আওয়ামী লীগকে নিয়ে ‘ঠাট্টা’ ফারুকীর
পদ্মাটাইমস ডেস্ক : বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শুরু থেকেই আওয়ামী লীগ সরকারের বিপক্ষে সরব ছিলেন নির্মাতা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী। শিক্ষার্থীদের পক্ষ নিয়ে কলম তুলেছিলেন তিনি। একইসঙ্গে রাজপথে নেমে প্রতিবাদেও অংশ নিয়েছেন।
৫ আগস্ট সরকার পতনের পর অন্তবর্তীকালীন সরকার নিয়েও বিভিন্ন সময় নিজের ভাবনার কথা জানিয়েছেন। পাশাপাশি বিগত ১৬ বছরে আওয়ামী লীগের শোষনের চিত্রও তুলে ধরেছেন।
তারই ধারাবাহিকতায় আবারও আওয়ামী লীগকে নিয়ে ঠাট্টায় মাতলেন তিনি। সম্প্রতি এক ফেসবুক স্ট্যাটাসে ফারুকী উল্লেখ করেছেন, আওয়ামী লীগ আশা করছে, মানুষের উপলব্ধি হবে তাদের কতটা দরকার।
সোমবার (৪ নভেম্বর) দুপুরে নিজের ফেসবুকে দেওয়া দীর্ঘ ওই স্ট্যাটাসে ফারুকী বলেন, ‘অনেকে আশা করেছিলেন আওয়ামী লীগের উপলব্ধি হবে। তারা অনুশোচনায় ভুগবে, বিচার পর্ব পার হয়ে নতুন রাজনীতি নিয়ে আসবে মানুষের সামনে। আর ওদিকে আওয়ামী লীগ আশা করছে, বাংলাদেশের মানুষের উপলব্ধি হবে যে, তাদের আমাদের কতটা দরকার। তারা কল্পনায় দেখতে পাচ্ছে, আমরা তাদের মিস করছি। কি বিস্ময়কর! আসুন আমরা একটু কল্পনা করার চেষ্টা করি তাদের আমাদের কেন দরকার?’
আওয়ামী লীগকে কেন প্রয়োজন তা ব্যাখ্যা করে এই নির্মাতা বলেন, ‘এই জুলাই হাজারের বেশি তরুণ-কিশোর-ছাত্র-ছাত্রীকে খুন করেছে। আরো কয়েক হাজার খুন করার জন্য তাদের দরকার? সরকারের শীর্ষ নেতৃত্বের সরাসরি পৃষ্ঠপোষকতায় নিজের ক্যাশিয়ার মারফত ব্যাংক লুট করে লক্ষ কোটি টাকা পাচার করেছে, যেটাকে দুনিয়ার সবচেয়ে বড় ব্যাংক ডাকাতি বলা হচ্ছে। আরো দশটা ব্যাংক লুটের জন্য দরকার? মেগা প্রজেক্টের নামে মেগা চুরির জন্য দরকার? কুইক রেন্টালের নামে কুইক ডাকাতির জন্য দরকার? অসম এবং অবিশ্বাস্য চুক্তির জন্য দরকার?’
এরপর আওয়ামী লীগের বিভিন্ন দুঃশাসনের চিত্র তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘এই দফায় দলের সব নেতাকে সমান প্রশ্রয় দেয়া যায় নাই। সামনের দিনে নিশ্চিত করা হবে জাভেদের মতো সবাই যেন বিদেশে কম-সে-কম ৩৬৫টা বাড়ি কিনতে পারে। কোনো বৈষম্য করা হবে না। এই জন্য দরকার? এক যুগের বেশি সময় ধরে শত শত মানুষ গুম করেছে। আরো কয়েক হাজার গুম করার জন্য দরকার? আরেকটা বিডিআর কার্নেজের জন্য দরকার? তার মানে কি এখন যা হচ্ছে সব ঠিক? অ্যাবসোলিউটলি নট।’ বলেন মোস্তফা সরয়ার ফারুকী।
সরকার পতনের পর বর্তমান সময়ে অনেকেই নিজেকে সরকার ভাবছে মন্তব্য করে ফারুকী বলেন, ‘নির্বাচিত সরকার আসার আগ পর্যন্ত সবাই নিজেকেই সরকার ভেবে অনেক উল্টাপাল্টা কাজ করছে। কেউ কেউ অনলাইন-অফলাইনে বিভেদ উস্কে ঘোলা পানিতে মাছ ধরতে চাইছে। এই সরকারের ১০০০ বিষয়ে আমার নিজেরই সমালোচনা আছে। কিন্তু আমি বাস্তবতাটাও বুঝি।’
সবশেষ ড. ইউনূসের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে নির্মাতা বলেন, ‘১৬ বছরে সব সিস্টেম দলীয় লুটপাট আর ক্ষমতা টিকায়ে রাখার কাজে যখন ব্যবহৃত হয়, তখন যে অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেয়, তাদের আসলে সালাম করা উচিত। আমি প্রফেসর ইউনুসকে সালাম জানাই আমাদের বর্জ্য পরিষ্কারের চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করার জন্য। ওয়াকার সাহেব এবং সেনাবাহিনীর সদস্যদের সালাম জানাই জনতার হয়ে এই কাজ করার জন্য। তারা আরামেই থাকতে পারতেন হাসিনার সুবিধা খেয়ে।’