শীতের আগমনী বার্তায় সুজানগরে লেপ-তোষক তৈরিতে ব্যস্ত কারিগররা

প্রকাশিত: অক্টোবর ২৬, ২০২৪; সময়: ৩:২৮ অপরাহ্ণ |
শীতের আগমনী বার্তায় সুজানগরে লেপ-তোষক তৈরিতে ব্যস্ত কারিগররা

এমএ আলিম রিপন : শীতের আগমনী বার্তায় উত্তরের জেলা পাবনার সুজানগর উপজেলায় লেপ-তোষক তৈরিতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন কারিগররা। শীত নিবারণের আগাম প্রস্তুতি হিসেবে লেপ তোষক বানাতে ক্রেতারাও ভিড় করছে দোকানগুলোতে।অনেকেই আবার ব্যস্ত নিজের পুরোনো লেপ-তোষক মেরামতে।

এ উপজেলায় ভোরে ও রাতে বর্তমানে কিছুটা শীত অনুভূত হচ্ছে। ফলে যে যার সাধ্যমতো শীত মোকাবেলার প্রস্ততি নিচ্ছেন। এলাকার লোকজন রাতের বিছানায় টেনে নিতে হচ্ছেন কাঁথা বা কম্বল। উপজেলার চরপাড়া এলাকার ৭৮ বছরের বৃদ্ধ নাছিমা খাতুন ও তার ছেলের বউ মর্জিনা খাতুন নিজেদের পুরোনো ব্যবহারি কাঁথা সেলাই করে ব্যবহার উপযোগী করছেন তারা। তারা জানান, আমরা গরিব মানুষ বাবা, নুন আনতে পান্তা ফুরায়আমরা খেটে খাওয়া মানুষ আমাদের ঠাণ্ডা কম লাগে।

জানা গেছে, বাজারে প্রতি কেজি শিমুল তুলা প্রায় ৫০০ টাকা ও বিচি ছাড়া শিমুল তুলার কেজি ৬৮০ থেকে ৭৫০ টাকা। এসব তুলায় বালিশ তৈরি করেন সমাজের ধনী লোকেরা। আর গার্মেন্টস তুলায় বালিশ, লেপ ও তোষক বানিয়ে নেন মধ্যবিত্ত ও গ্রামের গরিব মানুষেরা। তবুও বর্তমান বাজারে ৫ হাত বাই ৫ হাত লেপ তৈরি করতে ১১০০ টাকার মতো খরচ হচ্ছে। যা গতবারের চেয়ে ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা বেশি।

বাজারে কার্পাস তুলা প্রতি কেজি ৩৫০ থেকে ৪৫০ টাকা, প্রতি কেজি কালো হুল ৯০ থেকে ১১০টাকা, কালো রাবিশ তুলা ৫০ থেকে ৭০ টাকা, সাদা তুলা ১২০ টাকা থেকে ২০০ টাকা করে দাম চলছে। সুজানগরের চর ভবানীপুর গ্রামের বাসিন্দা সিদ্দিকুর রহমান জানান, বাজারে প্রতিটি জিনিসের দাম বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে এবার লেপ-তোষক তৈরির খরচও বেড়েছে। তাই পুরোনো লেপ খুলে নতুন করে তৈরি করার জন্য দোকানে নিয়ে এসেছি। তুলার খরচ বাদ দিয়ে কাপড় ও মজুরি বাবদ ৯০০ টাকায় বানাতে দিয়েছি।

পৌর সদরের ফিরোজ রানা জানান, এবারে বেশি শীত হতে পারে। তাই আগে ভাগে লেপ তৈরির জন্য দোকানে এসে অর্ডার দি।

পৌর শহরের এক দোকান মালিক জানান, শীতের শুরুতেই ক্রেতাদের ভিড় বাড়ছে। ক্রেতাদের এ আনাগোনা চলবে পুরো শীতজুড়ে। উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে দেখা যায় লেপ-তোষকের সব দোকানে ছিল কারিগরদের ব্যস্ততা । দোকানিরাও অর্ডার নিচ্ছেন। ক্রেতাদের বিভিন্ন মানের কাপড় ও তুলা দেখাতে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন।

ব্যবসায়ী আলতাব হোসেন জানান, শীতের তীব্রতা বাড়লে লেপ-তোষকের চাহিদা আরও বাড়বে। অনেকে আগেভাগে পুরোনো লেপ-তোষক, বালিশ ঠিকঠাক ও নতুনভাবে তৈরি করার অর্ডার দিচ্ছেন।

তিনি আরও বলেন,আকার অনুযায়ী লেপ-তোষক তৈরিতে ২৫০ টাকা থেকে ৪৫০ টাকা পর্যন্ত মজুরি নেওয়া হচ্ছে।

লেপ-তোষকের কারিগর মোতালেব হোসেন বলেন, একটি লেপ তৈরি করতে এখন মজুরি ২৫০ টাকা। এছাড়া তোষক ২২০ টাকা, বালিশ প্রতিটি ৫০ টাকা এবং জাজিম তৈরিতে ৪৫০ টাকা হারে মজুরি নেওয়া হচ্ছে। এই মজুরির হার অন্য সময়ের চাইতে কিছুটা বেশি। কারিগররা জানান শীত মৌসুমে এ ব্যবসা করে তাদের পরিবারের খরচ যোগায়।

পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে