ডেঙ্গু রোগীর ক্ষেত্রে করণীয়

প্রকাশিত: অক্টোবর ২১, ২০২৪; সময়: ২:৩৬ অপরাহ্ণ |
ডেঙ্গু রোগীর ক্ষেত্রে করণীয়

পদ্মাটাইমস ডেস্ক : সাধারণত জুলাই থেকে অক্টোবর মাস পর্যন্ত ডেঙ্গুর প্রকোপ বেড়ে যায়। বাড়তে থাকে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা। এ সময় বাড়িতে ডেঙ্গু রোগীর চিকিৎসা হলে অবশ্যই মাথায় রাখতে হবে কিছু প্রয়োজনীয় বিষয়।

ডেঙ্গুর প্রধান লক্ষণ হলো জ্বর। এ সময় তাপমাত্রা ৯৯ থেকে ১০৬ ডিগ্রি ফারেনহাইট পর্যন্ত উঠতে পারে। জ্বর টানা থাকতে পারে, আবার ঘাম দিয়ে জ্বর ছেড়ে দেয়ার পর আবারও আসতে পারে। এর সঙ্গে শরীরে ব্যথা, মাথাব্যথা, চোখের পেছনে ব্যথা এবং চামড়ায় লালচে দাগ বা ফুসকুড়ি দেখা যায়।

কোনো কারণে বাড়ির কোনো সদস্য ডেঙ্গু আক্রান্ত হলে ভাইরাসজনিত এ জ্বরে কী করবেন অনেকেই ভেবে পান না। এ সময় আতঙ্কিত না হয়ে বরং পরিবারের সদস্যদের সুরক্ষা নিশ্চিতে কিছু বিষয় লক্ষ্য রাখুন।

ডেঙ্গু হলে সতর্ক থাকা উচিত। সেই সঙ্গে রোগীর খাবারের প্রতিও মনোযোগ দেয়া উচিত। যেমন: দুগ্ধজাতীয় খাবার, মাছ, মাংস, ডাল, ডিম, বাদাম ইত্যাদি প্রতিদিন খাওয়া একান্ত জরুরি।

ডেঙ্গু রোগীর খাবার

১। এ সময় প্লাটিলেটের সংখ্যা বাড়ানোর জন্য সবচেয়ে পরিচিত হলো পেঁপেপাতার রস। তেতো লাগলেও এই রস ডেঙ্গু মোকাবিলায় ভীষণ উপকারী।

২। দুগ্ধজাতীয় খাবার প্রোবায়োটিকসের উৎস। দইয়ে থাকা ল্যাকটোব্যাসিলাস নামক ব্যাকটেরিয়া আমাদের অন্ত্রের উপকার করে। ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হলে দুগ্ধজাত খাবার শরীরে পটাশিয়াম, ফসফরাস ও সোডিয়ামের পরিমাণ ঠিক রাখতে সাহায্য করে।

৩। প্রোটিনজাতীয় খাবার তাড়াতাড়ি রোগ সারাতে মুখ্য ভূমিকা নেয়। তাই এই সময় খাবারে মাছ, মাংস, ডাল, ডিম, বাদাম ইত্যাদি থাকা একান্ত জরুরি।

৪। ভিটামিন সি ও ফোলেটও প্লাটিলেটের সংখ্যা বাড়াতে সাহায্য করে। যেমন: কমলালেবু, পাতিলেবু, জলপাই, আনারস, বেরি ও কিউই ফলে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি রয়েছে। ডেঙ্গু হলে এসব বেশি বেশি খাওয়া উচিত।

৫। সবুজ শাকসবজি ভিটামিন কে এবং আই এর উৎস। পার্সলে পাতা, পালং শাক, পুদিনা, বাঁধাকপি, শতমূলী ইত্যাদি রক্তে প্লেটলেটের সংখ্যা বাড়াতে সাহায্য করে।

৬। ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হলে চিকিৎসক কুমড়ো খাওয়ার পরামর্শ দেন। কুমড়ো ভিটামিন এ এর সমৃদ্ধ উৎস যা রক্ত জমাট বাঁধতে সাহায্য করে।

৭। জ্বরে আক্রান্ত রোগীর ক্ষেত্রে তরল খাবার খাওয়া তুলনায় সহজ। তাই এই সময় শক্ত খাবারের পরিবর্তে তরল খাবার যেমন মাংসের স্যুপ,দইয়ের লস্যি ইত্যাদি খাওয়ানো উচিত। এ ক্ষেত্রে খাবার দুই-আড়াই ঘণ্টা অন্তর পরিবেশন করা ভালো।

৮। ডাবের পানি, লেবুর শরবত, ফলের জুস, খাবার স্যালাইনের মতো তরলজাতীয় খাবারের পরিমাণ বাড়িয়ে দিন।

ডেঙ্গু রোগীর ওষুধ

১। ডেঙ্গু জ্বরে প্যারাসিটামল খাওয়ান। তবে লিভার, হার্ট এবং কিডনি সংক্রান্ত জটিলতা দেখা দিলে প্যারাসিটামল ওষুধ খাওয়ানোর আগে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

২। ডেঙ্গু জ্বরে শরীরে ব্যথা অনুভব হলে সেক্ষেত্রে অ্যাসপিরিন, ক্লোফেনাক, আইবুপ্রোফেন জাতীয় ওষুধ খাওয়াবেন না। চিকিৎসকরা বলছেন, ডেঙ্গু জ্বরে এমন ওষুধ গ্রহণে রক্তক্ষরণের শঙ্কা থাকে।

তাই ডেঙ্গু রোগীর একমাত্র ওষুধ প্যারাসিটামল বা নাপা। ব্যথা ও জ্বরের পরিমাণের ওপর প্যারাসিটামল খান। সাধারণত খাবারের পর সকালে একটি ও রাতে একটি নাপা খেতে পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসকরা। তবে বেশি খারাপ লাগলে দুপুরের খাওয়ার পরও একটি নাপা খাওয়া যেতে পারে। তবে একদিনে চারটি নাপা খেতে নিষেধ করছেন বিশেষজ্ঞরা। ওষুধ গ্রহণের পাশাপাশি বাড়িতে ডেঙ্গু রোগীকে পরিপূর্ণ বিশ্রামে রাখুন।

ডেঙ্গু মশা নিধনের উপায়

এডিস মশা থেকে ডেঙ্গু ছড়ায়। তাই বাড়িতে এডিশ মশা নিধন ও ডেঙ্গু রোগীর সুরক্ষায়-

১। বাড়ির আশেপাশে জমে থাকা পানি পরিষ্কার করুন।
২। ছাদ ও টবের জমে থাকা পানি ফেলে দিন।
৩। ফ্রিজ কিংবা এসি থেকে পানি ঝরলে তা দ্রুত পরিষ্কার করুন।
৪। বাথরুমের বালতিতে ধরে রাখা পরিষ্কার পানিতে ঢাকনা ব্যবহার করুন।
৫। অপরিচ্ছন্ন ও ডেঙ্গু থাকতে পারে এমন স্থানে কেরাসিন তেল ছিটিয়ে মশার আবাসস্থল ধ্বংস করুন।

পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে