভাবে অবৈধ।

আমি তার এমন অবৈধ কর্মকান্ড জানতে পেরে গোদাগাড়ী উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও উপজেলা কৃষি অফিসার বরাবর লিখিত অভিযোগ দেয়। তবে অভিযোগ দিলেও এখন পর্যন্ত কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করতে দেখিনি। ফলে শামীম বীজ ভান্ডার এখনো অবৈধ ভাবে আমার অনুমোদন প্রাপ্ত ও ভারত হতে আমদানিকৃত ভূট্টা বীজ বিক্রি করে চলেছে। ফলে আমি বড় অংকের আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েছি।

তিনি আরো অভিযোগ করেন, গোদাগাড়ী উপজেলা কৃষি অফিসার আমার অভিযোগ পাওয়ার পর এই বিষয়ে ব্যবস্থা নিয়ে রাজশাহী জেলা বীজ প্রত্যয়ন অফিসার বরাবর পত্র দিলেও তিনি কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করেননি। বরং জেলা বীজ প্রত্যয়ন অফিসার আমাকে তার অফিসে ডেকে বলেন, দুজনেই বীজ বিক্রি করেন কোন ঝামেলা কইরেন না। এতেই বুঝা যাচ্ছে জেলা বীজ প্রত্যয়ন অফিসার সাজ্জাদ হোসেন মোটা অংকের অর্থের বিনিময়ে শামীম বীজ ভান্ডারের স্বত্বাধীকারী শামীম রেজার সাথে যোগসাজসে অবৈধ ভাবে আমার অনুমোদন প্রাপ্ত ভূট্টা বীজ গুলো বাজারজাত অব্যাহত রেখেছেন।

এদিকে শামীম বীজ ভান্ডারের স্বত্বাধিকারী শামীম রেজা এসব অভিযোগের বিষয়ে বলেন, আমার বৈধ কাগজ ও অনুমতি আছে বলে দাবি করেন। কোন অধিদপ্তর হতে অনুমতি নিয়েছেন তা জানতে চাইলে তিনি তা জানাতে পারেননি। তবে তিনি বলেন এই বিষয়ে আমি আপনার সাথে দেখা করে কথা বলবো মোবাইলে বলে বুঝানো যাবে না । এছাড়ও তিনি একটি মিটিং এ আছে বলে ব্যস্ততা দেখিয়ে কথা বলতে চাননি।

গোদাগাড়ী উপজেলা কৃষি অফিসার মরিয়ম আহমেদ বলেন, এই বিষয়ে আমাদের নিজস্ব কিছু করণীয় থাকে না তাই জেলা বীজ প্রত্যায়ন অফিসারকে বিষয়টি দেখার জন্য পত্র দেওয়া হয়েছে।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার আব্দুল হায়াত হলেন, কেউ যদি অবৈধ ভাবে বীজ বিক্রি করে তাহলে অবশ্যই আমি তদন্ত করে ব্যবস্থা নিবো। আগামী সোমবার অফিস খুলবে আমি গুরুত্ব সহকারি বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে অবৈধ কারবারীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানান।

রাজশাহী জেলা বীজ প্রত্যয়ন অফিসার সাজ্জাদ হোসেন এসব অভিযোগের বিষয়ে বলেন, এসব বিষয়ে বীজ প্রত্যয়নেরে খুজ কাজ নাই। আমি ইয়াকুব ট্রেডার্সকে বলেছিলাম আপনারা তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিন কেস করেন। এসব বিষয়ে তাদেরই ব্যবস্থা নিতে হবে। তবে তারা কেনো করেনি সেটা তাদের ব্যাপার। শামীম বীজ ভান্ডার কে বীজ বিক্রি করার জন্য ইয়াকুব ট্রেডার্সকে অফার করেছেন এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, না না আমি এসব বলিনি। আমি তাদের নিষেধ করেছি। এখনি আমি আবারও নিষেধ করে দিচ্ছি বলে জানান।’

 

পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে